বেশ কিছু বছর আগেও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক কন্টেন্টের জন্য জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু বিগত দু-তিন বছরে ভারতীয় কন্টেন্টের মান বৃদ্ধি পেয়েছে, বাড়ছে ভারতীয় দর্শকদের সংখ্যাও।
অতিমারির প্রকোপে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় দর্শকেরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছিলেন। ওয়েব সিরিজ ছাড়াও প্রচুর ছবি ওটিটি-তে মুক্তি পেয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও প্রযোজক ও পরিচালকরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মকেই বেছে নিচ্ছেন।
এমনকি, বি-টাউনের বহু তারকা বড় পর্দায় অভিনয় করলেও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। পঙ্কজ ত্রিপাঠী, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি, সইফ আলি খান, রাধিকা আপ্টের মতো অভিনেতারা ওয়েব সিরিজের পরিচিত মুখ।
আবার এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই বহু নতুন প্রতিভা বলিউড সিনেমা জগতে প্রবেশ করেছেন। জিতেন্দ্র কুমার, প্রতীক গাঁধী, মিথিলা পালকর ওয়েব সিরিজের মাধ্যমেই দর্শকদের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছেন।
ভারতীয় ওয়েব সিরিজের মধ্যে ‘মির্জাপুর’, ‘সেক্রেড গেমস্’, ‘পঞ্চায়েত’, ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’, ‘স্ক্যাম ১৯৯২’ অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই সিরিজগুলিতে যে তারকারা অভিনয় করেছেন তাঁদের অর্থ উপার্জনও কোটির গুণিতকে।
এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী। ‘মির্জাপুর’ও ‘সেক্রেড গেমস্’ ওয়েব সিরিজে তাঁর চরিত্রগুলি ছিল দর্শকদের মূল আকর্ষণ। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ‘মির্জাপুর’-এর দ্বিতীয় সিজনের জন্য ১০ কোটি এবং ‘সেক্রেড গেমস্’-এর দ্বিতীয় সিজনের জন্য তিনি ১২ কোটি টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছেন।
‘মির্জাপুর’ ওয়েব সিরিজে আলি ফজলও দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছেন। গুড্ডু পণ্ডিতের ভূমিকায় তাঁকে অভিনয় করতে দেখা যায়। পর্ব প্রতি প্রায় ১২ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন আলি।
‘সেক্রেড গেমস্’-এর দুটো সিজনেরই মুখ্য চরিত্রে ছিলেন সইফ আলি খান ও নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। দু’জনের অসাধারণ অভিনয়ই সিরিজটিকে টানটান করে তুলেছে। সিজন প্রতি সইফ ১৫ কোটি টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছেন। এক জন পুলিশ আধিকারিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।
নওয়াজউদ্দিন এই সিরিজে গণেশ গাইতোণ্ডের চরিত্রে দুর্ধর্ষ অভিনয় করেছেন। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় সিজন থেকে তিনি ১০ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।
‘সেক্রেড গেমস্’-এর প্রথম সিজনে রাধিকা আপ্টেকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। ‘র’ এজেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। পারিশ্রমিক হিসাবে রাধিকা চার কোটি টাকা পেয়েছিলেন।
‘দ্য ভাইরাল ফিভার’ প্রোডাকশন হাউসের ‘কোটা ফ্যাক্টরি’, ‘পিচার্স’, ‘ব্যাচেলর্স’ প্রভৃতি ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখেন জিতেন্দ্র কুমার। ‘পঞ্চায়েত’ সিরিজটিও গল্পের সরলতার কারণে দর্শকদের মনে আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে।
সিরিজে ফুলেরা গ্রামের পঞ্চায়েত সচিবের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জিতেন্দ্র। প্রথম সিজনের বিপুল সাফল্যের পর সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘পঞ্চায়েত’-এর দ্বিতীয় সিজন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জিতেন্দ্র তাঁর পারিশ্রমিক আগের সিজনের তুলনায় বাড়িয়েছেন। দ্বিতীয় সিজনের পর্ব প্রতি চার লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন তিনি।
‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ ওয়েব সিরিজে মনোজ বাজপেয়ী ও প্রিয়মণিকে স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। দ্বিতীয় সিজনের পর্ব পিছু ২৫ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছেন মনোজ এবং প্রিয়মণি ১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন।
‘স্ক্যাম ১৯৯২’ ওয়েব সিরিজে হর্ষদ শান্তিলাল মেহতার চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছন প্রতীক গাঁধী। পর্ব প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।