Lonar Crater Lake

মিষ্টি আর নোনতা জল বইছে একই সঙ্গে, পাল্টে যায় জলের রংও! আজও রহস্য লোনার হ্রদ

এই হ্রদ ঘিরেই পর্যটনের প্রসার করতে চাইছে মহারাষ্ট্র সরকার। কেন এই হ্রদ নিয়ে উৎসাহী তারা?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:৪২
Share:
০১ ১৬

চারপাশে বসতির চিহ্নমাত্র নেই। রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি মন্দির। সেগুলির অদূরে গোলাপি আভা মাখানো জলের এক হ্রদের টানে দেখা যায় গুটিকয়েক উৎসাহীকে। তবে এই হ্রদ ঘিরেই পর্যটনের প্রসার করতে চাইছে মহারাষ্ট্র সরকার। কেন এই হ্রদ ঘিরে উৎসাহী তারা?

০২ ১৬

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুলঢাণা জেলায় পর্যটনের প্রসারে ২০২২ সালে ৩৭০ কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মহারাষ্ট্র সরকার। মূলত লোনার হ্রদকে ঘিরে পর্যটকদের টেনে আনার চেষ্টা শুরু করতে চান তারা। নির্জন, রুক্ষ এলাকার ওই হ্রদের কী এমন বিশেষত্ব রয়েছে যে তার টানে পর্যটকেরা ভিড় করবেন?

Advertisement
০৩ ১৬

বুলঢাণায় প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে লোনার হ্রদ। হাজার হাজার বছর আগে প্রবল গতিতে ছুটে আসা এক উল্কাপাতের জেরেই নাকি সেখানে বিশাল আকারের গর্ত হয়ে গিয়েছিল। যা ধীরে ধীরে হ্রদে পরিণত হয়।

০৪ ১৬

বৈজ্ঞানিকদের দাবি, লোনার হ্রদে একই সঙ্গে বয়ে চলেছে মিষ্টি এবং নোনতা জল। তাতে রয়েছে ক্ষারীয় স্বাদের জলও। তা সত্ত্বেও ভিন্ন স্বাদের জলে মিলেমিশে বইছে না লোনার হ্রদে। কেন এমন হচ্ছে, তা নিয়ে ‘রহস্য’ দানা বেঁধেছে।

০৫ ১৬

লোনার হ্রদের দক্ষিণ দিকের জল বেশ মিষ্টি। আবার অন্যান্য দিকের জলের স্বাদ নোনতা। হ্রদে সরাসরি মিশেছে দু’টি ঝরনার ধারা।

০৬ ১৬

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে রামসর সংরক্ষণ চুক্তির পর আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্ব পেতে শুরু করে লোনার হ্রদে। তার কারণও রয়েছে। এই হ্রদ কী ভাবে গড়ে উঠেছে তা নিয়েও গোড়ায় নানা মুনির নানা মত ছিল।

০৭ ১৬

অনেকের মতে, প্রায় ৫২ হাজার বছর আগে প্রবল বেগে ছুটে আসা উল্কা এসে পড়েছিল এই এলাকায়। তাতে বড়সড় গর্ত তৈরি হয়েছিল। পরে তা হ্রদে পরিণত হয়। যদিও নয়া সমীক্ষায় দাবি, ৪৮ থেকে ৫৮ হাজার বছর আগে ওই উল্কাপাত হয়েছিল এই প্রান্তে।

০৮ ১৬

যদিও গোড়ায় অনেকেই দাবি করেছিলেন, বেসাল্টিক শিলায় গড়ে ওঠা একটি গর্তের মধ্যে জল জমেই লোনার হ্রদ তৈরি হয়েছে। সাধারণত, অগ্ন্যুৎপাতের পর লাভা দ্রুত ঠান্ডা হওয়ায় যে পাথরে পরিণত হয় সেগুলিই বেসাল্টিক শিলা।

০৯ ১৬

ভূতত্ত্ববিদদের মতে, গোটা পৃথিবীতে মোটে ৪টি বেসাল্টিক শিলায় গড়ে ওঠা গর্ত রয়েছে। তার মধ্যে ১টি হল লোনার হ্রদ।

১০ ১৬

প্রায় ৩,৯০০ ফুট ব্যাসার্ধের এই হ্রদের গভীরতা ৪৪৯ ফুট। হ্রদের চারপাশ ঘিরে রয়েছে ঢালু রিঙের মতো অংশ। যার ব্যাসার্ধ ৫,৯০০ ফুট।

১১ ১৬

লোনার হ্রদের ডিম্বাকৃতি আকার দেখে বৈজ্ঞানিকদের দাবি, ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি বেঁকে উল্কাপাত হয়েছিল এখানে। হ্রদের আশপাশে মাটি ক্ষারীয় হওয়ায় কোনও কৃষিকাজ করা সম্ভব নয়। তবে গোমুখ, কমলজা-সহ বেশি কয়েকটি মন্দির গড়ে উঠেছে সেখানে।

১২ ১৬

হ্রদের অদূরে রয়েছে একশো বছরের পুরনো শ্রী গজানন মহারাষ্ট্র সংস্থান মন্দির। অনেকের দাবি, সেটি দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন মন্দির। এ ছাড়া, ষোড়শ শতকের সিন্দখেড রাজার দুর্গও দেখা যায় এই অঞ্চলে।

১৩ ১৬

প্রাচীন ভারতের নানা গ্রন্থেও জায়গা করে নিয়েছে লোনার হ্রদ। স্কন্দপুরাণ এবং পদ্মপুরাণের মতো গ্রন্থে এর উল্লেখ রয়েছে। আবার মুঘল যুগে সম্রাট আকবরের শাসনকালে আবুল ফজলের রচিত ‘আইন-ই-আকবরি’-তেও এর কথা রয়েছে।

১৪ ১৬

হ্রদের জল শ্যাওলার রঙের মতো সবুজ বা সমুদ্রের জলের মতো নীল থেকে মাঝেমধ্যে গোলাপি হয়ে যায় কেন? ডিম্বাকৃতি এই হ্রদে নাকি অগণিত হ্যালোআর্কিয়া জীবাণু রয়েছে। তাদের উপস্থিতিতেই হ্রদের জল পাল্টে হয় গোলাপি।

১৫ ১৬

জীববৈচিত্রের জন্যও এ হ্রদের সংরক্ষণ জরুরি বলে মনে করা হয়। ২০২০ সালের জুনে ২-৩ দিনের মধ্যে হ্রদের জল লাল এবং গোলাপি হতে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি। কেন এমন হল, তা খতিয়ে দেখতে কাজে নেমেছিল দেশের ৩টি সংস্থা।

১৬ ১৬

পুণের আগরকর রিসার্চ ইনস্টিটিউ, নাগপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর সঙ্গে মিলে ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ-এর একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, অগভীর জায়গায় নোনতা জল থাকার জেরে প্রচুর পরিমাণে হ্যালোব্যাকটেরিয়াম জন্মায়। পাশাপাশি কেরোটেনয়েডের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় হ্রদের জলের র‌ং বদলে গিয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement