লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় দেশের ১৩টি রাজ্যের মোট ৮৮টি আসনে ভোট চলছে শুক্রবার। ভোটগ্রহণ চলছে উত্তরবঙ্গের তিন আসন— দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটেও। এ ছাড়াও কেরলের ২০টি লোকসভা আসনের সব ক’টিতে, কর্নাটকের ২৮টি আসনের ১৪টিতে, রাজস্থানের ১৩টি আসনে, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশের আটটি করে আসনে, মধ্যপ্রদেশের ছ’টি আসনে, আসাম এবং বিহারে পাঁচটি করে আসনে, ছত্তীসগঢ়ের তিনটি আসনে এবং মণিপুর (আউটার মণিপুর কেন্দ্রের একটি অংশে ভোট হচ্ছে), ত্রিপুরা ও জম্মু এবং কাশ্মীরের একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ চলছে।
দ্বিতীয় দফায় মোট ৮৯টি আসনে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের বেতুল কেন্দ্রের বহুজন সমাজ পার্টি প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই কেন্দ্রের ভোট তৃতীয় দফায় হবে। ২০১৯ সালে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ এই ৮৯টি আসনের মধ্যে ৫৬টি আসন জিতেছিল। বিরোধী ইউপিএ জোট পেয়েছিল ২৪টি আসন।
লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় বেশ কিছু হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর (বিজেপি), তেজস্বী সূর্য (বিজেপি), হেমা মালিনী (বিজেপি), অরুণ গোভিল (বিজেপি), রাহুল গান্ধী (কংগ্রেস), শশী তারুর (কংগ্রেস) এবং কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী (জেডিএস)।
দ্বিতীয় দফায় ধনী প্রার্থীদের তালিকাও নেহাত কম নয়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার পাঁচ সবচেয়ে ধনী এবং পাঁচ সবচেয়ে ‘গরীব’ প্রার্থী কারা।
নির্বাচনী হলফনামা এবং নির্বাচনী সমীক্ষা সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)’-এর তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় দেশের সবচেয়ে ধনী প্রার্থী কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা ভেঙ্কটরামানে গৌড়া, যিনি পরিচিত ‘স্টার চন্দ্রু’ নামেও। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬২২ কোটি টাকা।
কর্নাটকের মাণ্ড্য কেন্দ্রের প্রার্থী ভেঙ্কটরামানে। ওই আসনে তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন জেডিএসের কুমারস্বামী।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের ভাই তথা কংগ্রেস নেতা ডিকে সুরেশ। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫৯৩ কোটি।
সুরেশের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর ১৬.৬১ কোটি টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়াও ৩২.৭৬ কোটি টাকা মূল্যের ২১টি কৃষিজমি, ২১০.৪৭ কোটি টাকা মূল্যের ২৭টি অ-কৃষি জমি, ২১১.৯১ কোটি টাকা মূল্যের ন’টি বাণিজ্যিক ভবন এবং ২৭.১৩ কোটি টাকার তিনটি বাড়ি রয়েছে সুরেশের।
সুরেশ বেঙ্গালুরু গ্রামীণ কেন্দ্রের তিন বারের সাংসদ। এই লোকসভা নির্বাচনেও ওই আসন থেকেই কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার সবচেয়ে ধনী প্রার্থীদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপির নেত্রী তথা অভিনেত্রী হেমা মালিনী। বিজেপির টিকিটে মথুরা লোকসভা আসন থেকে লড়ছেন তিনি। নির্বাচনী হলফনামা এবং এডিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৭৮ কোটি টাকা।
তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় শর্মা। সঞ্জয়ের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৩২ কোটি টাকা।
লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফায় ধনী প্রার্থীদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। প্রায় ২১৭.২১ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে তাঁর।
দ্বিতীয় দফায় এমন ছ’জন প্রার্থী রয়েছেন, যাঁদের কোনও সম্পত্তিই নেই। এঁদের মধ্যে প্রকাশ আরএ জৈন, রামামূর্তি এম, এবং রাজা রেড্ডি কর্নাটকের প্রার্থী। অন্য তিন প্রার্থী মহারাষ্ট্রের। তাঁরা হলেন— কিশোর ভীমরাও লাবাদে, নাগেশ সম্ভাজি গায়কোয়াড় এবং জ্ঞানেশ্বর রাওসাহেব কাপাটে।
লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার সবচেয়ে কম বিত্তশালী প্রার্থীদের মধ্যে এর পরেই নাম রয়েছে মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের নির্দল প্রার্থী লক্ষ্মণ নাগোরাও পাটিলের। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ৫০০ টাকা।
এই তালিকায় পাটিলের পরে নাম রয়েছে রাজেশ্বরী কেআর-এর। কেরলের কাসারাগোড কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী তিনি। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০০০ টাকা।
দ্বিতীয় দফার সবচেয়ে কম বিত্তশালী প্রার্থীদের মধ্যে এর পরে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের অমরাবতী কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী প্রুথ্বীসম্রাট মুকিন্দরাও দ্বীপাংশ। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৪০০ টাকা।
রাজস্থানের দলিত ক্রান্তি দলের নেতা শাহনাজ় বানোর সম্পত্তির পরিমাণ ২০০০ টাকা। তিনি জোধপুর আসনের প্রার্থী।
কেরলের কোট্টায়াম আসনের ‘সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (কমিউনিস্ট)’-র প্রার্থী ভিপি কোচুমন-এর মোট সম্পত্তি রয়েছে ২,২৩০ টাকার।