আর পাঁচ দিনের মতোই সেদিন অফিস থেকে বেরিয়েছিল ১৬ বছরের এক নাবালিকা। সারাদিনের ক্লান্তি চোখে-মুখে মেখে বাড়ি ফেরার জন্য মরিয়া ছিল সে। এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা যে তার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি ওই নাবালিকা। আচমকা দেখল, এক যুবক তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাবালিকার হাত ধরে টানাটানি শুরু করলেন ওই অচেনা যুবক। নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে কম চেষ্টা করেনি নাবালিকা। কিন্তু ব্যর্থ হয় সে। ওই অ়জ্ঞাতপরিচয় যুবক তার যৌন হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে ওই নাবালিকা।
যুবকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় নাবালিকার। শেষে যুবকের খপ্পর থেকে নিজেকে বাঁচায় সে। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে ষোড়শী বিধ্বস্ত। ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল সে।
এই ঘটনার কথা নিজের মাকে জানায় নাবালিকা। কোনও কিছু না ভেবেই সঙ্গে সঙ্গে কন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন নাবালিকার মা। না, পুলিশে অভিযোগ জানানোর জন্য সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বার হননি নাবালিকার মা। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল অন্য।
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত যুবককে খুঁজতে সে রাতে নিজেই গোয়েন্দার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন নাবালিকার মা। যে এলাকায় নাবালিকার যৌন হেনস্থা করা হয়েছিল, সেই এলাকায় যান ওই মহিলা।
ওই এলাকায় কিছুটা যাওয়ার পরই এক যুবককে দেখতে পান নাবালিকার মা। এক হাতে মদের বোতল নিয়ে রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন ওই যুবক।
সন্দেহ হওয়ায় গাড়ি থেকে নেমে ওই যুবকের পথ আটকান নাবালিকার মা। সরাসরি তাঁর কাছে জানতে চান, ওই যুবক তাঁর কন্যার যৌন হেনস্থা করেছেন কি না। ওই যুবকের ছবিও তুলে নেন নাবালিকার মা।
পরের দিনই ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত ৩৯ বছরের মাদমুদ নুর ইব্রাহিম। ঘটনাটি ইংল্যান্ডের হাল শহরের। গত বছর এই অভিযোগ উঠেছিল।
গত বছরের নভেম্বর মাসে যৌন হেনস্থার কথা স্বীকার করেন ওই যুবক। তাঁকে ১ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। ইব্রাহিম সমাজের জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন বিচারক।
যৌন হেনস্থার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে ওই যুবক জানিয়েছিলেন, তিনি নাবালিকাকে চুম্বন করেছিলেন। নাবালিকাকে দেখে ২০-২৫ বছরের তরুণী মনে হয়েছিল, সে কারণেই তাঁকে চুম্বন করেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন ওই যুবক।
ইব্রাহিমের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল এই অপরাধের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। হাল ক্রাউন কোর্টের বিচারকের পর্যবেক্ষণ, মহিলাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক ইব্রাহিম।
আদালত এ-ও জানায় যে, ইব্রাহিমের অপরাধ নাবালিকার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ওই যুবককে ১০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ১০ বছর সে দেশের যৌন অপরাধীর তালিকায় নাম নথিভুক্ত থাকবে ওই যুবকের।