বছরের শুরুতেই অনেকের মন চাইছে ঘরের ইন্টিরিয়ার বদলে ফেলতে! অনেকেই নিশ্চয় নতুন করে বাড়ি সাজানোর প্ল্যানও শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু কেমন হবে দেওয়ালের রং? কেমন হবে পরদা বা কুশনের কভার? কোথায় রাখবেন শো-পিস? কোথায় থাকবে ফুলের টব? এই সব ভাবার আগে দেখে নিন সাম্প্রতিক হোম ডেকরে নতুন ট্রেন্ড কী।
দেওয়ালে মোনোক্রম
ঘর সাজানোর প্রথম মন্ত্র হল দেওয়ালের রং। ঘরের রং হবে অবশ্যই আই সুদিং। অর্থাৎ যে রং চোখকে আরাম দেবে। এক-একটা ঘরে এক-এক রকম রং... এখন বলতে গেলে এই ট্রেন্ড প্রায় অচল। এই বছরে দেওয়ালে মোনোক্রম কালার ডেকর এক্সপার্টদের প্রথম পছন্দ। একটা রঙের প্রায় ৪০-৫০টা শেডও পাওয়া যাচ্ছে অনায়াসে।
ভারী আসবাব দূর হটো
ভারী শো কেস, আলমারি? নৈব নৈব চ! ঘরে থাকবে হালকা আসবাব, ওপেন শেলভস এবং তা হতে হবে দেওয়ালে লাগানো। ওয়াল ফিক্সড আসবাব জায়গা বাঁচায়। এতে ঘরও বড় দেখায়। ডাস্টিং বা পরিষ্কার করা মোটেও ঝক্কির হয় না। এ রকম অনেক ধরনের দেওয়ালে ঝোলানো আসবাব পাওয়া যায়। কোনওটা কাঠের, কোনওটা মেটালের বা কোনওটা বাঁশের তৈরি। ঘরে এমন কিছু আসবাব রাখুন যা দেখতে ইউনিক এবং একাধিক কাজে ব্যবহার করা যায়। যেমন চেয়ার কাম বুক শেলফ, আয়নার পিছনে লুকনো স্টোরেজ।় এই বছরের ট্রেন্ড ওপেন শেলভস। গোটা দেওয়াল জুড়ে বা দেওয়ালের কোনও একটা অংশ জুড়ে বড় তাক তৈরি করা যায়। যেখানে বই ও শো-পিস রাখতে পারেন। শো-পিসের উপর ছোট স্পট লাইট নিঃসন্দেহে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে। ওপেন শেলভস বা ওয়াল ফিক্সড আসবাব দিয়ে বাড়ি সাজাতে চাইলে মাথায় রাখবেন ঘর হতে হবে পোকামাকড়মুক্ত। এর জন্য পেস্ট কন্ট্রোল করিয়ে নিতে হবে বছরে এক-দু’বার।
ছিমছাম রান্নাঘর
খোলা তাক এখন ফ্যাশন হলেও তা রান্নাঘরের জন্য উপযুক্ত নয়। ঢাকা ক্যাবিনেট এর জন্য পারফেক্ট। রান্নাঘরে দেওয়ালের রং হালকা হলে বেশি আলোকিত লাগবে। উডেন শেডও ব্যবহার করতে পারেন। এতে ধুলো ময়লা চট করে চোখে পড়বে না। বেসিন হবে স্টিলের। ঝুলন্ত আলো, টবে কিচেন গার্ডেন, দেওয়ালের শেড অনুযায়ী কাচের বাসনপত্র সাধারণ রান্নাঘরকে করে তুলবে আকর্ষণীয়।
প্রাকৃতিক জিনিসের জাদু
সুন্দর শো-পিস ঘরের সৌন্দর্যকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। সুন্দর শো-পিস মানেই তো অনেকগুলো টাকা! না, এই ধারণাটা এ বার বদলে ফেলুন। পুতুল, মুখোশ, ঘণ্টা... নয়, আপনার শো-পিস হোক গাছ ও ফুল। ছোট ছোট মাটির বা ডিজাইনড সেরামিকের টবে ইন্ডোর প্ল্যান্ট দিয়ে সাজিয়ে ফেলুন আপনার ঘর। গাছের পাশাপাশি বিভিন্ন শেপের ফুলদানিতে রাখতে পারেন একাধিক রঙের ফুল। এ ছাড়া গাছের শুকনো ডাল আপনার পছন্দ মতো রং করে রাখতে পারেন হ্যান্ডমেড ফুলদানিতে।
ভেলভেটে আভিজাত্য
সব পুরনো জিনিসই যে আউট অব ফ্যাশন, তা কিন্তু নয়। এই তালিকায় আছে ভেলভেটের আসবাব। হালকা মোনোক্রম দেওয়ালের সঙ্গে ভীষণ মানানসই ডার্ক শেডের ভেলভেট সোফা বা সিঙ্গল কাউচ। সোফা বা কাউচে দেওয়ালের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে রাখতে পারেন ছোট কুশন। কাঠের ডাইনিং টেবলের চেয়ারের গদি ভেলভেটের হলে দেখতে মন্দ হয় না। ভেলভেট চিরসবুজ এবং এতে আভিজাত্যও ফুটে ওঠে।
দেওয়ালই যখন শো-পিস
ঘরের কোনও অংশের দেওয়াল যদি অনেকটা ফাঁকা থাকে এবং সে রকম আসবাব ও শো-পিসের আধিক্য না থাকে, তা হলে দেওয়ালে নিজে হাতে এঁকে কিংবা বাজারচলতি ওয়াল স্টিকার কিনে এনে লাগিয়ে ফেলুন। দেওয়ালের সজ্জায় বদলে যাবে অন্দমহলের রূপ।
বাথরুমই হয়ে উঠুক স্পা
শোওয়ার ঘর ও বৈঠকখানার পর সবচেয়ে বেশি মাথা ঘামানো উচিত বাথরুম নিয়ে। ড্রাই জোন ও ওয়েট জোন পৃথক রাখাই শ্রেয়। এতে বাথরুম শুকনোও থাকবে। একটু বেশি জায়গা থাকলে বাথরুমই হয়ে উঠতে পারে পারফেক্ট স্পা! এর জন্য চাই বাথটাব ও রেন শাওয়ার।