প্রযুক্তির আঙিনায় গুগ্লই সর্বেসর্বা। পথেঘাটে চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে সাধারণ মানুষ এখন গুগ্লকে স্মরণ করেন। যেন সব প্রশ্নের অব্যর্থ জবাব নিয়ে বসে আছে গুগ্ল।
কিন্তু প্রযুক্তির লড়াইয়ে এ বার সেই গুগ্লই নাকি হেরে যেতে বসেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে হাতিয়ার করে যুদ্ধজয়ের পথে অন্য এক আমেরিকান সংস্থা।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে চর্চিত প্রযুক্তির নাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। এর মাধ্যমে যে কোনও কাজ কম সময়ে আগের চেয়ে অনেক সহজে করে ফেলা যায়।
সমাজমাধ্যম থেকে শুরু করে গবেষণাগার, সর্বত্র এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রমরমা। এআইয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। লোকজনের হাতে হাতে ঘুরছে নানা রকম এআই অ্যাপ।
প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি অগোচরে বিপদ ডেকে এনেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কারণ এআইয়ের জনপ্রিয়তায় লুকিয়ে আছে বেকারত্বের বীজ।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের কাজ যত সহজ হচ্ছে, তত বিভিন্ন সংস্থায় কর্মী ছাঁটাই হয়ে উঠছে অনিবার্য। ইতিমধ্যে এআইয়ের কোপে বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রযুক্তির আধুনিকতম এবং জনপ্রিয়তম মাধ্যম এআইকে কেন্দ্র করে বিশ্বের তাবড় সংস্থার মধ্যে দ্বন্দ্ব অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। এআই-তে ভর করে কে কত এগিয়ে যেতে পারে, চলছে তার প্রতিযোগিতা।
গুগ্লের সঙ্গে তেমনই এক প্রতিযোগিতায় ক্রমশ এগিয়ে চলেছে মাইক্রোসফ্ট। আমেরিকান এই সংস্থা এআই যুদ্ধে গুগ্লকে হারিয়ে দিচ্ছে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।
কোথায় এগিয়ে মাইক্রোসফ্ট? এআই যুদ্ধে তারা কী ভাবে গুগ্লকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে? এর নেপথ্যে রয়েছে জনপ্রিয় এআই প্রযুক্তি চ্যাটজিপিটি-র সঙ্গে মাইক্রোসফ্টের চুক্তি।
চ্যাটজিপিটি-র অভিভাবক সংস্থা ‘ওপেন এআই’-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মাইক্রোসফ্ট। মাইক্রোসফ্টের বিং এবং এজ় ব্রাউজ়ারকে আরও গতিময় করে তোলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে চ্যাটজিপিটি।
মাইক্রোসফ্টের দাবি, তথ্য সন্ধানের ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্রাউজ়ারের গতি আরও বাড়িয়ে আনার নিরন্তর চেষ্টা থেকেই চ্যাটজিপিটি-র জন্ম। সেখানেই গুগ্লকে টেক্কা দিচ্ছে তারা।
মাইক্রোসফ্টের সিইও সত্য নাদেলা এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “সন্ধানের জগতে বিস্ময়ের আর এক নাম চ্যাটজিপিটি। গতিময় জীবনে আরও গতি এনে দিতে নিরন্তর কাজ করবে এই প্রযুক্তি।”
গুগ্ল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন। চ্যাটজিপিটি-র মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিকে সার্চ ইঞ্জিনে কাজে লাগিয়েছে মাইক্রোসফ্ট। তাই তার কাছে গুগ্লকে হার মানতে হচ্ছে, মত বিশেষজ্ঞদের।
শুধু সার্চ করেই ক্ষান্ত থাকতে হয় গুগ্লে। কিন্তু মাইক্রোসফ্টের চ্যাটজিপিটি-তে আরও অনেক কাজ করা যায়। বড় রচনা, কোনও কিছুর আবেদন, প্রতিবেদন, গান বা কবিতা লেখা— সবই অন্য কারও হয়ে করে ফেলতে পারে চ্যাটজিপিটি।
সাইবার ক্রাইমের ক্ষেত্রেও সমান তালে সাহায্য করতে পারে চ্যাটজিপিটি। বিবিধ পারদর্শিতার কারণে গুগ্লের চেয়ে তার উপযোগিতা অনেক বেশি। তাই আধুনিক জনগণ এআই প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। অনেকেই মানছেন, এআই যুদ্ধে মাইক্রোসফ্টের কাছে ক্রমশ হেরে যাচ্ছে গুগ্ল।