বাবা, মায়ের দেখানো পথেই তিনি হেঁটেছেন। বিহারের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে চর্চিত মুখ তিনি। সামলাচ্ছেন সে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। লালুপ্রসাদ যাদবরের কনিষ্ঠ পুত্র তেজস্বী যাদব ‘বাবা’ হলেন। ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন তেজস্বী-ঘরনি। এই সুখবর নিজেই জানালেন তেজস্বী।
২৭ মার্চ ২০২৩। সোমবার সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে আদরের কন্যার ছবি টুইট করেছেন লালু-পুত্র। দু’হাতে সদ্যোজাতকে নিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি। সেই ছবিই প্রকাশ্যে এনেছেন।
এই ছবির সঙ্গে টুইটারে তেজস্বী লিখেছেন, ‘‘ঈশ্বর সন্তুষ্ট হয়ে কন্যারূপে উপহার পাঠিয়েছেন।’’ বাবা হওয়ার অনুভূতি যে কারও কাছেই অন্য রকম। তেজস্বীর ক্ষেত্রেও যে তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, তা তাঁর টুইট থেকেই স্পষ্ট হয়েছে।
২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বিয়ে হয়েছিল তেজস্বীর। লালু-পুত্রের বিয়ে এবং প্রেমকাহিনিও বেশ চর্চিত হয়েছিল।
তেজস্বীর স্কুলবেলার প্রেমের মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটেছিল ২০২১ সালে। পাত্রীর নাম রাচেল গোডিনহো। তিনি খ্রিস্টান।
নয়াদিল্লির আর কে পুরমে ডিপিএস স্কুলে পড়তেন তেজস্বী। সেই স্কুলেই পড়তেন রাচেল। তেজস্বী এবং রাচেল সহপাঠী ছিলেন। স্কুলের চৌহদ্দিতেই সেই ছোটবেলায় মন দেওয়া-নেওয়া হয়ে গিয়েছিল তেজস্বী এবং রাচেলের।
রাচেল কিন্তু দিল্লির মেয়ে নন। হরিয়ানার রেওয়ারির বাসিন্দা তিনি। পরে পরিবারের সঙ্গে দিল্লিতে চলে যান রাচেল। সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকা শুরু করেন।
তেজস্বী এবং রাচেলের স্কুলের প্রেম পরবর্তী সময়ে আরও গভীরতা পায়। তত দিনে বিহারের যাদব পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্র বাবা লালুপ্রসাদ এবং মা রাবড়ি দেবীর মতোই রাজনীতির জল মাপতে শুরু করেছেন।
রাচেল সেই সময় কেবিন ক্রু হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছেন। দু’জন পুরো দু’দিকে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে রসায়ন ফিকে হয়নি।
প্রেম তো হল। কিন্তু বিয়ে! যাদব পরিবারে কিনা খ্রিস্টান বধূ! তবে তেজস্বীর প্রেম নিয়ে পরিবারে সে ভাবে কোনও বিপত্তি তৈরি হয়নি।
রাচেলের সঙ্গে প্রেমের কথা আগেভাগেই লালুকে জানিয়ে দিয়েছিলেন পুত্র তেজস্বী। এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাবাকে বলেছিলাম যে, আমি একটা মেয়েকে ডেট করছি। ওকেই বিয়ে করতে চাই। কিন্তু ও খ্রিস্টান।’’
তেজস্বীর এই সিদ্ধান্তে কোনও রকম বাধা দেননি লালু। বরং তিনি বলেছিলেন, ‘‘ঠিক আছে। কোনও সমস্যা নেই।’’
২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে চার হাত এক হয় তেজস্বী এবং রাচেলের। পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল।
বিয়ের পর রাচেল নাম বদলে ফেলেন। নাম রাখেন রাজশ্রী যাদব। এই নিয়ে সেই সময় জোর চর্চা চলেছিল।
বিহার রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত মুখ তেজস্বী। যাদব পরিবার বরাবরই খবরের শিরোনামে থাকে। কিন্তু প্রচারের এত আলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন তেজস্বীর ঘরনি।
দীর্ঘ দিনের প্রেম। তার পর বিয়ে। আর এ বার তেজস্বী এবং রাজশ্রীর ঘর আলো করে এল নতুন অতিথি। প্রথম সন্তানকে নিয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত এই তারকা দম্পতি।