কয়েক দিন আগেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল বলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী চাহত মণি পাণ্ডের। আম আদমি পার্টি (আপ)-র হাত ধরে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে পা দেন টেলিভিশনের পরিচিত মুখ চাহত।
আপে যোগ দেওয়ার পর পরই মধ্যপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে চাহতকে প্রার্থী করে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল।
সোমবার সন্ধ্যায় মধ্যপ্রদেশের ২৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে আপ। সেই তালিকাতেই রয়েছে চাহতের নাম।
চাহতের জন্ম মধ্যপ্রদেশের দমোহের চণ্ডী চোপড়া গ্রামে। সেই দমোহ থেকেই নির্বাচনী লড়াই শুরু করতে চলেছেন তিনি।
কয়েক দিন আগেই চণ্ডী চোপড়া গ্রামে একটি সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিয়ে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি।
চাহত বলেছিলেন, ‘‘বিগত কয়েক বছর ধরে দমোহের মানুষ বিজেপি এবং কংগ্রেসকে অনেক সুযোগ দিয়েছে। তবে দুই দলই সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করেনি।’’
দমোহের ঘরের মেয়ে চাহত মুম্বই গিয়ে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নপূরণ করেছেন। তবে এ বার জন্মভূমি থেকে রাজনীতির ইনিংস শুরু করতে চান বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর পরেই প্রার্থী হিসাবে চাহতের নাম ঘোষণা করেছে আপ।
নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই রাজনৈতিক দলগুলি ধীরে ধীরে নিজেদের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করতে শুরু করেছে। সেই আবহেই দমোহ থেকে অভিনেত্রী চাহতকে প্রার্থী করল আপ।
ছোটবেলায় দমোহের চণ্ডী চোপড়া গ্রাম থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন চাহত। তাঁর বাবা শৈশবেই মারা যান।
প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর জবলপুরের একটি স্কুল থেকে দশম শ্রেণির পড়া শেষ করেন চাহত। এক পর ভর্তি হন দমোহের একটি স্কুলে। সেখান থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর অভিনয় শেখার জন্য ইনদওরের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন চাহত।
ইনদওরের প্রশিক্ষণ শেষে চাহত মুম্বই চলে যান। অভিনয়ের জগতে পা দেন ২০১৬ সালে। ‘পবিত্র বন্ধন’ নামের একটি সিরিয়াল দিয়ে চাহতের অভিনয় যাত্রা শুরু হয়।
এর পর ‘তেনালি রামা’, ‘রাধা কৃষ্ণ’ এবং ‘লাল ইশক’-এর মতো টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেন চাহত।
সাফল্যের পাশাপাশি চাহতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিতর্কও। এমনকি হাজতবাসও করতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে চাহত এবং তাঁর মা ভাবনা পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামার বাড়িতে ঢুকে মামা এবং নাবালক দুই মামাতো ভাইকে মারধরের অভিযোগ ওঠে চাহতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠে মামার বাড়িতে ভাঙচুর চালানোরও। এর পরই মামার অভিযোগে চাহত এবং তাঁর মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০১৯ সালে ‘হামারি বহু সিল্ক’ ধারাবাহিকে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন চাহত। ২০২০ সালে চাহত এবং অন্য অভিনেতারা সেই ধারাবাহিকের নির্মাতাদের বিরুদ্ধে পারিশ্রমিক না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। টাকার অভাবে তিনি বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না বলেও দাবি করেন অভিনেত্রী।
এ-ও গুজব ওঠে যে, টাকার অভাবে চাহত আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে পরে সেই গুজব উড়িয়ে দেন অভিনেত্রী। অবশেষে ২০২১ সালে চাহতের বকেয়া পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেওয়া হয় বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ‘মেরে সাই— শ্রদ্ধা অর সবুরি’র একটি পর্বের শুটিংয়ের সময় চোট লাগে চাহতের। সেই সময় তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল।