দেখে মনে হবে যেন নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে ‘টাইটানিক’! জাহাজ নয়। লঞ্চ। বিলাসবহুল ভাবে সফরের যাবতীয় বন্দোবস্ত রয়েছে এই লঞ্চে। বরিশাল-ঢাকা নৌপথে এ বার চোখ ধাঁধাবে নতুন লঞ্চ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, ও পার বাংলার সবচেয়ে বেশি যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ও আকারে বড় এই নতুন লঞ্চ। যার নাম ‘সুন্দরবন ১৬’।
সম্প্রতি এই লঞ্চটির উদ্বোধন করা হয়েছে। লঞ্চটিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি, সাজসজ্জাতেও নতুনত্ব আনা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, লঞ্চটি চার তলা। তার দৈর্ঘ্য ৩৬০ ফুট, প্রস্থ ৬০ ফুট। রয়েছে লোয়ার ডেক, আপার ডেক ও ২৫০ প্রথম শ্রেণির কেবিন।
ওই লঞ্চটিতে একসঙ্গে মোট ১৩৫০ জন যাত্রী চড়তে পারবেন। লঞ্চে থাকছে ৬টি ভিআইপি ও দশটি সেমি ভিআইপি কক্ষ। থাকছে শৌচাগারও।
বরিশাল-ঢাকা নৌপথে ওই লঞ্চে করে সফরে যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে একাধিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। লঞ্চে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। থাকছে বাহারি আলো।
নৌপথে সফরের সময় যাত্রীদের খিদে পেলে মুশকিল আসান হিসাবে রাখা রয়েছে ফুড কোর্ট। যেখানে নানা ধরনের খাবার পাওয়া যাবে।
লঞ্চে যাত্রী নিরাপত্তার দিকেও বাড়তি নজর রাখা হয়েছে। লঞ্চের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
এ ছাড়াও লঞ্চে থাকছে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। লঞ্চে সফরের সময় ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য থাকছে ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থাও।
কোনও যাত্রী অসুস্থ হলে বা আপৎকালীন পরিস্থিতি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে লঞ্চে রয়েছে ‘ফার্মেসি’।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য লঞ্চে রয়েছে করোনারি কেয়ার ইউনিট। লঞ্চের এক তলা থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য থাকছে বিশেষ ধরনের লিফট।
লঞ্চে শিশুদের জন্যও সাজানো রয়েছে বিনোদনের সম্ভার। তাদের জন্য বিনোদনের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লঞ্চটি তৈরি করেছে সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানি। তারা দাবি করেছে, ‘সুন্দরবন ১৬’-ই এখনও পর্যন্ত সে দেশের সবচেয়ে বড় লঞ্চ।
কিছু দিন আগেই বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমেছে। যার জেরে লঞ্চ পরিষেবায় লোকসান হয়েছে বলে দাবি। পাশাপাশি জ্বালানির দাম বাড়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
সে কারণেই এই লঞ্চের উদ্বোধনের দিন ক্ষণ পিছিয়ে গিয়েছিল। তবে সুন্দরবন নেভিগেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান মনে করছেন, যাত্রী ধরে রাখতে লঞ্চে আধুনিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ফলে লঞ্চটি লাভজনক হবে বলেই তাঁর আশা।