সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ক্ষেত্রে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে চোখে-মুখে। বয়স বাড়লে কোলাজেন নামক প্রোটিনের মাত্রা কমতে থাকে। এই প্রোটিনের মাত্রা কমলে চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ে।
মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের দেহে দ্রুত পরিমাণে কোলাজেনের মাত্রা কমতে থাকে।
কিন্তু যদি এমন হত, সময় বাড়লেও বয়স খুব ধীর গতিতে বাড়ল! তা হলে তো বেড়ে যাবে আয়ুও। বিশ্বে এমন বেশ কিছু প্রাণী রয়েছে যারা নিজেদের বয়স ধরে রাখতে পারে।
এই তালিকায় রয়েছে কচ্ছপ, স্যালামান্ডার, কুমিরের মতো প্রাণী। এদের বয়স খুব ধীর গতিতে বাড়ে।
এমনকি, বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের ক্ষেত্রেও বয়সের বৃদ্ধি অনেকটা সময় ধরে হয়।
বিজ্ঞানীরা এই সব প্রাণীর উপর পরীক্ষা করে দেখেন, অনেকটা সময় নিয়ে বেড়ে ওঠা তাদের প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম।
কচ্ছপের শরীরে খোলসের উপস্থিতি বা ব্যাঙের শরীরে বিষ উপস্থিত থাকার কারণে তাদের কোনও প্রাণী খুব সহজে আক্রমণ করতে পারে না।
এর ফলে বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফলে তাদের বয়স বাড়তেও দেরি হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, এই খোলস বা বিষ তাদের ঢাল হিসাবে কাজ করে।
বিজ্ঞানীদের ভাষায় একে ‘প্রোটেক্টিভ ফেনোটাইপ’ তত্ত্ব বলা হয়।
পৃথিবীতে এমন বহু সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণী রয়েছে, যারা ১০০ বছরের বেশি বেঁচে থাকে।
তবে, এত দিন ধরে এই প্রাণীগুলির বেঁচে থাকার আসল কারণ কী তা এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, শুধু প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্যের জন্যেই নয়, অন্য কোনও কারণে তাদের ধীর গতিতে বয়স বাড়তে দেখা যায়।
তাঁদের আরও ধারণা, এই সকল প্রজাতির জিনগত উপাদান পরীক্ষা করলে কোনও নতুন তথ্য সামনে আসতে পারে।
পরবর্তী কালে এর প্রয়োগ যদি মানবদেহের উপরেও করা যায় তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তা আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে।