স্বামী হলিউডের নামজাদা তারকা জনি ডেপ। তাঁর বিরুদ্ধে সাহস করে গার্হস্থ্য হিংসা এবং মানহানির মামলা করেছিলেন অভিনেত্রী-স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ড। কিন্তু সেই মামলায় জনি জিতে যেতেই এখন প্রশ্ন উঠেছে হলিউডে অ্যাম্বারের কেরিয়ারটা থাকবে তো!
জনি তাঁকে মারধর করতেন, বিকৃত যৌন অত্যাচার করতেন, এমনকি, ধর্ষণ করতেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন অ্যাম্বার। কিন্তু আদালতে জনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, অ্যাম্বার তাঁর জনপ্রিয়তা এবং বহুদিনের অর্জিত সম্মান নষ্ট করতেই ওই অভিযোগ করেছেন। ফলে এখন দোষী অ্যাম্বারই। তাঁর মাথায় চেপেছে জনির মানহানির কলঙ্ক। এর জন্য ক্ষতিপূরণও দিতে হবে তাঁকে। যার অঙ্ক শুনে অ্যাম্বারের বন্ধুরা বলেছেন খুব শিগগিরই অভিনেত্রী নিজেকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।
১ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার ভারতীয় মুদ্রার হিসেবে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা খেসারত দিতে হবে অ্যাম্বারকে। অ্যাম্বার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, অত টাকা আছে নাকি অভিনেত্রীর! যা সম্পত্তি আছে সব বিক্রি করেও ওই টাকা আসবে না।
অভিনেত্রীর পক্ষে নন, বিপক্ষেও নন যাঁরা, তাঁরা আরও একটি সোজাসাপটা তথ্য হাজির করেছেন। তাঁরা বলেছেন ক্ষতিপূরণের টাকা যে অ্যাম্বার বেশি কাজ করে মিটিয়ে দেবেন, তারও উপায় সম্ভবত নেই। কেন না অ্যাম্বারের হলিউডের ফেরার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
হলিউডের ‘টপ বস’-এরা নাকি ইতিমধ্যেই অ্যাম্বার সম্পর্কে অনীহার কথা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে ফেলেছেন। আর যাঁরা ছোটখাটো ছবি বানান, তাঁরাও ভয় পাচ্ছেন, অ্যাম্বারের উপর টাকা ঢাললে সে টাকা জলে যাবে না তো!
অ্যম্বার সমর্থকেরা যদিও প্রশ্ন তুলেছেন, অভিনেত্রী কি সবতেই হারবেন? স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে মিথ্যেবাদী প্রমাণিত হওয়াই কি যথেষ্ট অপমানের ছিল না তাঁর কাছে? এ বার কি তাঁকে সর্বস্বান্ত করেও ছাড়বেন জনি? কাজ না থাকলে তারকা স্বামীকে কী ভাবে ওই বিপুল ক্ষতিপূরণের অর্থ দেবেন অ্যাম্বার?
হলিউড বিশেষজ্ঞরা আপাতত কোনও আশার বাণী শোনাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, অ্যাম্বারের উপর চটেছেন তাঁর অনেক পুরনো সমর্থক। কেন না, জনি আদালতে প্রমাণ-সহ বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি নন, বরং অ্যাম্বারই তাঁকে হেনস্তা করেছেন।
জনির আইনজীবী প্রমাণ করে ছেড়েছেন, ১৫ মাসের দাম্পত্যে স্ত্রী অ্যাম্বার তাঁকে দীর্ঘদিন এক বিছানায় শুতে দেননি। তাঁকে বৃদ্ধ বলে অপমান করেছেন। এমনকি জনি যাতে বিছানায় আসতে না পারেন সে জন্য বিছানায় নোংরাও ফেলে রেখেছেন তিনি।
জনির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনা অ্যাম্বারকেই জনির উপর অত্যাচার করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ফলে সমর্থকদের কাছেও শেষ মেশ খলনায়িকা হয়ে উঠেছেন অ্যাম্বারই।
হলিউড বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যাম্বারের বিরুদ্ধে এখন হলিউড জুড়ে প্রচার শুরু হয়েছে। তাঁর হাতে যে সব অভিনয়ের কাজ ছিল, তার অনেকগুলি থেকেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
‘অ্যাকোয়াম্যান ২’ নামে একটি সিনেমায় তাঁকে নেওয়া হয়েছিল। দর্শকরা ওই সিনেমা থেকে অ্যাম্বারকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে একটি অনলাইন আবেদন করেছিলেন। তাতে প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
হলিউড বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে এখনই অ্যাম্বারের সমস্যার সমাধান হওয়ার কোনও উপায় নেই। তবে তাঁদের আশা, পরিস্থিতি শান্ত হলে— যা হতে ন্যূনতম বছর দু’য়েক সময় লাগতে পারে বলে অনুমান এবং অ্যাম্বার-জনির মামলার কথা লোকে ভুলতে শুরু করলে— হয়তো অ্যাম্বার কাজ পেলেও পেতে পারেন। তবে সেদিন এখনও বহু দূরে।