তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চূড়ান্ত সাজা শুনিয়ে দিল আদালত। শুধু প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রীই নন, তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিরও ১৪ বছরের কারাদণ্ডের সাজা হয়েছে।
দেশের গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবারই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল পাকিস্তানের আদালত। এর এক দিন পরেই আবার ১৪ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হল ইমরানকে।
ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর হাত থেকে বেহাত হয়েছে দেশের গোপন তথ্য সমৃদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ‘তার’ বা চিঠি।
মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলারই শুনানি ছিল পাকিস্তানের বিশেষ আদালতে। সেখানেই ইমরান এবং তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সহ সভাপতি শাহ মেহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত।
তোষাখানা মামলায় আগেই ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছিল পাকিস্তান পুলিশ। তার পর থেকে জেলেই রয়েছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে পাকিস্তানের বিভিন্ন আদালতে। এর মধ্যেই একটি ছিল এই মামলাটি।
যদিও ইমরান প্রথম থেকেই বলে এসেছেন চিঠি সংক্রান্ত পুরো বিষয়টিই একটি ষড়যন্ত্র। তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর জন্যই নাকি ওই ‘ষড়যন্ত্র’ রচনা করা হয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন ইমরান। তার পরে ২০২৩ সালের ৫ অগস্ট তাঁকে কারাদণ্ড দেয় ইসলামাবাদ আদালত।
তোষাখানা মামলায় তিন বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়েছিল ইমরানকে। অ্যাটাক ডিসট্রিক্ট জেলে বন্দি ছিলেন তিনি।
এর পরে গত বছর ডিসেম্বরেই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরান এবং কুরেশিকে জামিন দিয়েছিল। তবে জামিন পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য মামলাগুলির জন্য জেলেই ছিলেন ইমরান।
তোষাখানা মামলার সূত্রপাত গত বছর ইমরান ক্ষমতা হারানোর পরে। দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, বিদেশ থেকে ইমরানের উপহার পাওয়া ঘড়ি তিনি ২০ লক্ষ ডলারে কিনে নিয়েছিলেন।
ওই ব্যবসায়ী জানান, ২০১৯ সালে যখন ইমরানের দল পাকিস্তানের শাসনক্ষমতায় ছিল, তখন সৌদি আরবের রাজা মহম্মদ বিন সলমন তাঁকে ওই বহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন।
ওই অভিযোগে প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল।
কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমরান ২০২২ সালের অক্টোবরে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানালেও আদালত তা খারিজ করে দিয়ে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে বলেছিল তাঁকে।
এর পর গত বছরের মে মাসে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইন্সের বিশেষ আদালত ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তোষাখানা মামলায় আগেই ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান পুলিশ ।
তার পর থেকে জেলেই রয়েছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে পাকিস্তানের আদালতে।