শেষবেলায় বদলে গেল নকশা। ফডণবীস নয়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন একনাথ শিন্ডে। উদ্ধব সরকারের বিদ্রোহী বিধায়ক বসছেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের শিবিরের ৩০ জন বিধায়ক বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে ডেরা বেঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে।
আশির দশকে কলেজের পড়া ছেড়ে বালাসাহেবের ডাকে সাড়া দিয়েই সক্রিয় রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন শিন্ডে। আদতে মহারাষ্ট্রের সাতারার বাসিন্দা হলেও রাজনীতির ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিবসেনার শক্ত ঘাঁটি ঠাণেকে।
ঘটনাচক্রে সেই শিন্ডের ‘তৎপরতাতেই’ বালাসাহেব-পুত্র ক্ষমতা হারালেন। এখন মহারাষ্ট্রের স্টিয়ারিং অটোচালক শিন্ডের হাতে।
কে এই একনাথ? কী ভাবে বাণিজ্য নগরীর রাজধানীতে রাজনীতি করে এখন মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন?
মহারাষ্ট্রের সাতারায় নিম্ন মধ্যবিত্ত মরাঠি পরিবারে জন্ম একনাথ শিন্ডের। পরে তাঁর পরিবার চলে যায় ঠাণেতে। সেখানেই পড়াশোনা শিন্ডের। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অল্প বয়সেই রোজগার শুরু করেন। শুরু করেন অটো রিকশা চালানো।
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী নেতা শিন্ডে ভোট-রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। ঠাণে পুরসভার নির্বাচনে জিতে।
২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন তিনি। তার পর ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটেও জয়লাভ করেন।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের মন্ত্রী হন শিন্ডে।
২০১৯ সালে মহাবিকাশ আঘাডী সরকারের নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হন একনাথ শিন্ডে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিধান পরিষদের সদস্য হওয়ায় বিধানসভার দলনেতার দায়িত্ব পান শিন্ডে।
সেই শিন্ডে হঠাৎ ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠলেন। প্রথমে ঘাঁটি গাড়লেন গুজরাতের সুরতে। তার পর শিবসেনা এবং নির্দল বিধায়কদের নিয়ে চলে গেলেন আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমে।
একনাথ শিন্ডে দাবি করেছিলেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না। বিজেপিতে যাওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই তাঁর।
একনাথ দাবি করেন, বালাসাহেবের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে শিবসেনা। হিন্দুত্ববাদ আদর্শ থেকে সরে আসছে দল।
সেই শিন্ডে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা মহারাষ্ট্রের বিজেপি প্রধান দেবেন্দ্র ফডণবীসের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘বালাসাহেবের হিন্দুত্বের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্রে উন্নয়নমূলক কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সঙ্গে ৫০ জন বিধায়ক আছেন।
হিন্দুত্ববাদের পথ থেকে শিবসেনা সরে আসছে বলে অনুযোগ করেছিলেন একনাথ। মুখ্যমন্ত্রী পদে নাম ঘোষণার পর তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী , কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ।