আই সি সি আর-এ ধ্রুপদী থেকে দেশাত্মবোধক
মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু, বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের পর এবার কিছুটা ভিন্ন ধর্মী অনুষ্ঠান। রাগ অনুরাগ মিউজিক রিসার্চ অ্যাকাডেমির এ বারের গবেষণামূলক অনুষ্ঠান ‘জার্নি থ্রু ইটারনিটি’। শিল্পী স্মৃতি লালা একক গানে বেছে নিয়েছেন সপ্ত-সুরে বাংলা গানের বিভিন্ন আঙ্গিক এবং প্রতিটি গানই সু-নির্বাচিত। শুরুতেই রবীন্দ্রসঙ্গীত। পরে পুরনো দিনের বাংলা গান, ভাওয়াইয়া, লোকগীতি, গজল থেকে রাগ ধ্রুপদী। পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সুর-মূর্ছনাও অনুষ্ঠানের নতুন সংযোজন। তবে এর আগে দেখা গেছে ‘জার্নি’, ‘পিস’, ‘চেতনা’, ‘ইনার স্পিরিট’-এ গানের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় স্মৃতি লালার সঙ্গে কোনও কোনও গানে মিলিত কণ্ঠেরও প্রয়াস ছিল। রাগ অনুরাগ মিউজিক রিসার্চ অ্যাকাডেমির এবারের অনুষ্ঠানে তা যথেষ্ট ব্যতিক্রমী।
চব্বিশে সেপ্টেম্বর, শনিবারে আইসিসিআর-এ একক কণ্ঠে গীত হবে একতা ও জাতীয়তাবাদের ভাবধারায় বেশ কিছু দেশাত্মবোধক গান। যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
শিল্পীর কিছু গানে শৈশবের প্রতিচ্ছবিও পরিস্ফূট হবে। অনিল দত্ত ও জ্যোতিরিন্দ্র মজুমদারের সঙ্গীত-শিক্ষায় যা পরিপূর্ণতা পেয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য এ টি কাননের কাছে সেই শিক্ষার গভীরতা পায়। গৃহবধূর অবসরের সেই মুহূর্তগুলি যে সব গানে সময়ের ঘড়ি ছোটায় বা মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের যন্ত্রণার ছবিগুলিও গান হয়ে ধরা দেয় শিল্পীর কণ্ঠে। বা সেই গান যেখানে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের করুণ মুখগুলিতেও হাসি ফুটে ওঠে।
সখি রে
ওড়িশি আশ্রমের পরিচালনায় রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত ওড়িশি সন্ধ্যার শুরুতেই ছিল সুজাতা নায়েকের ‘সখি রে’ এবং অহনা বসু’র ‘শিবতাণ্ডব’। পরিচালনায় গুরু গিরিধারী নায়েক। এর পরে ছিল সুমেধা সেনগুপ্তর নৃত্য। সুময়ী মুখোপাধ্যায়ের ‘সীতাকমলা’ এবং শিপ্রা পাত্রর ‘মেঘ পল্লবী’ মন কাড়ে। অর্চিতাও বেশ ভাল। গানে দেবাশিস সরকার। ‘নটীর পূজা’ নৃত্যনাট্যে মেঘলীনা, সুজাতা এবং সুমিত যথাযথ।
কবিতার প্রাণ
সম্প্রতি বাংলা অ্যাকাডেমিতে চিরন্তনীর কবিতা ও গল্প পাঠের আসরে শোনা গেল পার্থ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা পাঠ। বর্ণালী সরকারের বেশ কয়েকটি কবিতা সকলেরই ভাল লাগে। ‘ছুটি’, ‘পুজোর সাজ’ ছাড়াও ছিল ‘অপরাজিতা’। স্বাগতা পালের পর কয়েকজন শিল্পীও তাঁদের নিজস্বতা বজায় রেখেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের গল্পপাঠ ও একক নাট্য পরিবেশনাও মনে রাখার মতো।
পিনাকী চৌধুরী
গানে গানে ত্রিশ
গানে তিন দশক অতিক্রম করলেন দেবারতি সোম। রবীন্দ্রসদনে ‘গানে গানে ত্রিশ’ অনুষ্ঠানে। প্রফুল্লকুমার দাস, মায়া সেন, সুভাষ চৌধুরীর কাছে তালিমপ্রাপ্ত দেবারতির পরিবেশনে সে দিন শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীত নয়, অতুলপ্রসাদী, আধুনিকও ছিল। সুরেলা কণ্ঠে যথাযথ অভিব্যক্তিতে শিল্পী রবীন্দ্রগানের ঐশ্বর্যকেই তুলে ধরেন ‘গহন ঘন ছাইল’, ‘আমার যে সব’, ‘কৃষ্ণকলি’ প্রভৃতি গানে। পাশাপাশি অতুলপ্রসাদের ‘শ্রাবণ ঝুলাতে’ কাঙাল হরিনাথের ‘যদি ডাকার মতো’, রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লার ‘আমার ভিতর বাহিরে’—ভিন্ন মেজাজের এ সব গানও শোনালেন শিল্পী। পরে স্বপন সোম গেয়ে শোনালেন ‘গোধূলি গগনে মেঘে’, ‘মেঘের পড়ে মেঘ’ প্রভৃতি। দেবারতি-স্বপনের দ্বৈত গানে সমাপ্তি। আয়োজক ‘উতল হাওয়া’।