চিকুরে আলোর রোশনাই

চুলের গোড়া পরিষ্কার থাকলে তবেই চুল বাড়বে তাড়াতাড়ি, বাড়বে ঔজ্জ্বল্য। তার জন্য প্রয়োজন স্ক্যাল্প ডিটক্স। করবেন কী ভাবে? রইল হদিশচুলের গোড়া পরিষ্কার থাকলে তবেই চুল বাড়বে তাড়াতাড়ি, বাড়বে ঔজ্জ্বল্য। তার জন্য প্রয়োজন স্ক্যাল্প ডিটক্স। করবেন কী ভাবে? রইল হদিশ

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

ভাল গাছের জন্য যেমন তার গোড়ার মাটিটা ভাল হওয়া দরকার, তেমনই ভাল চুলের জন্য গোড়া থেকেই যত্ন নেওয়া জরুরি। আপনার স্ক্যাল্প যদি সুস্থ ও পরিষ্কার থাকে, তবেই আপনার চুলও উজ্জ্বল হবে। চুল পড়ার আশঙ্কাও কমবে। কিন্তু স্ক্যাল্প ভাল রাখার জন্য কিছু শর্ত মেনে চলা জরুরি। স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যরক্ষায় প্রয়োজন স্ক্যাল্প ডিটক্স। নিয়মিত স্ক্যাল্প ডিটক্স করলে চুলের গোড়া মজবুত হবে। চুল পড়া কমবে ও মসৃণ দেখাবে।

Advertisement

স্ক্যাল্প ডিটক্স কী?

Advertisement

রোজ রাস্তায় বেরোতে হলে চুলের গোড়ায় ধুলোবালি ও টক্সিন জমতে থাকে। স্ক্যাল্প ডিটক্স খুব গভীরে গিয়ে মাথার ত্বক পরিষ্কার করে। স্ক্যাল্পের তৈলাক্ত ভাব ও পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখে। যদি রোজ আপনাকে রাস্তায় বেরোতে হয়, তা হলে সপ্তাহে অন্তত এক বার স্ক্যাল্প ডিটক্স প্রয়োজন।

হেয়ার ডিটক্সের সুবিধে

শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, সেরাম— সারা বছরই নানা ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এই সব রাসায়নিক পদার্থের অবশিষ্ট জমে থাকে চুলের গোড়ায়। তা থেকে পরে চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায়। ফলে চুল পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে। হেয়ার ডিটক্স করলে এই ধরনের রাসায়নিক অবশিষ্টগুলি চুলের গোড়ায় বাসা বাঁধতে পারে না। নতুন হেয়ার সেল তৈরি হয়। স্ক্যাল্পের শুষ্ক ভাব কেটে গিয়ে স্বাভাবিক আর্দ্রতা ফিরে আসে।

কী ভাবে করবেন?

মাসাজ: প্রথমেই মাসাজ করবেন। এতে স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হবে। মাসাজের সময়ে নারকেল, অলিভ, ক্যাস্টর, আমন্ড বা আর্গান তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার চুল খুব তৈলাক্ত হলে আমন্ড বা অলিভ, শুষ্ক হলে ক্যাস্টর বা আর্গান ও স্বাভাবিক চুলে নারকেল তেল ব্যবহার করুন।

বেকিং সোডা ডিটক্স: একটি পাত্রে এক কাপ জল নিয়ে, এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে রাখুন। অন্য পাত্রে এক কাপ জলে এক টেবিল চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে রাখবেন। বেকিং সোডা দিয়ে প্রথমে চুল ধুয়ে নেবেন। তার পরে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার দিয়ে চুল ধুতে হবে।

মধু-দারচিনির কন্ডিশনার: দারচিনি চুলের গোড়ায় মাইক্রোব্‌স বা নোংরা জমতে দেয় না, বরং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বিশেষত যাদের মাথায় চুল উঠে টাক পড়ে যাচ্ছে, তারাও এই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। এক টেবিল চামচ মধু, আধ চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো ও এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। তার পরে পুরো চুলে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে ধুয়ে ফেলুন।

শুকনো চুলে ল্যাভেন্ডার, জেসমিন, পেপারমিন্ট ইত্যাদি এসেনশিয়াল অয়েল লাগাতে পারেন। এতে স্ক্যাল্প ডিটক্সের পরে চুলে সুন্দর গন্ধ বেরোবে, মেজাজও থাকবে ফুরফুরে।

ক্লে মাস্ক: চিটচিটে চুল নিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। র‌্যাসোল বা বেনটোনাইট ক্লে খুব সহজেই চুলের গোড়ায় গিয়ে তেল-ময়লা বার করে আনে। সিলিকা, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এক তৃতীয়াংশ বেনটোনাইট বা র‌্যাসোল মাটি নিয়ে তার সঙ্গে হার্বাল চা বা জল মিশিয়ে মাথায় মেখে রাখুন। প্যাক শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। আলাদা করে শ্যাম্পু করার দরকার নেই। চুল পরিষ্কার করতে এই ক্লে মাস্কই যথেষ্ট।

পরবর্তী যত্ন

• হেয়ার ডিটক্স করলেই চুল অনেক পরিষ্কার হয়ে যায়। তাই হেয়ার ডিটক্সের পরের ক’দিন শ্যাম্পু করবেন না।

• ডিটক্স করার আগেই চুল ট্রিম করে নেবেন। এমনিতেও ছ’-সাত সপ্তাহ অন্তর চুল ট্রিম করা উচিত। তা হলে চুলের ডগা ফাটবে না।

• ডিটক্সের পরে কয়েক দিন চুলে হিট দেওয়া বা রং করা থেকে বিরত থাকুন।

• কিছু ন্যাচারাল সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। বায়োটিন বা ভিটামিন বি সেভেন চুলের বৃদ্ধির জন্য খুব জরুরি। এর জন্য সবুজ আনাজপাতি খেতে পারেন।

• নারকেল তেল চুলে পুষ্টি জোগায়। তবে তার জন্য চুলে নারকেল তেল লাগানোই যথেষ্ট নয়। রোজ সকালের চায়ে বা স্মুদিতে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়াও, খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে নারকেল ব্যবহার করতে পারেন।

এক দিনে যদি পুরো ডিটক্স করার সময় না পান, এই ডিটক্স রুটিনটা দু’দিনে ভেঙে নিতে পারেন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে স্ক্যাল্প মাসাজ করে নিয়ে, পরের দিন বাকি রুটিন মেনে চলতে পারেন।

মডেল: নয়নিকা; মেকআপ: সুবীর মণ্ডল, ছবি: সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়

লোকেশন: বিবনি, কসবা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement