বৃহস্পতিবার কলকাতা শহরের বুকেই নিজের জীবনসঙ্গিনীর সঙ্গে নতুন পথে হাঁটা শুরু করলেন বলি অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী। কলকাতার একটি ক্লাবে ব্যক্তিগত পরিসরে আইনি মতে বিয়ে করলেন তিনি। শুভ মুহূর্তের ছবি প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই হইচই শুরু হয়ে যায় আশিসকে ঘিরে। কারণ, বয়সের অঙ্ক।
৬০ বছর বয়সে অসমের রুপালি বড়ুয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন আশিস। রুপালির বয়সও ৫০-এর দোরগোড়ায়। অভিনয়জগৎ নয়, বরং ফ্যাশনজগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন রুপালি। কলকাতায় কাপড়ের বিপণির পাশাপাশি রুপালি চালান একটি ক্যাফেও।
পেশাগত দিক দিয়ে আশিস এবং রুপালি যতই সফল হোক না কেন, সমাজমাধ্যমে নবদম্পতির ছবি দেখে যে প্রশ্ন অধিকাংশ নেটব্যবহারকারীদের মনে চাড়া দিয়ে উঠেছে, তা হল দু’জনের বয়স। প্রৌঢ়ত্বে পা রেখেও যে তাঁরা বিয়ে করেছেন, তা দেখে ভ্রু কুঁচকেছেন অনেকেই।
কিন্তু ভালবাসা যে দূরত্ব এবং বয়সের অঙ্কের সমীকরণ কিছুই বোঝে না। আশিস এবং রুপালি তারই প্রমাণ দিলেন। তবে আশিস শুধু একাই নন, বলিপাড়ায় এমন বহু অভিনেতা এবং অভিনেত্রী রয়েছেন, যাঁরা বেশি বয়সেও তাঁদের সঙ্গীদের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন।
২০১৮ সালে বলি তারকা মিলিন্দ সোমানকে ঘিরেও শুরু হয়েছিল চর্চা। ৫২ বছরে তিনি সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অঙ্কিতা কোনওয়ারের সঙ্গে। নিজের চেয়ে প্রায় ২৫ বছরের ছোট অঙ্কিতাকে বিয়ে করেছিলেন মিলিন্দ। সেটা ছিল মিলিন্দের দ্বিতীয় বিয়ে।
২০০৬ সালে ফরাসি অভিনেত্রী মাইলেন জাম্পানোইকে বিয়ে করেছিলেন মিলিন্দ। ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ ছবির সেটে মাইলেনের সঙ্গে আলাপ হয় অভিনেতার।
গোয়ার একটি রিসর্টে মাইলেনকে বিয়ে করেন মিলিন্দ। কিন্তু তাঁদের সংসার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় মিলিন্দ এবং মাইলেনের। বিচ্ছেদের ৯ বছর পর অঙ্কিতার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি।
বড় পর্দা হোক বা টেলিভিশন, থিয়েটার— কবীর বেদী যে সর্বক্ষেত্রেই অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। তবে পেশার পাশাপাশি কবীর চর্চিত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চার চার বার বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা।
১৯৬৯ সালে ওড়িশার নৃত্যশিল্পী প্রতিমা গৌরীকে বিয়ে করেছিলেন কবীর। তবে তাঁদের সম্পর্কের ভিত ধীরে ধীরে নড়তে থাকে। ১৯৭৪ সালে প্রতিমার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় কবীরের। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, অভিনেত্রী পরভিন ববির সঙ্গেও নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন কবীর। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক কোনও পরিণতি পায়নি।
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত পোশাকশিল্পী সুজ়ান হামফ্রেসকে বিয়ে করেন কবীর। দ্বিতীয় বিয়েও বেশি দিন টেকেনি কবীরের। দ্বিতীয় বার বিচ্ছেদের পর ৪৬ বছর বয়সে টেলিভিশন এবং রেডিয়ো শিল্পী নিক্কি বেদীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। ২০০৫ সালে নিক্কির সঙ্গে বিচ্ছেদের ১১ বছর পর আবার ছাঁদনাতলায় বসেন কবীর।
৭০ বছর বয়সে পা দিয়ে ২০১৬ সালে পরভিন দুসাঞ্জকে বিয়ে করেন কবীর। বিয়ের সময় পরভিনের বয়স ছিল ৪১ বছর। জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে নেওয়ার পর চতুর্থ বার বিয়ে করেছেন বলে কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন কবীরও।
বেশি বয়সে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন বলিপাড়ার একাধিক অভিনেত্রীও। ৬০ বছর বয়সে ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করেছেন বলিউডজগতের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সুহাসিনী মুলে।
দীর্ঘ দিন একা নিজের জীবন কাটিয়েছেন সুহাসিনী। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, মনের মানুষের সঙ্গে একত্রবাস করলেও সেই সম্পর্ক টেকেনি। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় সেই সম্পর্কে ইতি টানেন অভিনেত্রী। অবশেষে ২০১১ সালে অতুল গুর্তুকে বিয়ে করেন তিনি। পেশায় পদার্থবিজ্ঞানী অতুল।
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী নীনা গুপ্তের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কম জলঘোলা করা হয়নি। ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের সঙ্গে নীনার সম্পর্কও বহুল চর্চিত ছিল। নীনার কন্যা মাসাবা গুপ্ত বর্তমানে প্রসিদ্ধ পোশাকশিল্পী। মাসাবাকে একা হাতেই মানুষ করেছেন নীনা।
তবে মাসাবা যখন ধীরে ধীরে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করলেন, সেই সময় জীবনের নয়া অধ্যায়ে পা রাখলেন নীনা। ২০০৮ সালে ৫০ বছর বয়সে দিল্লির চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিবেক মেহরাকে বিয়ে করেন নীনা।
চলতি বছরে বিয়ে করেছেন নীনার কন্যা মাসাবাও। ২০১৫ সালে প্রযোজক মধু বর্মা মান্তেনার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মাসাবা। কিন্তু তাঁদের সংসারে চিড় ধরতে শুরু করে। ২০১৯ সালে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তারকা জুটি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সহ-অভিনেতা সত্যদীপ মিশ্রকে বিয়ে করেন মাসাবা।