আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে কৌতুকাভিনেতা হিসাবে বলিপাড়ায় গোবিন্দের রমরমা ছিল। অভিনয়ের পাশাপাশি নাচেও সমান পারদর্শী তিনি। কিন্তু এত গুণ, এত জনপ্রিয়তার পরেও বড় পর্দা থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেতা। এর নেপথ্যে কী কারণ?
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, গোবিন্দ নাকি তাঁর কাজ নিয়ে খুব একটা মনোযোগী ছিলেন না। সময় নিয়ে কোনও বোধ ছিল না তাঁর। নিজের সময় মতো সেটে যেতেন, কখনও বা যেতেনই না। গোবিন্দের নামের পাশে ‘অপেশাদার’ শব্দটি যুক্ত হয়ে যাচ্ছিল।
গোবিন্দের দাবি, তিনি একসঙ্গে একাধিক ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তাই নির্দিষ্ট সময়ে সেটে পৌঁছতে পারতেন না। তবে কোনও কালেই তিনি নাকি অপেশাদার ছিলেন না। তা হলে অভিনয়জগৎ থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়ার কারণ কী?
আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে একের পর এক হিট হিন্দি ছবি দর্শককে উপহার দিতে শুরু করেন গোবিন্দ। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে অভিনেতার কেরিয়ারের রেখচিত্র নিম্নগামী হতে শুরু করে।
২০০০ সালের পর প্রতি বছরই গোবিন্দের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। তাঁর ছবিও বক্স অফিসে খুব একটা ভাল ব্যবসা করছিল না। ২০০৩ সালে ‘রাজা ভাইয়া’ নামে গোবিন্দের একটি ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এই ছবিতে গোবিন্দের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় আরতি ছাবরিয়াকে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘রাজা ভাইয়া’ ছবিটি তৈরি করতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু ছবি মুক্তির পর তা লাভের মুখ তো দেখতেই পায়নি, বরং ব্যবসায় বেশ ক্ষতি হয়ে যায়।
‘রাজা ভাইয়া’ ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিস থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার ব্যবসা করে। গোবিন্দের কেরিয়ারে এটি ফ্লপ ছবি হিসাবে নাম লিখিয়ে ফেলে।
২০০৪ সালে কংগ্রেস দলে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন গোবিন্দ। ‘খুল্লম খুল্লা প্যার করে’, ‘সুখ’ এবং ‘স্যান্ডউইচ’ ছবির শুটিং অবশ্য তার আগেই শেষ করে ফেলেছিলেন তিনি।
২০০৩ সালে ‘রাজা ভাইয়া’ ফ্লপ হওয়ার পর অভিনয়জগৎ থেকে তিন বছরের বিরতি নেন গোবিন্দ। ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত একটিও ছবির শুটিং করেননি তিনি।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, একনিষ্ঠ ভাবে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করতে অভিনয় থেকে কয়েক বছরের জন্য ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিলেন গোবিন্দ।
বলিপাড়ার অধিকাংশ মনে করেন, একের পর এক ছবি বক্স অফিসে ফ্লপ হচ্ছিল গোবিন্দের। কেরিয়ারের হঠাৎ এই অধঃপতন মেনে নিতে পারেননি অভিনেতা। তাই দীর্ঘ তিন বছরের সাময়িক বিরতি নেন তিনি।
২০০৬ সালে ‘ভাগম ভাগ’ ছবির হাত ধরে আবার বলিপাড়ায় ফিরে যান গোবিন্দ। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারের সূর্য আর উদিত হয়নি। একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও গোবিন্দ তাঁর পুরনো সাফল্য ফিরে পাননি।
২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রঙ্গিলা রাজা’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় গোবিন্দকে। এই ছবিতে দ্বৈতচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার পর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে।
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ছেড়ে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা দলের সঙ্গে যুক্ত হন গোবিন্দ। বর্তমানে অভিনয় না করলেও নাচের বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ে বিচারকের আসনে দেখা যায় গোবিন্দকে।