কাউকে ভালবেসে পরিণতি যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা নয়াদিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের হত্যাকাণ্ডই দেখিয়েছে। তবে শুধু শ্রদ্ধাই নন। এমন অনেক প্রেমেরই জন্ম হয়েছে এই দুনিয়ায়, যেখানে ভালবাসার মানুষের হাতেই রক্ত ঝরেছে। আমেরিকার মায়ামির ঘটনা তেমনই একটি রক্তাক্ত ভালবাসার কাহিনি।
প্রেমিকের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে প্রেমিকার। যে ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে প্রেমিককে। এক সময় যার সঙ্গে তিল তিল করে প্রেমের জাল বুনেছিলেন, সেই ভালবাসার মানুষকেই কিনা গুলি!
সম্পর্কের টানাপড়েনে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছেন সকলে।
বিকেলে প্রেমিকের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন মামে আমুয়াহ নামের এক তরুণী। এ জন্য প্রেমিককে ফোনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফোন ধরেননি প্রেমিক।
শুধু এক বার নয়, অনেক বার ফোনে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রেমিকার ফোন ইচ্ছাকৃত ভাবেই এড়িয়েছিলেন ওই যুবক।
ফোনে প্রেমিকের নাগাল না পেয়ে যখন অস্থির ওই তরুণী, তখন অন্য এক সুন্দরী তরুণীর সঙ্গে হুল্লোড়ে মেতে রয়েছেন সেই যুবক।
হায়দার রানা নামে ২৪ বছরের ওই যুবক তখন এক জন স্ট্রিপারের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাই ফোনে প্রেমিকার নম্বর ভেসে উঠলেও তা সচেতন ভাবেই এড়িয়েছেন।
প্রেমিকের বাড়ির কাছেই থাকতেন ওই তরুণী। বহু বার ফোন করেও প্রেমিকের থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই তরুণী। আর তার পরই ঘটে যায় সেই মর্মান্তিক পরিণতি।
স্ট্রিপারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে সে সময় টিভি দেখছিলেন ওই যুবক। এমন সময়ই দরজায় ধাক্কা মারেন তাঁর প্রেমিকা।
অসময়ে তাঁর বাড়িতে প্রেমিকার আগমন মোটেই ভাল চোখে দেখেননি ওই যুবক। অভিযোগ, প্রেমিকা এসেছেন, সেটা বোঝার পরই হাতে পিস্তল তুলে নেন তিনি। তার পর দরজা খুলে প্রেমিকাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।
গত বছর মে মাসে এই ঘটনায় মৃত্যু হয় তরুণীর। যুবকের বিরুদ্ধে দায়ের হয় খুনের মামলা। সেই ঘটনাই সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।
যদিও অভিযুক্ত যুবকের দাবি, তাঁর বাড়ির দরজার বাইরে যে প্রেমিকা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তা তিনি জানতেন না। অজ্ঞাতপরিচয় কেউ রয়েছেন, এটা ভেবেই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালান।
তবে অভিযুক্ত যুবকের এ হেন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে নিহত তরুণীর পরিবার। নিহত তরুণীর মায়ের অভিযোগ, ওই যুবক জানতেন যে, ওঁর বাড়িতে তাঁর মেয়ে যাচ্ছেন। তাই জেনেবুঝেই খুন করেছেন যুবক।
তরুণীর মা এ-ও দাবি করেছেন যে, খুনের ঘটনার আগে দু’দিন ধরে যুবকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু ফোন তোলেননি যুবক। তরুণীকে এড়ানোর জন্যই তিনি ফোনে কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন।
মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে সরব হয়েছেন তরুণীর মা। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মেয়ের বিচার চাই। এতে ওর আত্মা শান্তি পাবে। ওই ছেলেটা আমার মেয়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে।’’
গত ১৭ নভেম্বর এই ঘটনায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তার পরই এই খবর প্রকাশ্যে আসে। ওই যুবকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।