চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন হতে চলেছে পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে বড় মন্দির। মন্দির উদ্বোধনের দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে ভারতে নয়, এই মন্দির তৈরি হয়েছে বিদেশের মাটিতে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবির কাছে অবস্থিত আবু মুরেইখা এলাকায় তৈরি হয়েছে বিএপিএস-এর হিন্দু মন্দির। ভারতের বাইরে যে সকল মন্দির রয়েছে, সেগুলির মধ্যে সর্ববৃহৎ হল এটি।
৫.৪ হেক্টর জমির উপর তৈরি হয়েছে হিন্দু মন্দির। এই মন্দির নির্মাণে খরচ হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
১৮ লক্ষ ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে হিন্দু মন্দির। মূলত গোলাপি রঙের বেলেপাথর এবং মার্বেল দিয়ে নির্মিত এই মন্দিরের শোভা দুর্দান্ত।
৪০ হাজার ঘনমিটারের মার্বেল এবং ১ লক্ষ ৮০ হাজার ঘনমিটারের বেলেপাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে হিন্দু মন্দির।
মন্দিরের চারপাশে মোট সাতটি শৃঙ্গ রয়েছে। প্রতিটি শৃঙ্গ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এক একটি আমিরকে চিহ্নিত করে।
গত তিন বছর ধরে রাজস্থান এবং গুজরাত থেকে দু’হাজারেরও বেশি শিল্পী গিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। সেখানে গিয়ে মন্দিরের জন্য স্তম্ভ নির্মাণ করেছিলেন তাঁরা।
মন্দিরে থাকা ৪০২টি স্তম্ভ নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন দু’হাজারের বেশি কারিগর। সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি করা হয় এই স্তম্ভগুলি। সাদা মার্বেলগুলি গ্রিসের ম্যাসিডোনিয়া থেকে আনা হয়েছিল।
মন্দিরের অভ্যন্তর দেখেও যেন তাক লেগে যাওয়ার জোগাড়। অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে শুরু করে রয়েছে গ্যালারি। বইপ্রেমীদের জন্য গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে মন্দির চত্বরে।
মজলিসের পাশাপাশি মন্দিরের ভিতরে রয়েছে দু’টি কমিউনিটি হল। দু’টি হল মিলিয়ে পাঁচ হাজার লোক একসঙ্গে বসতে পারেন।
যাঁরা খাওয়াদাওয়া করতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য হিন্দু মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি ফুড কোর্টও। রয়েছে বাগান এবং শিশুদের জন্য আলাদা খেলার জায়গা।
প্রাচীন ভারতীয় শৈলীর অনুসরণেভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে মন্দির। মার্বেল এবং বেলেপাথরের উপর ভাস্কর্য তৈরি করে সেগুলি ভারত থেকে আবু ধাবি পাঠিয়েছেন ভারতের কারিগরেরা।
৪০২টি স্তম্ভের পাশাপাশি হিন্দু মন্দিরে রয়েছে দু’টি ডোম এবং ১২টি সমরন। মন্দিরে পুজো করা হবে রাম, সীতা, কৃষ্ণ, আয়াপ্পান এবং স্বামীনারায়ণের।
আবু ধাবির হিন্দু মন্দিরটি এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে, ভূমিকম্প হলে রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা সাতের ঘরে পৌঁছে গেলেও মন্দিরের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
উদ্বোধনের আগে ২৯ জানুয়ারি ৪২টি দেশের প্রতিনিধি গিয়েছিলেন মন্দির দর্শনে। ১৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন হলেও জনসাধারণের জন্য মন্দিরটি ১৮ ফেব্রুয়ারি খোলা হবে।