নব্বইয়ের দশকে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী তারকাদের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিল অভিনেতার নাম। তিন দশকের কেরিয়ারে শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের চাকা এমন ভাবে ঘুরে যায় যে, ৩৩টি ছবিতে অভিনয় করলেও সেগুলি কখনও মুক্তিই পায়নি।
অক্ষয় কুমার, সানি দেওলের মতো অভিনেতাদের পাশাপাশি নব্বইয়ের দশকে অ্যাকশন ঘরানার ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সুনীল শেট্টি। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যাকশন ঘরানার ছবি ‘বলবান’ ছবির মাধ্যমে ৩১ বছর বয়সে বলিজগতে অ্যাকশন হিরো হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
কেরিয়ারের প্রথম ছবিই সফল হয় সুনীলের। তার পর টানা এক দশক একের পর এক অ্যাকশন ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে থাকেন তিনি। কিন্তু রাতারাতি সাফল্যের পর কেরিয়ারের রেখচিত্রে পতন দেখা যায়।
২০০০ সাল থেকে তারকাখচিত ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন সুনীল। তাঁর কেরিয়ারে এমন সময় আসে, যখন একের পর এক ছবিতে অভিনয় করলেও সেগুলি মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।
বলিপা়ড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, কোনও কোনও ছবির শুটিং সুনীল শুরু করলেও তা ঘোষণা করা হয়নি কোনও দিন। কোনও ছবির পোস্টার ছাপা হওয়ার পরেও তা মুক্তি পায়নি। বাজেটের অভাবে কোনও ছবির শুটিং গোড়াতেই বন্ধ হয়ে যায় আবার কোনও ছবির বাজেট মাঝপথে ফুরিয়ে গেলে শুটিং বন্ধ হয়। বলিপা়ড়া সূত্রে খবর, সুনীলের কেরিয়ারজীবনে এমন মুক্তি না পাওয়া ছবির সংখ্যা ৩৩টি।
সুনীলের কেরিয়ারের প্রথম ছবি ছিল ‘বলবান’। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন বলি অভিনেত্রী দিব্যা ভারতী। অথচ দিব্যার সঙ্গে অভিনীত ‘এক অওর ফওলাদ’ এবং ‘দো কদম আগে’ নামের দু’টি ছবি প্রেক্ষাগৃহে কোনও দিন মুক্তিই পায়নি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘জ়াহিল’, ‘এক হিন্দুস্তানি’, ‘অখন্ড’ এবং ‘দীপ্তি’ নামে চারটি ছবি মুক্তি পায়নি সুনীলের। এই ছবিগুলিতে সুনীলের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন রবিনা টন্ডন।
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ‘ধড়কন’-এ সুনীলের সঙ্গে অভিনয় করেন অক্ষয় কুমার এবং শিল্পা শেট্টি। এই ছবি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করার পাশাপাশি দর্শকের কাছে প্রশংসাও কুড়োয়। কিন্তু অক্ষয় এবং শিল্পার সঙ্গে অভিনীত একাধিক ছবিও মুক্তি পায়নি সুনীলের।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, অক্ষয়ের সঙ্গে অভিনীত ‘কৌরব’ এবং শিল্পার সঙ্গে অভিনীত ‘কমিশনার’ এবং ‘চোরি মেরা কাম’ নামের ছবি তিনটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি। কানাঘুষো শোনা যায়, ‘চোরি মেরা কাম’ ছবিতে সুনীল এবং শিল্পার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সলমন খান।
‘শোলা’, ‘রুস্তম’ এবং ‘জুয়া’ এই তিনটি ছবিতে সুনীলের বিপরীতে অভিনয় করেন মনীষা কৈরালা। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সুনীল এবং মনীষার এই তিনটি ছবিই কোনও দিন প্রেক্ষাগৃহের মুখ দেখতে পায়নি।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের সঙ্গেও জুটি বেঁধে অভিনয় করেন সুনীল। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘রাধেশ্যাম সীতা রাম’ এবং ‘হম পঞ্ছি এক ডাল কে’ নামের দু’টি ছবিতে ঐশ্বর্যার সঙ্গে অভিনয় করলেও সুনীলের এই ছবিগুলি প্রেক্ষাগৃহে কখনও মুক্তি পায়নি।
বলি অভিনেত্রী সোমি আলির সঙ্গে ‘হম হ্যায় আগ’, সোনালি বেন্দ্রের সঙ্গে ‘আয়ুধ’, শ্রীদেবীর সঙ্গে ‘দ্য বডিগার্ড’, নম্রতা শিরোদকরের সঙ্গে ‘পুরব কি লায়লা পশ্চিম কা ছ্যয়লা’ ছবিগুলিতে অভিনয় করেন সুনীল। কিন্তু এই ছবিগুলির মধ্যে একটিও মুক্তি পায়নি।
বলি অভিনেতা বিনোদ খন্নার সঙ্গে ‘কর্মবীর’ এবং সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে ‘বন্দে মাতরম’ ছবিতে অভিনয় করেন সুনীল। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই দু’টি ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও তা কালের নিয়মে হারিয়ে গিয়েছে।
বলিপাড়ার জল্পনা, বলি অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির সঙ্গে ‘ক্যাপ্টেন অর্জুন’ এবং ‘চোর সিপাহি’ নামের দু’টি ছবিতে অভিনয় করেন সুনীল। দু’টি ছবির একটিও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি।
‘কালা পানি’ নামের ছবিতে সুনীলের সঙ্গে অভিনয় করেন অজয় দেবগন এবং করিশ্মা কপূর। এই ছবিটির কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় বলে বলিপাড়া সূত্রে খবর।
বলিপা়ড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘ফেম’, ‘গুড নাইট’, ‘জজ়বা’, ‘মুক্তি’, ‘ফাঁসি: দ্য ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট’, ‘মুম্বই ট্যাক্সি সার্ভিস’, ‘শোম্যান’, ‘চায়ে গরম’ এবং ‘শুটার’ নামের ছবিগুলিতে সুনীল অভিনয় করলেও সেগুলি মুক্তি পায়নি।
২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঘানি’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় সুনীলকে। ২০২৩ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘হান্টার টুটেগা নহি, তোড়েগা’ ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করেন সুনীল। তার পর আর কোথাও অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
নিজস্ব একটি প্রযোজনা সংস্থা খুলেছেন সুনীল। সেই সংস্থার তরফে ‘খেল— নো অর্ডিনারি গেম’, ‘ভাগম ভাগ’ এবং ‘রক্ত’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবির প্রযোজনা করা হয়েছে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, বর্তমানে অভিনেতার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২৫ কোটি টাকা।