বহু দিন ধরে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তরুণী। কবে, কোথায় যাবেন— সব কিছুই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এ বার শুধু বিমানের টিকিট কাটার পালা। কিন্তু সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার জোগাড় হল তাঁর। অফিস থেকে ছুটিই পেলেন না। অফিস নিপাত যাক! ঘুরতে যাওয়াই আসল। তাই নিজের যমজ বোনকে অফিসে পাঠিয়ে বেড়াতে গেলেন তরুণী।
কানাডার বাসিন্দা অ্যারি চান্স। ২২ বছরের তরুণীর যমজ বোনের নাম নোয়ে চান্স। অ্যারির সঙ্গে কানাডায় থাকেন নোয়ে। দু’জনেই সমাজমাধ্যমে প্রভাবী হিসাবে পরিচিত।
অ্যারি এবং নোয়ে তাঁদের জীবনযাপনের খুঁটিনাটি টিকটক মাধ্যমে তুলে ধরেন। যমজ বোনের অনুগামীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু এই খুঁটিনাটি জানাতে গিয়েই হল বিপদ।
ঘুরতে যাবেন বলে সমস্ত পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন অ্যারি। কানাডায় যে অফিসে তিনি কাজ করেন সেখানে ছুটির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু অ্যারির বস্ তাঁর ছুটি মঞ্জুর করেননি।
ছুটি পাননি তো কী হয়েছে! অ্যারির মাথায় ঘুরতে যাওয়ার ভূত চেপেছিল। তরুণীর পায়ে তখন সর্ষে। ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা কিছুতেই বাতিল করতে পারলেন না তিনি। বরং অফিসের চোখে ধুলো দেওয়ার পরিকল্পনা করলেন।
অ্যারি এবং নোয়েকে এক নজরে দেখলে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না। এই সুযোগই কাজে লাগালেন অ্যারি। তিনি অফিসের কাজও করলেন আবার একই সময়ে ঘুরতেও গেলেন। কিন্তু একই সময় দু’জায়গায় কী ভাবে হাজির থাকছিলেন তিনি?
অ্যারির বস্ লক্ষ করেন যে, তাঁর অফিস থেকে একটি ভিডিয়ো শুট করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অ্যারির বোন নোয়ে। তার পরেই সব ছলনা ধরা পড়ে যায় অ্যারির।
আসলে, ছুটি না পাওয়ার কারণে অ্যারি তাঁর যমজ বোন নোয়েকে অফিসে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। যে হেতু দুই বোন একই রকম দেখতে তাই অ্যারির সহকর্মীরাও পার্থক্য বুঝতে পারেননি। অ্যারি সেজে অফিসে যেতে শুরু করেন নোয়ে।
কিন্তু অ্যারির মিথ্যা ধরা পড়ে যায় নোয়ের কারণে। অ্যারির অফিস থেকে একটি ভিডিয়ো শুট করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন নোয়ে। সেই ভিডিয়ো নজরে পড়ে অ্যারির বসের। সঙ্গে সঙ্গে ভিডিয়ো থেকে একটি স্ক্রিনশট তুলে নেন তিনি।
বিন্দুমাত্র দেরি না করে অ্যারিকে সেই স্ক্রিনশট মেল করেন তাঁর বস্। ছবি পাঠানোর সঙ্গে বকাও দেন অ্যারিকে।
মেলে অ্যারির বস্ লেখেন, ‘‘তুমি শুধু নিজের জায়গাই নষ্ট করোনি। তোমার সহকর্মীরা তোমার উপর যে ভরসা করত তা-ও হারিয়ে ফেলেছ। তোমার এই আচরণের জন্য সংস্থার সম্মানহানি হয়েছে।’’
অ্যারি যখন মনের আনন্দে ঘোরাফেরা করছেন, সেই মুহূর্তে তাঁর কাছে বসের মেল ঢোকে। পুরো ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে সমাজমাধ্যমে নিজের অনুগামীদের জানান অ্যারি।
প্রভাবী অ্যারির অনুগামীরা যমজ বোনকে পছন্দ করলেও অ্যারির আচরণকে সমর্থন করেননি। বরং অ্যারি অসত্য পথ নিয়ে অন্যায় করেছেন, তা মন্তব্যের খাতায় লিখে জানান তাঁদের অধিকাংশ।
অ্যারি জানিয়েছেন, তাঁর বস্ অ্যারির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। তিনি কেন এমন আচরণ করেছেন তাঁর ব্যাখ্যাও অ্যারির কাছে চেয়েছেন তাঁর অফিসের বস্। তবে চাকরি থেকে এখনও পর্যন্ত বরখাস্ত করেননি ভ্রমণপিপাসু অ্যারিকে।