সকাল পেরিয়ে বিকেল গড়াতেই পঞ্চমীতে কলকাতার আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা গিয়েছে। যার জেরে ঠাকুর দেখার আনন্দ মাটি হতে পারে। পুজোতে বৃষ্টির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, শুক্রবার কলকাতা-সহ রাজ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
যদিও পঞ্চমীর সকাল থেকেই রোদ ঝলমলে আকাশ দেখা গিয়েছে শহরে। মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় জমজমাট পুজোর আনন্দ।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি হলে, বিকেল বা সন্ধ্যার পর বৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়তে পারেন দর্শনার্থীরা।
উৎসবমুখর আবহে ‘অসুর’ রূপে বৃষ্টি যে হাজির হতে পারে, সেই পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল হাওয়া অফিস। যে পূর্বাভাস আগাম পেয়েই হয়তো চতুর্থীর রাত থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। হয়তো তাঁদের মনে হয়েছে, আগেভাগে ঠাকুর না দেখে নিলে পরে বৃষ্টিতে আনন্দ মাটি হতে পারে।
বোধনের দিনই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। পরে সেটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তার প্রভাবেই ষষ্ঠী থেকে বৃষ্টিতে ভিজবে রাজ্য।
সপ্তমীর দিন বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ওই দিন রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
অষ্টমীতে বর্ষণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। সোমবার দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
নবমীতেও পিছু ছাড়বে না বৃষ্টি। ওই দিন দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও পুজোর আনন্দ মাটি করতে পারে বৃষ্টি। নবমী থেকে উত্তরের জেলাগুলিতে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দিনাজপুর ও মালদায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
কিছু দিন আগেও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল। তার প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ভিজেছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। যদিও নিম্নচাপ কাটতেই আবার পাততাড়ি গোটায় বৃষ্টি। তবে মাঝেমধ্যেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণের জেলাগুলিতে। তৃতীয়াতেও বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতায়।
এ বছর বর্ষায় দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি কার্যত অধরা ছিল। নির্ধারিত সময়ের পরে দক্ষিণে পা রেখেছিল বর্ষা। যদিও এ বছর ভাল বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গে।
কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও গরম থেকে স্বস্তি মিলছে না। অস্বস্তিকর গরমে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ভিড়ে নাজেহাল হচ্ছেন অনেক দর্শনার্থীই। তবে পুজোর আনন্দে সেই অস্বস্তিকে উপেক্ষা করেই মণ্ডপমুখী মানুষ। কিন্তু তাঁদের একটাই প্রার্থনা, বৃষ্টি যেন না হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রকৃতিদেবী কি তাঁদের সেই আকুতি শুনবেন?