প্রতীকী ছবি।
পেন খুলে ফর্ম ভরার দিন বোধহয় বিমা-র রাজ্যে শেষ হতে চলল এ বার। যাঁরা গাড়িতে চোট লাগার জন্য বিমা সংস্থার কাছে ক্লেম দাখিল করেছেন তাঁরা জানেন কী রকম বুক দুরদুর করে, বিমা সংস্থা কতদিনে নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া শেষ করে অনুমোদন দেবে সেই চিন্তায়। ক্লেম ফর্ম জোগাড় কর রে, ঠিক ঠাক ভর রে, তার পর জমা দিয়ে বিমা সংস্থার পরীক্ষকের জন্য অপেক্ষা কর রে। তারপর তো গাড়ি ঠিক করার খরচ নিয়ে দর কষাকষি লেগেই থাকে। এবার এই সমস্ত অবসানের রাস্তায় হাঁটতে চলেছে বিমা সংস্থাগুলি। মোবাইলেই চটজলদি ক্লেম দাখিল করা থেকে, ভিডিও পাঠিয়ে প্রাথমিক নিরীক্ষণের সহজ রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছে সংস্থাগুলি।
মোবাইলে ক্লেম জমা দেওয়ার জন্য মোবাইলেই মিলতে শুরু করেছে বিশেষ ব্যবস্থা। গাড়িতে চোট লাগার পরে আপনাকে একটা নম্বরে ফোন করতে হবে। সেই ফোনেই আপনাকে ডিজিটাল প্রদ্ধতিতে কী ভাবে আপনি ক্লেম রেজিস্টার করবেন সে ব্যাপারে সাহায্য করতে থাকবে এই ‘ভয়েস বট’।
মজার ব্যাপার হল এই সুবিধা পেতে আপনার যে স্মার্ট ফোনই লাগবে তা নয়। সাধারণ ফিচার ফোনেও এই সুবিধা মিলবে। এখনও অত্যন্ত প্রাথমিক অবস্থায় থাকা এই ব্যবস্থায় আপনি ক্লেম নাম্বারটি চট করে পেয়ে যাবেন এসএমএসে।
পরবর্তীতে এমন ব্যবস্থা আসছে যাতে আপনি মোবাইল থেকেই সব ফর্ম ভরে ফেলতে পারবেন। টাইপ করতে গেলে ভুল হতে পারে। তাই তারই সঙ্গে আপনার সঙ্গে কথা বলেও আপনার ক্লেম রেজিস্ট্রেসন হয়ে যাবে। আর এই কাজটি করতে উল্টোদিকে কিন্তু থাকছে যার পোষাকি নাম ‘ভয়েস বট’ বা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত একটি ব্যবস্থা যেটি কাজ করবে সেই ভাবে যে ভাবে অ্যালেক্সা বা সিরি আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে থাকে।
এই ব্যবস্থা আপাতত শুধু ইংরেজিতেই শুরু হয়েছে। আগামী দিনে স্থানীয় ভাষাতেও এই সুবিধা মিলবে। আপাতত এই ব্যবস্থা আইসিআইসিআই লম্বার্ডের মতো সংস্থা চালু করেছে। বাকিরাও প্রস্তুত হচ্ছে একই ব্যবস্থা আনতে।
ফিউচার জেনারেলির মতো সংস্থা এক পা এগিয়ে অবশ্য ৫০ হাজার টাকার মতো ক্লেম ভিডিয়ো দেখেই অনুমোদন করে দিচ্ছে। আপনার গাড়িতে চোট লাগার পর, সংস্থার ক্রেতা পরিষেবা নাম্বারে ফোন করে জানাতে হবে। সংস্থা আপনাকে একটা লিঙ্ক পাঠাবে। আপনি সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনি ভিডিও তুলতে পারবেন যা সরাসরি সংস্থার কাছে চলে যাবে। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করবেন সংস্থারই কোনও ক্রেতা সহায়ক। আর তার পরপরই অনুমোদিত বিমার টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। তবে এর ঊর্ধসীমা আপাতত ৫০ হাজার টাকা।
এই দুই ব্যবস্থার সংমিশ্রণই কিন্তু আগামী দিনে সাধারণ বিমার সহজে ক্লেম মেটানোর অন্যতম রাস্তা হতে চলেছে।