কিছু জিনিস আছে নিত্যদিনে যার ব্যবহার অপরিহার্য। এ রকমই একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস হল পেন। মনের ভাব কাগজে লিখে প্রকাশ করার অন্যতম প্রধান সামগ্রী হল পেন।
মানুষের জীবনে পেন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে বহু যুগ ধরেই। চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্য বদলে পেন বারবার নয়া রূপে ধরা দিয়েছে।
প্রথম দিকে ফাউন্টেন পেনের চল থাকলেও ধীরে ধীরে জেল পেন এবং বল পেনের জনপ্রিয়তা বাড়ে। কারণ, ব্যবহার করা অনেক সহজ। পাশাপাশি ফাউন্টেন পেনের মতো বাইরে থেকে কালি ভরতে হয় না।
বিভিন্ন কালির পেন স্কুল জীবনে প্রতিটি পড়ুয়ার কাছে এক আলাদা আকর্ষণের বিষয়।
ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বল পয়েন্ট পেনগুলির নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় বিশেষ ছিদ্র থাকে। তার মধ্যে একটি হল পেনের ঢাকনায়।
সব ক্ষেত্রে না হলেও পৃথিবীর বেশির ভাগ বল পেনের ঢাকনাতেই এই ছিদ্র লক্ষ করা যায়।
প্রথমে মনে করা হত যে, এর পিছনে পেন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিশেষ ষড়যন্ত্র রয়েছে। অনুমান করা হত পেনের কালি যাতে দ্রুত শুকিয়ে যায়, তার জন্যই কোম্পানিগুলি পেনের ঢাকনায় এই ছিদ্র রাখে।
আবার অনেকের দৃঢ় ধারণা, আমরা নির্দিষ্ট সংস্থার পেন যাতে বেশি করে কিনি সেই কারণে ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ছিদ্র রাখা হয়।
তবে এই কথা সত্যি যে, পেনের ঢাকনার প্রান্তে থাকা ছিদ্র কিছুটা হলেও পেনের কালি শুকিয়ে দেয়। তাই কিছু দিন পর পর ব্যবহার না করলে পেনের নিব লেখার আগে দু’এক বার ঘষে নিতে হয়।
তবে পেনের কালি যাতে শুকিয়ে যায়, সেই কারণে মোটেও এই ছিদ্র রাখা হয় না।
আরেকটি তত্ত্ব অনুযায়ী, পেনের ঢাকনায় এই ছিদ্র রাখা হয় যাতে পেনের ঢাকনা খোলা বা বন্ধ করার সময় ভিতর এবং বাইরের বায়ু চাপ সমান থাকে।
তবে বায়ু চাপ ঠিক রাখার জন্য ঢাকনার মুখে ছিদ্র রাখার তত্ত্বটিও পুরোপুরি সঠিক নয়।
তা হলে এর আসল কারণ কী?
আমরা সকলেই, বিশেষ করে বাচ্চারা লেখার সময় অন্যমনস্ক হয়ে পেনের ঢাকনা মুখে পুরে দেয়। এর ফলে এই ঢাকনা গলায় আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেশ কিছু শিশুর মৃত্যুও হয়েছে গলায় পেনের ঢাকনা আটকে যাওয়ার কারণে।
তাই কারও গলায় পেনের ঢাকনা আটকে গেলেও যাতে বায়ু চলাচল অব্যাহত থাকে, তা মাথায় রেখেই পেনের ঢাকনাগুলির মুখে এই ছিদ্র রাখা হয়।
পেন তৈরির আদিকাল থেকে তাই এই ভাবে পেনের ঢাকনা তৈরি করা শুরু করে। তার ছাপ মেলে আধুনিক সংস্থাগুলির পেনেও।