প্রতীকী চিত্র
অনেকেই আছেন যাঁরা শুধু এজেন্টের কথা মেনেই বিমা কিনে ফেলেন। কয়েক বছর পরে যখন বোঝেন যে আয়ের থেকে বিমায় ব্যয় এতটাই বেশি করে ফেলেছেন যে জীবনের অন্য কিছুতে টাকা ঢালতে পারছেন না, তখন কিন্তু অনেক টাকাই প্রিমিয়ামে ঢেলে ফেলেছেন। অনেকেই আবার শুধু কর বাঁচানোর লক্ষ্যেই একগাদা প্রিমিয়াম দিয়ে থাকেন। কিছুদিন বাদে গিয়ে বোঝেন যে তা লাভের বদলে ক্ষতির খাতায় গিয়েছে।
তার মানে এই নয় যে বিমা করবেন না। বিমা তো করতেই হবে। কিন্তু কতটা করবেন তা ভেবে তবেই বিমা কেনার পথে পা ফেলবেন।
আয়ের ৮%-এর বেশি প্রিমিয়ামের পথে হাঁটবেন না
বিমা কিন্তু সঞ্চয় নয়। আপনি বিমা কিনবেন। আপনাকে কিনতেই হবে। আর তা আপনি কিনবেন আপনার কিছু হয়ে গেলে আপনার উপর নির্ভরশীল যাঁরা তাঁদের যাতে অসুবিধা না হয় তা দেখতেই। কিন্তু আয়ের একটা বড় অংশই যদি বিমার প্রিমিয়ামে চলে যায়, তাহলে আপনি সঞ্চয়ই বা কী করবেন, আর সাধ-আহ্লাদই বা মেটাবেন কী করে! তাই প্রিমিয়ামের অঙ্ক আয়ের ৮ শতাংশের মধ্যেই রাখা ভাল। আর বিমাকে সঞ্চয়ের রাস্তা না ভেবে, শুধু আপনার জীবনের ঝুঁকি মেটানোর রাস্তা হিসাবে নিয়ে টার্ম ইনসিওরেন্স কিনুন। তাতে একই প্রিমিয়ামে অনেক বেশি টাকার বিমার সুযোগ পাবেন। আর সঞ্চয়ের জন্য অন্য রাস্তা বাছুন। মাথায় রাখবেন এটা বুড়ো আঙুলের নিয়ম। তার মানে যে ৮ থেকে বেড়ে তা ৯ শতাংশ হবে না তা নয়। কিন্তু মাথায় রাখার বিষয়টা হল প্রিমিয়ামেই আয়ের একটা বড় অংশ ঢেলে না দেওয়া।
আর্থিক দায়
আয়ের ৮% প্রিমিয়ামে দেবেন। তার বেশি নয়। এই বুড়ো আঙুলের নিয়মটা নির্ধারিত হয়ে যাওয়া মানেই এটা নয় যে আপনাকে এই টাকাটাই প্রিমিয়াম বাবদ খরচ করতে হবে। এটা আপনার ঊর্ধসীমা ধরে চলুন। এবার হিসাব করুন আপনার আর্থিক দায় কতটা। আপনার অবর্তমানে যে একই খরচ বজায় থাকবে তা নয়। আর প্রয়োজনীয় সব টাকাটাই বিমা বাবদ আসতেই হবে তাও নয়। কারণ আপনার সঞ্চয় আছে। তাই হিসাব করুন বিমার পথে হেঁটে কতটা আর্থিক দায় আপনি মেটাবেন।
আর্থিক লক্ষ্য
দায়ই সব নয়। আপনার জীবনে আর্থিক লক্ষ্যও আছে। বাড়ি করা। সন্তানের লেখাপড়া। বিভিন্ন সময়ে সেই প্রয়োজন মেটাতে টাকার প্রয়োজন পড়বে। এ বাবদ ঋণ করলে আপনার অবর্তমানে তা মেটাতেও অর্থের প্রয়োজন হবে। তাই বিমা কেনার সময়ে এই প্রয়োজনের অঙ্কটাও মাথায় রাখতে হবে। আর যেহেতু বয়সের সঙ্গে বদলাতে থাকে লক্ষ্য তাই এ ক্ষেত্রেও টার্ম প্ল্যান বেছে নেওয়াই ভাল।
বয়সের সঙ্গে বদলান আয় ও দায়
বিমার অঙ্ক কিন্তু এক কালীন নয়। কম বয়সে কম আয়, কম দায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যেমন আয়ও বাড়ে, তেমন দায়ও। ঝুঁকির অঙ্কটাও বদলাতে থাকে। ২৫ বছর বয়সে আপনার সন্তানের কথা ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু ৩০ বছর বয়সে কিন্তু অনেকেই সেই প্রয়োজন বোধ করেন। আর তখন জীবনের ঝুঁকির অঙ্কটাও যায় বদলে। তাই বিমার ঝুলিও ভরতে হয়, নতুন বিমাও। তাই কম প্রিমিয়ামে বাড়তে থাকা দায়ের অঙ্ক কিন্তু টার্ম প্ল্যানের কভারেজ বাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়া যায়।