প্রতীকী ছবি।
অবসর জীবন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বহু বিনিয়োগকারী পিপিএফ বা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে টাকা জমান। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড হল একটি অবসরকালীন প্রকল্প। ১৯৬৮ সালে প্রত্যেক ব্যক্তির নিরাপদ অবসরকালীন জীবনের লক্ষ্যে ভারত সরকার এই প্রকল্পের সূচনা করে। কোনও বিনিয়োগকারীকে প্রত্যেক আর্থিক বছরে এই অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫০০ টাকা জমা করতে হয়। এর সর্বোচ্চ পরিমাণ দেড় লক্ষ টাকা। অবসরকালীন সঞ্চয় প্রদানের পাশাপাশি এই অ্যাকাউন্টে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, তার উপর আয়করের সুবিধা দাবি করা যেতে পারে।
তবে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা কি শুধুই প্রাপ্তবয়স্ক চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ীদের জন্যই প্রয়োজ্য? একেবারেই নয়। কোনও বিনিয়োগকারী তার নিজের নামে একটি পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়াও, তাঁর নাবালক সন্তানের নামে আরেকটি পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। বলা যেতে পারে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ঠিকমতো পরিকল্পনা করলে সঠিক সময়ে বেশ ভাল রিটার্ন দিতে পারে এই প্রকল্প।
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধাগুলি হল:
১। রিটার্ন ঝুঁকিমুক্ত।
২। চক্রবৃদ্ধি সুদের হার।
৩। আয়কর আইন, ১৯৬১ এর ৮০সি-এর অধীনে আয়কর ছাড়।
৪। ১৫ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ।
৫। পিপিএফ ব্যালেন্সের উপর ভিত্তি করে ঋণ এবং অগ্রিম অর্থ তোলার সুযোগ।
৬। বিনিয়োগের ন্যূনতম পরিমাণ কম, মাত্র ৫০০ টাকা।
৭। সপ্তম আর্থিক বছর থেকে আংশিক প্রত্যাহারের সুবিধা রয়েছে।
এক জন নাবালকের পিপিএফ অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা করা যায়?
এক জন নাবালকের জন্য খোলা পিপিএফ অ্যাকাউন্টের জন্যও ন্যূনতম টাকার পরিমাণ ৫০০ এবং সর্বোচ্চ পরিমাণ পাঁচ লক্ষ টাকা।
ঋণ অথবা টাকা তোলার প্রয়োজন হলে—
অপ্রাপ্তবয়স্কদের পিপিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে ঋণ অথবা আংশিক টাকা তোলার সুযোগ সুবিধাও রয়েছে। তবে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার হলে নাবালকের অভিভাবকদের এই বক্তব্য স্পষ্ট করতে হবে, যে, টাকাটি তোলা হচ্ছে সেই নাবালকের জন্যই।
নাবালকের ১৮ বছর সম্পূর্ণ হলে —
সন্তানের বয়স ১৮ হলে তার অ্যাকাউন্টটি একটি সাধারণ পিপিএফ অ্যাকাউন্টে রূপান্তরিত করার আবেদন জানানো প্রয়োজন। প্রাপ্তবয়স্ক হলে সংশ্লিষ্ট নাবালক নিজেই সেই অ্যাকাউন্টটি দেখাশোনা করতে পারবে।
পিপিএফ এর জন্য আবেদন করতে গেলে কী কী করণীয়—
১। প্রথমে নিকটবর্তী ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিসে যেতে হবে।
২। সেখানে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একটি ফর্ম নিতে হবে।
৩। আবেদনপত্রে জানতে চাওয়া তথ্যাদি মনোযোগ সহকারে পড়ে, সেটি পূরণ করতে হবে।
৪। আবেদনপত্রে কিছু নথি চাওয়া হবে।
৫। আবেদনপত্রের সঙ্গে সেই নির্দিষ্ট নথিগুলি সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিস কর্মচারীকে দিতে হবে।
৬। এর পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আবেদন পত্রটি যাচাই করবেন।
৭। সঠিক ভাবে তথ্যাদি যাচাই করার পরেই অ্যাকাউন্ট খোলা হবে।
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে যে সমস্ত নথি প্রয়োজন—
১। বাবা মায়ের কেওয়াইসি অবশ্যই লাগবে।
২। তা ছাড়া, সন্তানের পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে লাগবে, সন্তানের ছবি, বয়সের প্রমাণ পত্র, আধার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র।
তা হলে আর অসুবিধা নেই সন্তানের জন্য পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে। তবে এই বিষয়ে বিশদ তথ্যাদির ব্যাপারে জানতে অবশ্যই ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।