বছর তিনেক পরে আবার নিলাম হল ‘পলাতক’ ডন দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তির। শুক্রবার দাউদের চারটি সম্পত্তি নিলামে উঠেছিল। তার মধ্যে দু’টি জমির জন্য কেউ দর হাঁকেননি। বাকি দু’টি সম্পত্তির মধ্যে যেটি ছোট সেটি বিক্রি হল দু’কোটি টাকারও বেশি দামে। কিনেছেন মহারাষ্ট্রের আইনজীবী তথা প্রাক্তন শিবসেনা নেতা অজয় শ্রীবাস্তব।
দাউদের সম্পত্তি নিলামে তুলেছিল ‘স্মাগলার্স অ্যান্ড ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানিপুলেটর্স (ফরফিচার অব প্রপার্টি) অথরিটি (এসএএফইএমএ)’। যে জমিটি দু’কোটিরও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে, সেটির ন্যূনতম দাম ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪৪০ টাকা।
১৭০ বর্গমিটারের কিছু বেশি ওই কৃষিজমি রয়েছে মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার মুম্বকে গ্রামে। সেই গ্রামেই দাউদের পূর্বপুরুষের বাস ছিল।
সেই জমির দর সাড়ে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়ে বাড়তে বাড়তে দু’কোটিতে পৌঁছে যায়। এর পর অজয়ের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো আর কেউ ছিলেন না। জমি যায় অজয়ের হাতে।
কেন এত দামে ওই জমি কিনেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন অজয়। তিনি জানিয়েছেন, ওই জমির সমীক্ষা নম্বর এবং দাম তাঁর পয়া সংখ্যার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। সে কারণে অত দাম দিয়ে জমি কিনেছেন।
ওই জমিতে সনাতন স্কুল খোলা হবে বলেও জানিয়েছেন অজয়। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও দাউদের সম্পত্তি কিনে শিরোনামে এসেছেন তিনি।
এর আগে মুম্বকে গ্রামে দাউদের পৈতৃক বাড়ি-সহ মোট তিনটি সম্পত্তি কিনেছিলেন আইনজীবী অজয়।
দাউদের সম্পত্তি প্রথম নিলামে ওঠে ২০০০ সালে। সম্ভবত দাউদের ভয়েই কেউ তখন সেই সম্পত্তি কিনতে এগিয়ে আসেননি।
২০০১ সালের মার্চ মাসে আবার যখন দাউদের সম্পত্তি নিয়ে নিলামে দর হাঁকাহাঁকি শুরু হয়, তখন এগিয়ে আসেন অজয়। মুম্বইয়ের নাগপড়ায় দাউদের মালিকানাধীন দু’টি দোকান কিনে নেন অজয়।
তবে এখনও সেই দোকান হাতে পাননি অজয়। যদিও মুম্বইয়ের একটি আদালত ২০১১ সালে আদিত্যের পক্ষে রায় দিয়েছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বোম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন দাউদের বোন হাসিনা পার্কারের সন্তানেরা।
২০২০ সালে অন্য একটি নিলামে মুম্বকে গ্রামে দাউদের পৈতৃক বাড়িটি কিনে নেন অজয়। সরকারি দফতরের তৈরি নথিতে অসঙ্গতির কারণে বাংলোটিরও দলিল এখনও পাননি তিনি। তবে ভুল সংশোধনের কাজ চলছে। শীঘ্রই দাউদের সেই বাড়ির দলিল অজয় পেয়ে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দাউদের পৈতৃক বাড়িতে সনাতন ধর্ম পাঠশালা ট্রাস্ট তৈরি করতে চান অজয়। শুক্রবার যে সম্পত্তিটি অজয় কিনেছেন, সেখানে একটি স্কুল খুলতে চান তিনি।
অজয়ের কথায়, ‘‘আমি ২০২০ সালে দাউদ ইব্রাহিমের বাংলোর জন্য দর হেঁকেছিলাম। একটি সনাতন ধর্ম পাঠশালা ট্রাস্ট তৈরি করতে চাই। নথিভিুক্তিকরণের পর কাজ শুরু হবে। নতুন জমিতে একটি স্কুলও খুলতে চাই।’’
তবে কেন বার বার দাউদের সম্পত্তিই কেনেন অজয়? এ নিয়ে অনেক কানাঘুষো রয়েছে। রয়েছে রহস্যও।
এই প্রশ্নও ওঠে যে, কেন দাউদের সম্পত্তি অজয়ের হাতেই যায়! তবে এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা প্রকাশ্যে আসেনি কখনও। বিষয়টি নিয়ে তেমন ভাবে মুখ খোলেন না অজয়ও।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মুম্বকে গ্রামের দাউদ পরিবারের আরও একটি জমি নিলামে বিক্রি হয়েছে। ১,৭৩০ বর্গমিটারের ওই জমি বিক্রি হয়েছে ৩ লক্ষ ২৮ হাজার টাকায়। জমির মূল্য ছিল এক লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা।