ডিজিটাল মাধ্যমে চিঠি লেখার অন্যতম প্রধান এবং নির্ভরযোগ্য মাধ্যম জিমেল। গুগলের এই বিভাগটির মাধ্যমে যে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে বার্তা পাঠানো যায়।
স্মার্টফোনের যুগে ফেসবুক, মেসেঞ্জার আর হোয়াটস্অ্যাপের রমরমা। বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজবের জন্য অজস্র মেসেজিং অ্যাপ বাজারে এসেছে। কিন্তু স্মার্টফোনের বহুল প্রচলনের আগে থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর পথ দেখিয়েছিল জিমেল।
জিমেলের প্রাসঙ্গিকতা এখনও ফিকে হয়নি। যে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে চিঠি চালাচালির বিষয়ে জিমেলের উপরে ভরসা রাখা হয়।
বিশ্ব জুড়ে জিমেলের জনপ্রিয়তা বিপুল। পৃথিবীর নানা প্রান্তে প্রায় ৪২৬ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে গুগলের এই ইমেল পরিষেবার। বহু মানুষ জিমেল ব্যবহার করেন নিয়মিত।
জিমেলের গ্রাহক সংখ্যা অজস্র হলেও বহু মানুষ এখনও এই পরিষেবা ব্যবহারের খুঁটিনাটি কৌশল জানেন না। যে কারণে জিমেলের অনেক আকর্ষণীয় ব্যবস্থাপনা চোখের আড়ালেই থেকে যায়।
এই প্রতিবেদনে রইল জিমেলের তেমন কিছু কৌশলের খুঁটিনাটি, যা জেনে নিলে গুগলের এই পরিষেবা অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফে প্রচারের জন্য হামেশাই বেছে নেওয়া হয় জিমেলকে। ফলে জিমেলের ইনবক্স বেশির ভাগ সময়েই ভরে থাকে অজস্র অপ্রয়োজনীয় প্রচারমূলক বার্তায়।
ইনবক্সের এই প্রচারমূলক ইমেলের হাত থেকে সহজে মুক্তি পাওয়ার উপায় রয়েছে। তার জন্য ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ থেকে প্রথমে জিমেলে লগ ইন করতে হবে। তার পর উপরে সার্চ করার জায়গায় গিয়ে ইংরেজিতে টাইপ করতে হবে ‘আনসাবস্ক্রাইব’ শব্দটি।
এন্টার বাটনে চাপ দিলেই ‘আনসাবস্ক্রাইব’ করা যায় এমন যাবতীয় মেসেজ সামনের দিকে উঠে আসবে। এর পর মেসেজগুলিকে একসঙ্গে সিলেক্ট করে ডিলিট করে দিলেই ইনবক্স হয়ে যাবে জঞ্জালমুক্ত। এতে ফোনের জায়গাও খালি হবে।
হোয়াটস্অ্যাপে কাউকে কোনও মেসেজ পাঠিয়ে ফেলার পর তা সহজেই মুছে দেওয়া যায়। জিমেলেও কিন্তু সেই ব্যবস্থা রয়েছে। ভুলবশত কোনও ইমেল পাঠিয়ে ফেললে গুগল সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড সময় দেয় তা ‘আনডু’ করার। অর্থাৎ, পাঠিয়ে ফেলা মেলটিকে আবার ফিরিয়ে নিতে পারবেন প্রেরক।
এই পরিষেবা পাওয়ার জন্য ‘সেটিংস’ অপশনে গিয়ে ‘জেনারেল সেটিংস’-এ ‘আনডু সেন্ট’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। সেখান থেকে ৩০ সেকেন্ডের সময়সীমা বেছে নিলেই যে কোনও ইমেল পাঠানোর পর তা ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য পাওয়া যাবে আধ মিনিট সময়।
জিমেলে গোপন বার্তা পাঠানোর গোপন কৌশল জানেন না অনেকেই। প্রেরক চাইলে এমন ভাবে মেল পাঠাতে পারেন, যাতে সেই মেল পাওয়ার পর প্রাপক তা শুধু দেখতে পারবেন। মেলটি প্রিন্ট, কপি, ফরোয়ার্ড বা ডাউনলোড করতে পারবেন না।
এ ভাবে গোপন বার্তা পাঠানোর জন্য মেল পাঠানোর আগে স্ক্রিনে ‘তালা’ চিহ্নতে ক্লিক করতে হবে। তা হলেই মেলটি ‘কনফিডেনশিয়াল’ বা গোপন হিসাবে বিবেচিত হবে।
জিমেলে যে কোনও মেল ‘শিডিউল’ করার বন্দোবস্তও রয়েছে। অর্থাৎ, মেলটি টাইপ করে রাখার পর কখন পাঠানো হবে, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা যায়। প্রেরক মেল টাইপ করে ঘুমিয়ে পড়লেও যথা সময়ে মেলটি যথাস্থানে পৌঁছে যাবে।
মেল ‘শিডিউল’ করার জন্য টাইপ করার পর ‘সেন্ট’ বাটনের পাশের তির চিহ্নে ক্লিক করতে হবে। ‘শিডিউল সেন্ট’ অপশনে ক্লিক করে মেল পাঠানোর তারিখ এবং সময় নির্দিষ্ট করে দিলেই মেলটি ‘শিডিউল’ হয়ে যাবে।
ইনবক্সে আসা কোনও মেল তাৎক্ষণিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ না হলে ব্যস্ত সময়ে তা সরিয়ে দেওয়া যায়। এর জন্য স্ক্রিনের ডান দিকে ঘড়ির চিহ্নে ক্লিক করতে হবে। মেলটি কত ক্ষণ পর আবার দেখতে চান, সেই সময় নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। ব্যস্ততা কেটে গেলে যথা সময়ে মেলটি আবার সামনে উঠে আসবে।
অফলাইনেও জিমেল ব্যবহার করা যায়। ইন্টারনেট ছাড়াই মেল পড়া এবং তার উত্তর দেওয়া সম্ভব। ব্যবহারকারীদের সেই কৌশলও জানা দরকার।
এর জন্য প্রথমে ‘সেটিংস’ এবং তার পর ‘অল সেটিংস’-এ ক্লিক করতে হবে। সেখান থেকে যেতে হবে ‘অফলাইন’ ট্যাবে। এর পর ‘এনেবল অফলাইন মেল’ অপশনে ক্লিক করলেই অফলাইন মাধ্যমে জিমেল ব্যবহার করা যাবে।