কেরিয়ার শুরু ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’র মতো ব্লকবাস্টার ছবি দিয়ে। তার পর ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ এবং ‘করণ অর্জুন’-এর মতো হিন্দি ছবিতে কাজ করে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন সলমন খান। তবে তাঁকে নিয়ে বলিপাড়ায় বিতর্কও কম নেই। কেরিয়ারের গো়ড়ার দিকে নাকি বলিপাড়ার এক খ্যাতনামী পরিচালকের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
১৯৯৬ সালে ‘খামোশি: দ্য মিউজ়িক্যাল’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনার জগতে পা রাখেন সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। প্রথম ছবিতে সলমনের সঙ্গে কাজ করেন পরিচালক। সলমনের বিপরীতে এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় নানা পটেকর, মণীশা কৈরালা এবং সীমা বিশ্বাসকে।
‘খামোশি: দ্য মিউজ়িক্যাল’ ছবিতে কাজ করার সময় সঞ্জয়ের সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সলমনের। কানাঘুষো শোনা যায়, বলিপাড়ার তারকারা সাধারণত জনপ্রিয় হয়ে গেলে উঠতি পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হন না। কিন্তু সলমন সব সময় নতুন প্রতিভার সন্ধানে থাকেন। তাই সঞ্জয়ের প্রথম ছবিতে কাজ করেন তিনি।
প্রথম ছবিতে সলমনের সঙ্গে কাজ করে সঞ্জয়ের এত ভাল লাগে যে পরিচালক তাঁর পরবর্তী ছবির প্রস্তাবও সলমনকে দিয়ে ফেলেন। ‘খামোশি: দ্য মিউজ়িক্যাল’ ছবি মুক্তির তিন বছর পর মুক্তি পায় সঞ্জয় পরিচালিত ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিটি।
‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে সলমন খানের পাশাপাশি অজয় দেবগন এবং ঐশ্বর্যা রাইকেও কাজ করতে দেখা যায়। তখনও অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেননি ঐশ্বর্যা।
ছবির সেটে সলমনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে ঐশ্বর্যার। দুই তারকার বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে প্রেমে পরিণত হয়। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির সেট থেকেই নাকি সলমন এবং ঐশ্বর্যার সম্পর্ক শুরু হয় বলে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়।
সঞ্জয়ের ছবিতে সলমনের প্রেমিকার ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যায় ঐশ্বর্যাকে। এই ছবিতে কাজ করার সময় সলমন বেশ আনন্দে ছিলেন। কিন্তু ছবির অন্তিম পর্ব শুটিংয়ের সময় ক্ষুব্ধ হন অভিনেতা।
চিত্রনাট্য অনুযায়ী ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির অন্তিম দৃশ্যে সলমনের চরিত্রের ভাগ্যে নায়িকার ভালবাসা জোটে না। তাতেই নাকি সলমন ভয়ানক ক্ষেপে যান। বার বার সঞ্জয়কে চিত্রনাট্য পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করতে থাকেন তিনি।
সলমনের চোখে জল দেখেও সঞ্জয় তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। নাছোড় সলমন শেষ পর্যন্ত অন্য ভাবে চাপ দিতে শুরু করেন।
বলিপাড়ার ছবি নির্মাতা সুরজ বরজাতিয়ার সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব ছিল সলমনের। সলমন শেষমেশ সুরজের কাছে সাহায্য চান। নিজের সমস্যার কথা সুরজকে জানান সলমন।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কানাঘুষো শোনা যায়, সম্পর্কে থাকাকালীন ঐশ্বর্যার প্রতি অধিকারবোধ জন্মায় সলমনের। কখনওই নায়িকাকে নিজের কাছছাড়া করতে চাইতেন না সলমন। সেই কারণেই ছবির চিত্রনাট্য বদলে দিতে চেয়েছিলেন অভিনেতা।
আসলে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী অন্তিম দৃশ্যে সলমনের চরিত্রকে ছেড়ে ঐশ্বর্যার চরিত্রটি শেষ পর্যন্ত তার স্বামী অজয় দেবগনের চরিত্রের কাছে চলে যায়। বাস্তবে না হলেও এই বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছিলেন না সলমন।
সঞ্জয়কে চিত্রনাট্য বদলের জন্য রাজি করাতে সুরজকে অনুরোধ করেন সলমন। যে কোনও মূল্যে ঐশ্বর্যার চরিত্রের সঙ্গে নিজের চরিত্রের মিলন চাইছিলেন সলমন।
সলমনের কথামতো সঞ্জয়ের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা কথা বলেন সুরজ। চিত্রনাট্য বদলানোর জন্য অনুরোধও করেন সঞ্জয়কে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সঞ্জয় নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ছবির শুটিং শেষ করেন।
‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির শেষ দৃশ্যে দেখা যায় সলমনের চোখে জল। বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, ঐশ্বর্যাকে ক্যামেরার এ পারে তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে দেখে সত্যিই কেঁদে ফেলেন সলমন। তবে ১৯৯৯ সালে ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিসে হিট করলে সকলেই খুশি হন।