দেওয়াল বেয়ে উঠেছে গাছপালা। সদর দরজা বলতে কিছুই নেই। অন্দরমহলের সঙ্গে বাহিরমহল মিলেমিশে গিয়েছে। বাড়ির ভিতর ঢুকলে দেখা যায়, গিজগিজ করছে ইঁদুর। ধুলোময়লায় ভর্তি এই ‘পোড়োবাড়ি’ই উঠেছে নিলামে।
দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ওয়েমাউথ শহরের মাঝে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি ‘পোড়োবাড়ি’। আশপাশে মানুষের বসবাস রয়েছে। ঘরবাড়ি, দোকানপাট রয়েছে সবই। সেই এলাকায় যেন একেবারেই বেমানান বাড়িটি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ১৯৩০ সালে তৈরি করা হয়েছিল বাড়িটি। বহু বছর ধরে বাড়ির মালিক তাঁর পরিবার নিয়ে সেই বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে সেই বাড়ি মালিকানা হারিয়েছে।
এত বড় বাড়ির পরিচর্যা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল বলে বাড়ির মালিক তা সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার হাতে দিয়ে দেন। সংস্থা দায়িত্ব নিয়ে পর পর দু’বার সেই বাড়িটি নিলামে তোলে। তবুও ক্রেতার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বাড়ির সামনে এবং পিছন দিকে বড় বাগান রয়েছে। বাড়ির ভিতর ঢুকেই রয়েছে লম্বা হলঘর। হলঘরের এক প্রান্তে রয়েছে অতিথিদের বসার জন্য দু’টি ঘর। রান্নাঘরও রয়েছে সেখানে।
বাড়ির সামনে রয়েছে একটি গ্যারাজ। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলে এক তলায় রয়েছে তিনটি বেডরুম এবং একটি বাথরুম। বাথরুমে বাথটব, শাওয়ারের ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ জিনিস ভেঙে গিয়েছে।
বাড়ির কোনও ঘরের মেঝে নেই। দরজা উধাও। জানলা ভেঙে পড়েছে। ঘরের এক তলা থেকে অন্য তলায় যাওয়ার সিঁড়িও উধাও। ফলে উপর তলা আলাদা ভাবে বোঝা যায় না।
অনেকের দাবি, ১৫ বছর ধরে ফাঁকা পড়ে থাকার কারণে বাড়ির ভিতর ভেঙেচুরে গিয়েছে। বাড়ির ভিতর থেকে জিনিসপত্রও নিয়ে চলে গিয়েছেন অনেকে।
সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার এক কর্মী জানিয়েছেন, বাড়ি ফাঁকা হয়ে যাওয়ার ১০ বছরের মধ্যে বাড়ির দেওয়াল বেয়ে গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ গজিয়ে উঠেছিল। বাড়়িটি যেন সবুজ চাদরে ঢেকে গিয়েছিল। পরিষ্কার করানোর কিছু দিন পর আবার গাছপালা গজাতে শুরু করে।
বাড়িটি পুরনো হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গাছপালা গজিয়ে ওঠার কারণে সেখানে বেড়ে গিয়েছে ইঁদুরের উপদ্রবও। মেঝেয় পা দিলেই পায়ের উপর হেঁটেচলে বেড়ায় তারা।
এই ‘পোড়োবাড়ি’টি লন্ডনে নিলামে ওঠে। নিলামঘরের এক কর্মীর বক্তব্য, এর আগেও দু’বার নিলামে উঠেছিল বাড়িটি। কিন্তু কোনও ক্রেতা পাওয়া যায়নি।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে তৃতীয় বারের জন্য নিলামে ওঠে বাড়িটি। দাম ধার্য করা হয় কোটি টাকারও বেশি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারতীয় মুদ্রায় বাড়িটির দাম ধার্য করা হয়েছে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। প্রতিবেশীদের আশা, বাড়িটি যিনি কিনবেন তিনি পরিবার নিয়ে এসে থাকবেন। বাড়িটি যেন আবার বাসযোগ্য হয়ে ওঠে, এমনটাই চাইছেন তাঁরা।