এক দিকে আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন, অন্য দিকে বড় পর্দায় অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা। দুই পেশা বিপরীতধর্মী হলেও তিনি দু’টি পেশাকেই গ্রহণ করেছেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে কোনও প্রশিক্ষণ না নিয়ে প্রথম সুযোগে ইউপিএসসির মতো কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন সিমালা প্রসাদ। আবার হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৯৮০ সালের অক্টোবর মাসে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে জন্ম সিমালার। আইএএস আধিকারিক হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন সিমালার পিতা ভগীরথ প্রসাদ। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের ভিন্ডের সাংসদও ছিলেন ভগীরথ। তা ছাড়া মধ্যপ্রদেশের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও ছিলেন তিনি।
সিমালার মায়ের নাম মেহরুন্নিসা পারভেজ়। ‘আম্মা’, ‘সামারা’, ‘অযোধ্যা সে ওয়াপসি’ নামের একাধিক বই লিখেছেন মেহরুন্নিসা। সাহিত্যজগতে অবদানের জন্য ২০০৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি।
বাবা-মা দু’জনেই সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সিমালাও স্বপ্ন দেখেন আইএএস হওয়ার। তবে তার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই সিমালার আগ্রহ ছিল নাচ এবং অভিনয়ের প্রতি।
মধ্যপ্রদেশের একটি স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে ভোপালের এক কলেজে বিকম পড়েন সিমালা। তার পর সমাজবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
স্কুলে থাকাকালীন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ করতেন সিমালা। নাটকেও অভিনয় করতেন তিনি। কলেজ যাওয়ার পর অভিনয় নিয়ে এগোনোর কথা ভাবতে শুরু করেন তিনি।
কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর রাজ্য সরকারের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেন সিমালা। পরীক্ষায় পাশ করে ডেপুটি পুলিশ সুপার পদে নিযুক্ত হন তিনি।
চাকরি পাওয়ার পর ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিতে থাকেন সিমালা। কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হননি তিনি। কঠোর শ্রম এবং অধ্যবসায়ের উপর ভর করে প্রথম সুযোগেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি।
২০১০ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সারা ভারতে ৫১ নম্বরে নাম ওঠে সিমালার। মধ্যপ্রদেশে আইপিএস আধিকারিক হিসাবে নিযুক্ত হন তিনি।
আইপিএস হওয়ার স্বপ্নপূরণের পর অভিনয়ের স্বপ্নও পূরণ হয় সিমালার। ২০১৬ সালে ছবিনির্মাতা জ়াইঘাম ইমাম তাঁর ছবি ‘আলিফ’-এ অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দেন সিমালাকে। এই ছবিতে আইপিএস আধিকারিকের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় সিমালাকে।
‘আলিফ’ ছবিতে সিমালার অভিনয় বহুল প্রশংসিত হয়। জ়াইঘামের পরবর্তী ছবি ‘নাক্কাশ’-এও অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় সে ছবি।
২০১৯ সালের পর থেকে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হয়ে ওঠেন সিমালা। তাঁর দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে অনুগামীদের অবগত রাখেন তিনি।
সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন সিমালা। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১১ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।
শীঘ্রই জ়াইঘাম পরিচালিত ‘দ্য নর্মদা স্টোরি’ নামের ছবিতে সিমালার অভিনয় দেখা যাবে। এই ছবিতে রঘুবীর যাদব, মুকেশ তিওয়ারির মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করছেন তিনি।