হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন পাকা করে ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তার পরেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি। নাম কশ্যপ পটেল। আমেরিকায় যিনি পরিচিত ক্যাশ নামে।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ-র প্রধান পদে এই কশ্যপকেই বসাতে চাইছেন ট্রাম্প।
আর তার পর থেকেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে কশ্যপকে নিয়ে। কে তিনি? এই প্রশ্ন তুলে কৌতূহল প্রকাশ করেছেন বহু ভারতীয়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কশ্যপ গুজরাতি বংশোদ্ভূত। তবে তাঁর বাবা বাবা-মা বড় হয়েছেন পূর্ব আফ্রিকায়।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য আটলান্টিক’-এর মতে, সত্তরের দশকে ইদি আমিন শাসিত উগান্ডা থেকে পালিয়ে যান কশ্যপের বাবা। চলে আসেন আমেরিকায়। কশ্যপের জন্ম আমেরিকাতেই।
১৯৮০ সালে নিউইয়র্কের গার্ডেন সিটিতে জন্ম কশ্যপের। সেখানেই বেড়ে ওঠেন। কশ্যপের গভীর শ্রদ্ধা ছিল ইহুদি ধর্মতত্ত্ববিদ আব্রাহাম জোশুয়া হেশেলের প্রতি।
আমেরিকায় প্রতিরক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য নিউইয়র্কে আসার আগে রিচমন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্নাতক হন কশ্যপ। ব্রিটেনের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর ‘ফ্যাকাল্টি অফ ল’ থেকে আন্তর্জাতিক আইনেরও ডিগ্রি রয়েছে কশ্যপের।
আইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন কাশ্যপ। খুন, মাদক পাচার এবং আর্থিক অপরাধ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি জটিল মামলা লড়েন।
৪৪ বছর বয়সি কশ্যপ প্রতিরক্ষা সচিব ক্রিস্টোফার মিলারের প্রাক্তন ‘চিফ অফ স্টাফ’ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার আগে প্রেসিডেন্টের উপ-সহকারী এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে সন্ত্রাস দমনের সিনিয়র ডিরেক্টর হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন কশ্যপ।
আল-বাগদাদি এবং কাসেম আল-রিমির মতো আইসিস এবং আল-কায়েদার নেতৃত্ব নির্মূল করা-সহ প্রথম ট্রাম্প সরকারের একাধিক পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার নেপথ্যে অন্যতম মাথা তিনি ছিলেন বলে মনে করা হয়।
প্রথম ট্রাম্প জমানায় আমেরিকার অনেক পণবন্দিকে মুক্ত করতেও কশ্যপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বলে শোনা যায়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং ইন্টেলিজেন্স সংক্রান্ত হাউসের স্থায়ী নির্বাচন কমিটির সিনিয়র কাউন্সিল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন কশ্যপ। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রভাবিত করার জন্য রাশিয়ার নাক গলানোর যে অভিযোগ উঠেছিল, তা নিয়ে তদন্তের নেতৃত্বও দেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য আটলান্টিক’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এক জন আইনজীবী হিসাবে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনে যোগদান করেন কশ্যপ। দ্রুত পদোন্নতিও হয়।
গত বছর তরুণ রিপাবলিকানদের এক অনুষ্ঠানে কশ্যপের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘তৈরি হও, কাশ। প্রস্তুত হও।’’
প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয়েছে, কশ্যপ এমন এক জন মানুষ, যিনি ‘ট্রাম্পের জন্য সব কিছু করতে রাজি।’ সেই ট্রাম্প, যিনি দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চলেছেন।
শোনা গিয়েছিল, প্রথম ট্রাম্প সরকারের শেষের দিকে সিআইএ-র ডেপুটি ডিরেক্টর হিসাবে কশ্যপের নাম নাকি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন ট্রাম্প। তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। এখন ট্রাম্প সেই কশ্যপকেই সিআইএ-র মাথায় বসাতে চাইছেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।