আবারও গুজরাত বিধানসভা দখলে রাখল বিজেপি। এ নিয়ে সপ্তম বার। যদিও পঞ্চদশ বিধানসভায় বিপুল রদবদল হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি, বর্ণ, ধর্ম এবং পেশার প্রার্থী এ বার নির্বাচিত হয়েছেন। কারও বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। কোনও বিধায়ক আবার কোটি কোটি টাকার মালিক।
পঞ্চদশ বিধানসভায় ১৮২ জন বিধায়কের মধ্যে ১০৫ জনই প্রথম বার নির্বাচিত হয়েছেন। ৭৭ জন গত বারেও বিধায়ক ছিলেন। এক জন মুসলিম প্রার্থীও এ বার জয়ী হয়েছেন।
গুজরাতের পঞ্চদশ বিধানসভায় এ বার নির্বাচিত হয়েছেন ১৪ জন মহিলা। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন বিজেপির। এক জন কংগ্রেসের। পূর্ববর্তী বিধানসভায় মহিলা বিধায়কের সংখ্যা ছিল ১৭।
বিজয়ী মহিলা প্রার্থীদের অন্যতম ক্রিকেটার রবীন্দ্র জাডেজার স্ত্রী রিবাবা। জামনগর উত্তর আসন থেকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন সদ্য নির্বাচিত এই বিধায়ক। এখন নিজের ব্যবসা সামলান।
এ বার গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন রিবাবা ছাড়াও আরও দুই মহিলা উদ্যোগপতি। তাঁরা হলেন রীতা পটেল এবং মালতী মহেশ্বরী।
গান্ধীনগর উত্তর আসন থেকে জয়ী হয়েছেন রীতা। রাজ্যের রাজধানীর নতুন বিধায়ক তিনি। নির্মাণ ব্যবসা রয়েছে রীতার। এর আগে ছিলেন গান্ধীনগর পুরসভার মেয়র।
গান্ধীধাম থেকে জয়ী হয়েছেন মালতী মহেশ্বরী। লজিস্টিকসের ব্যবসা রয়েছে তাঁর।
পঞ্চদশ গুজরাত বিধানসভায় রয়েছেন তিন চিকিৎসকও। তাঁদের মধ্যে দু’জনই মহিলা। রাজকোট পশ্চিম আসন থেকে জয়ী হয়েছেন দর্শিতা শাহ। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই আসন থেকে জিতেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি।
বাকি দুই চিকিৎসক বিধায়ক হলেন দর্শন দেশমুখ এবং পায়েল কুকরানি। নান্দোর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন দর্শন।
নারোদা থেকে জয়ী হয়েছেন পায়েল কুকরানি। পায়েলের বাবা নারোদা পাতিয়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে ছিলেন। ২০০২ গুজরাত দাঙ্গার সময় নারোদা পাতিয়ায় হিংসার বলি হয়েছিলেন ৯৭ জন মুসলিম। সেই ঘটনায় দোষীর মেয়ে পায়েলকে প্রার্থী করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
আমদাবাদের আসারওয়া কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দর্শনা বাঘেলা। তিনি এর আগে পর্যন্ত বাড়িতে থেকে কাজকর্ম সামলাতেন।
ভাবনগর পূর্ব থেকে জয়ী হয়েছেন সেজল পাণ্ড্য। তিনি কোচিং সেন্টারে পড়াতেন।
বিজেপির ১৩ জন মহিলা বিধায়কের মধ্যে ৫ জন গত বারেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। কংগ্রেসের টিকিটে এক জন মহিলা প্রার্থীই জিতেছেন। তাঁর নাম জেনিবেন ঠাকোর। ভাভের বিধায়ক ছিলেন। সেই আসন থেকেই আবার জিতেছেন।
এক জন সংখ্যালঘু প্রার্থী এ বার ভোটে জিতেছেন। তিনি ইমরান খেড়াওয়ালা। কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন। পুরনো আসনেই আবার ১৩ হাজার ৬০০ ভোটে জিতেছেন তিনি।
বিধানসভায় এ বার নির্বাচিত হয়েছেন দু’জন ধনী প্রার্থীও। এক জন জেএস পটেল। মানসা থেকে জিতে এসেছেন বিজেপির টিকিটে। হলফনামায় জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৬৬১ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় ধনী বিধায়ক হলেন বলবন্ত সিংহ রাজপুত। সিধপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছেন। আগে ছিলেন কংগ্রেসে। বলবন্তের সম্পত্তির পরিমাণ ৩৭২ কোটি টাকা।
পঞ্চদশ বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন হার্দিক পটেল। কংগ্রেস ছেড়ে ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এই পটিদার নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে ২২টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। আর কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এতগুলি অপরাধের মামলা নেই।
উমরেহ কেন্দ্রের গোবিন্দ পারমার পঞ্চদশ বিধানসভার প্রবীণতম বিধায়ক। তাঁর বয়স ৭৯ বছর। বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি।
২০২২ সালের নির্বাচনে লড়েছেন ১২৬ জন প্রাক্তন বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ৭৭ জন জয়ী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৪ শতাংশই বিজেপির। ১২ শতাংশ কংগ্রেসের। ছবিতে সাবরমতী আসনে জয়ী প্রার্থী হর্ষদ পটেল।
কংগ্রেস টিকিট দেয়নি বলে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়েছিলেন বিধায়ক ধবলসিংহ জালা। বায়াড় আসন থেকে লড়ে জিতেছেন তিনি। এনসিপি সমর্থন দেয়নি বলে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে লড়েছিলেন কান্ধাল জাডেজা। কুটিয়ানা আসনে জিতেছেন তিনি। ছবি: পিটিআই, রয়টার্স, সমাজমাধ্যম।