Israel Hamas War

‘কারা থাকে ওখানে? সত্যিটা আমায় বলতেই হবে’! বন্দি তরুণী গাজ়া থেকে ফিরে শোনালেন অভিজ্ঞতা

২১ বছরের ট্যাটুশিল্পী জানিয়েছেন, ওই ৫৪ দিন তাঁর নিজেকে বার বার মনে হয়েছে জঙ্গল সাফারিতে পর্যটকদের চোখে পড়ে যাওয়া পশুর মতো। আতঙ্ক, অসহায়তা, প্রতি মুহূর্তের অনিশ্চয়তা ঘিরে ছিল তাঁকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৪১
Share:
০১ ১৫

তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের একটি ছবিতে এখন নজর গোটা পৃথিবীর। ছবিটি তাঁর নিজেরই। লেন্সের চোখে চোখ রেখে সোজাসুজি তাকিয়ে আছেন। এক হাতে ব্যান্ডেজ। অন্য হাতে উল্কি করে লেখা একটি তারিখ। ৭-১০-২০২৩। আড়াই মাস আগের এই দিনেই তাঁকে অপহরণ করেছিল হামাস জঙ্গিরা।

০২ ১৫

বয়স ২১। নাম মিয়া স্কেম। পেশায় এক জন ট্যাটুশিল্পী ইজ়রায়েলের এই তরুণী জন্মসূত্রে ফরাসীও। গত ৭ অক্টোবর একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করে হামাস। তার পর থেকে ৫৪ দিন হামাসদের হাতে বন্দি ছিলেন মিয়া। ছাড়া পেয়ে মুখ খুললেন।

Advertisement
০৩ ১৫

এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া টিভি সাক্ষাৎকারে মিয়া ওই ৫৪ দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। মিয়া বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়েছে, সত্যিটা আমাকে বলতে হবেই। কারা থাকে গাজ়ায়? তাদের আসল পরিচয় কী? তাদের হাতে বন্দি অবস্থায় কেমন ছিল আমার অভিজ্ঞতা? এই সব কিছু সবার জানা দরকার।’’

০৪ ১৫

টিভিতে এই কথা যখন বলছেন মিয়া, তখনও তাঁর চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। উল্টো দিকে বসে ছিলেন সাংবাদিক লায়র ভেরোসলাভস্কি। তিনি জানতে চাইলেন, ‘‘কেন বলতে হবেই? কেন এটা সবার জানা দরকার?’’ প্রশ্ন শুনে মিয়া বললেন, ‘‘কারণ আমি এক ‘হলোকাস্ট’ পেরিয়ে ফিরেছি! ওখানে যারা থাকে তারা সবাই এক একটা সন্ত্রাসবাদী।’’

০৫ ১৫

‘হলোকাস্ট’ হল জার্মানির একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের শাসনে ইহুদিদের উপর হওয়া নাৎসিদের অত্যাচার পর্ব। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অনেকেই বেঘোরে মারা পড়েছিলেন। অনেকে বেঁচে থাকলেও ছিলেন অর্ধমৃত অবস্থায়। যাঁরা কিছুটা সুস্থ অবস্থায় বেঁচে ফিরেছিলেন, ফিরেছিলেন অন্য মানুষ হয়ে। হামাসের হাতে ৫৪ দিনের বন্দিদশাকে মিয়া সেই অত্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জানিয়েছেন, গাজ়ায় থাকা প্রত্যেকেই সন্ত্রাসবাদী।

০৬ ১৫

সম্প্রতি ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ বিরতিতে ছাড়া পেয়েছেন মিয়া। যুদ্ধবিরতি চলাকালীন বন্দিবিনিময়ের একটি চুক্তি হয়েছিল দু’পক্ষের। গাজ়ায় বন্দি করে রাখা কিছু অপহৃতকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। সেই সময়ই মিয়া ছাড়া পান। আর তার পরেই নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছেন ইজ়রায়েলের ওই তরুণী।

০৭ ১৫

গত ১৭ অক্টোবর প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল মিয়ার বন্দিদশার ছবি। তার পর থেকেই তিনি খবরে।

০৮ ১৫

হামাসই প্রকাশ করেছিল মিয়ার ভিডিয়ো। তাতে দেখা গিয়েছিল বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন মিয়া। আর তাঁর জখম হওয়া হাতটি ধরে তাতে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিচ্ছে দুটো হাত। এটি ছিল ওই ভিডিয়োর প্রথম ভাগ। দ্বিতীয় ভাগে ছিল মিয়ার বক্তব্য।

০৯ ১৫

হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা মিয়া নিজেই জানিয়েছিলেন তাঁর বন্দিদশার কথা। বলেছিলেন, হামাস তাঁকে অপহরণ করেছে। কিন্তু বন্দি অবস্থাতেও তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে। তাঁকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন অপহরণকারীরা। কিন্তু তিনি বাড়ি ফিরতে চান। তাঁর একটাই আর্জি, তাঁকে তাঁর বাবা-মায়ের কাছে, ভাইদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

১০ ১৫

ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়। তখন অনেকেই বলেছিলেন, মিয়া যা বলেছেন তাঁকে জোর করে বলানো হয়েছে। আসলে তাঁর উপর অত্যাচারের কথা বললে, তাঁর প্রাণ নিয়ে টানাটানি হবে। তাই শেখানো বুলি আওড়াতে হচ্ছে তরুণীকে।

১১ ১৫

সম্প্রতি মিয়াও নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে একই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ২১ বছরের ট্যাটুশিল্পী জানিয়েছেন, ওই ৫৪ দিন ছিল তাঁর জীবনের কঠিনতম সময়। এই দিনগুলিতে তাঁর নিজেকে বার বার মনে হয়েছে জঙ্গল সাফারিতে পর্যটকদের চোখে পড়ে যাওয়া পশুর মতো। আতঙ্ক, অসহায়তা, প্রতি মুহূর্তের অনিশ্চয়তা ঘিরে ছিল তাঁকে।

১২ ১৫

মিয়া জানিয়েছেন, গাজ়ায় তাঁকে রাখা হয়েছিল একটি সাধারণ পরিবারে। প্রথমটায় তিনি সেটা বুঝতে পারেননি। পরে বুঝতে পারেন, তাঁকে যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানে ছোট ছোট শিশুরাও রয়েছে। রয়েছেন স্বামী-স্ত্রী। এঁরা সবাই সর্বস্ব দিয়ে হামাসকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। অনৈতিক জেনেও হামাসকে সমর্থন করছেন প্রত্যেকে।

১৩ ১৫

মিয়া জানিয়েছেন, গাজ়ায় তাঁকে অপহরণ করার সময় তাঁর হাতে গুলি লেগেছিল। অপহৃত অবস্থায় তিন ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর হাতে। ওই যন্ত্রণা আর ওই ভয় তিনি কোনও দিনও ভুলতে পারবেন না।

১৪ ১৫

মুক্তি পাওয়ার পর সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি দিয়েছেন মিয়া। ছবিটি তাঁর নিজেরই। লেন্সের চোখে চোখ রেখে সোজাসুজি তাকিয়ে আছেন। এক হাতে ব্যান্ডেজ। অন্য হাতে উল্কি করে লেখা একটি তারিখ। আর একটি লাইন।

১৫ ১৫

মিয়া লিখেছেন, ‘উই উইল ডান্স এগেন’। অর্থাৎ আমরা আবার একদিন নেচে উঠব। সঙ্গে তাঁর অপহরণের তারিখটি। ৭ অক্টোবর ২০২৩। যে দিন থেকে শুরু হয়েছিল ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement