বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের স্থায়িত্ব বজায় রাখা সহজসাধ্য নয়। অমিতাভ বচ্চন থেকে শাহরুখ খান, মাধুরী দীক্ষিত থেকে শুরু করে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন— সকলেই নিজেদের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু বলিজগতে পা রেখে হিট ছবিতে অভিনয় করার পরেও তারকাদের কেরিয়ারে ছন্দপতন ঘটে।
বেশি সংখ্যক ছবিতে অভিনয় করলেও মুক্তি পাওয়ার পর তা বক্স অফিসে তেমন সাড়া পায় না। আবার ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের ‘কামব্যাক’ ঘটে নতুন ছবির হাত ধরে। তারকাদের এই তালিকায় সলমন খান, করিনা কপূর খান এবং হৃতিক রোশনের মতো বলিউডের বহু নামকরা নায়ক-নায়িকার নাম রয়েছে।
২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সলমন খান বহু সিনেমায় অভিনয় করলেও তার মধ্যে মাত্র তিনটি ছবি হিট করেছিল। কিন্তু সেই তিনটি ছবিতেই সহ-অভিনেতা হিসাবে কাজ করেছিলেন ‘ভাইজান’।
সেই সময় সলমনের কেরিয়ারে ছন্দপতন ঘটে। ২০০৯ সালের শেষের দিকে প্রভু দেবার পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ওয়ান্টেড’ ছবিটি।
৫২ কোটি টাকা বাজেটের এই ছবিটি বক্স অফিস থেকে ৯৩ কোটি টাকা উপার্জন করে। এই সিনেমা হিট হওয়ার পর সলমনের কেরিয়ারে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়।
২০০৭ সালে বলিপাড়ায় পা রাখেন দীপিকা পাড়ুকোন। ‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে শাহরুখের বিপরীতে অভিনয়ের পর তিনি একের পর এক হিন্দি ছবিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু পর পর পাঁটটি ছবিই ফ্লপ করেছিল।
অবশেষে ২০১২ সালে ‘ককটেল’ ছবির মাধ্যমে তিনি আবার নয়া রূপে ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন। তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে বলিপাড়ার শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রীদের মধ্যে দীপিকার নাম রয়েছে।
‘ককটেল’ ছবিতে দীপিকার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সইফ আলি খান। অভিনেতার কেরিয়ারের রেখচিত্রও সব সময় ঊর্ধ্বমুখী ছিল না।
নব্বইয়ের দশকে বহু পারিবারিক ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা যায়। তা ছাড়াও বলিউডের অন্য অভিনেতাদের সঙ্গেও অভিনয় করেছিলেন সইফ।
একক ছবি হিসাবে কোনও ছবিই হিট হয়নি সইফের। ২০০১ সালে মুক্তি পায় ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবিটি। আমির খান, অক্ষয় খন্নার সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় সইফকে।
এই ছবিই অভিনেতার জীবনের মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়। তার পর আর সইফকে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করে গিয়েছেন সইফ।
২০০০ সালে মুক্তি পায় ‘রিফিউজি’ ছবিটি। অমিতাভ-পুত্র অভিষেকের সঙ্গে বলিপাড়ায় পা রাখেন করিনা কপূর খান।
তার পর তারকাখচিত বহু ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে ধরে। কিন্তু কোনও একক ছবি হিটের খাতায় নাম লেখাতে পারেনি।
২০০৭ সালে মুক্তি পায় ‘জব উই মেট’ রোম্যান্টিক কমেডি ঘরানার ছবি।
এই ছবিতে অভিনয়ের পর জনপ্রিয় হয়ে ওঠে শাহিদ-করিনা জুটি। এই ছবির মাধ্যমেই করিনার কেরিয়ারে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়।
শাহিদ কপূর বলিউডের ‘চকলেট বয়’ নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। এই ছবিতে অভিনয়ের পর তিনি বহু তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালে অভিনেতার ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে। ‘হায়দার’ ছবিতে তাঁর দুর্ধর্ষ অভিনয় সকলের মন জিতে নিয়েছিল।
বলিপাড়াতেও তিনি বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এর পর তাঁকে ভিন্ন স্বাদের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।
বাবার সঙ্গে প্রযোজনার কাজে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বলি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পরিচয় রাকেশ-পুত্র হৃতিকের।
২০০০ সালে ‘কহো না প্যার হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু পরবর্তী তিন বছর আর কোনও হিট ছবি দর্শকমহলকে উপহার দিতে পারেননি অভিনেতা। ২০০৩ সালে ‘কোই মিল গয়া’ ছবিতে ‘রোহিত মেহড়া’র ভূমিকায় অভিনয় করে আবার কেরিয়ারের দ্বিতীয় ধাপে পা রাখেন হৃতিক।