প্রতীকী ছবি।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে গিয়ে আজকাল অনেকেই ইনডেক্স ফান্ডে টাকা ঢালার কথা বলছেন। যুক্তি সোজা। শেয়ার বাজারের সূচক বা ইনডেক্স যে যে শেয়ার যে অনুপাতে আছে, কোনও ফান্ড যদি সেই সেই অনুপাতে সেই সেই শেয়ারে বিনিয়োগ করে তাহলে সেই ফান্ডও সূচককে অনুসরণ করে বাড়বে বা কমবে।
মানে ধরা যাক, সূচক তৈরি করা হয়েছে ছ’টি শেয়ারের দাম দিয়ে। কিন্তু সেই ছ’টি শেয়ারের দাম যোগ করে ছয় দিয়ে ভাগ করেই তো সূচক তৈরি হয় না! এই প্রতিটি শেয়ারের বাজারকে প্রভাবিত করার ক্ষমতাকে শতাংশে ধরে তারপর সূচক তৈরি হয়। কিন্তু আমরা এই জটিলতায় না হেঁটে, বুঝে নিই যে সূচকে যে যে শেয়ার ধরা হয়, তার অনুপাতেই সেই সেই শেয়ারে বিনিয়োগ করলে মোটামুটি ভাবে সেই ফান্ডের ওঠা নামাও সূচককেই অনুসরণ করবে। প্রশ্ন উঠতেই পারে, মোটামুটি কেন? মোটামুটি এই কারণে যে সব ফান্ড পরিচালকই যে আনুপাতিক হিসাবটা ঠিক মতো করে বিনিয়োগ পরিচালনা করতে পারেন, তা নয়। কেউ প্রায় ঠিক করেন, কেউ বা একটু কম। আর তাই সব ইনডেক্স ফান্ডের ওঠাপড়াও একদম যে সূচক মেনে হয় তা-ও নয়। তাই এই ফান্ডগুলোর মধ্যে রিটার্নের ফারাক হয়।
কিন্তু সূচক তো একটা নয়, বহু। আমরা সাধারণ ভাবে জানি সেনসেক্স আর নিফটি-র কথা। সেনসেক্স তৈরি হয়ছে ৩০টি আর নিফটি তৈরি হয়েছে ৫০টি শেয়ারের দাম দিয়ে। যেহেতু এই দু’টি সূচকের কথাই সর্বক্ষণ শোনা যায়, তাই সাধারণ মানুষ ছুটছে এই দু’টি সূচকভিত্তিক ফান্ডের পিছনেই। কিন্তু সূচকের সংখ্যা বহু। এই সূচক দু’টি শেয়ার বাজারের ওঠানামার একটা সার্বিক ধারণা দেয়। এ বার যদি মনে হয়, ব্যাঙ্কের শেয়ার কেমন করছে একটু দেখা যাক, তাহলে কিন্তু আমাকে ব্যাঙ্কের শেয়ার নিয়ে তৈরি সূচকের দিকে চোখ ফেরাতে হবে।
অর্থাৎ, গোটা শেয়ার বাজারের যেমন সূচক আছে, তেমনই কিন্তু শিল্পভিত্তিক সূচকও আছে। আর সেই সব সূচক ঘিরেও আছে নানান ফান্ড। এই মুহূর্তে যে ছ’টি ফান্ডের দিকে বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট সেগুলি হল
এই জাতীয় ফান্ডে সাধারণ লগ্নিকারীর আগ্রহের মূল কারণটাই হল বিনিয়োগের পরে খুব একটা মাথা না ঘামানোর সুবিধা। অন্য সব ফান্ডে একটু সক্রিয়তার প্রয়োজন থাকে। কোন ফান্ডে কী শেয়ার আছে, তাদের বাজারের অবস্থা কী, এই সব নানান বিষয়ে চোখ রাখতে হয়। মাঝে মাঝে বিনিয়োগ তুলে এক ফান্ড থেকে অন্য ফান্ডে চালান করার প্রয়োজন থাকে। কিন্তু সূচকভিত্তিক ফান্ড খানিকটা অটো পাইলটে প্লেন চালানোর মতো। বাজারের সাত সতেরোর উপর নজর না রেখে সূচকের ওঠা পড়ার উপর নজর রাখলেই চলে যায়। তাই গোটা বিশ্বেই সূচকভিত্তিক ফান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
ভারতের লগ্নিকারীদের কাছেও তাল মিলিয়ে এই জাতীয় ফান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তবে একটা জায়গা তো নজরে রাখতেই হবে। যতটা এই বিনিয়োগকে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগের তকমা দেওয়া হোক না কেন, শিল্পভিত্তিক সূচক ফান্ডে বিনিয়োগ করলে কিন্তু সেই শিল্পের সামগ্রিক চালে নজর রাখতেই হবে নিজের বিনিয়োগকে সামলে রাখার জন্য।