স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল হলেও হাল ফেরেনি পরিষেবার

পাঁচটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তার পরে ছ’মাস কেটে গিয়েছে। এখনও একটি হাসপাতালের পরিষেবার মান এতটুকুও বাড়েনি। বরং পরিষেবা যেন ক্রমশ বেহাল হচ্ছে। ফলে, চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। সমস্যায় পড়ছেন ওই সব হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল হয়েছে বলে ঘোষণা হওয়ায় বাসিন্দারা আগের চেয়ে ভাল পরিষেবা মিলবে বলে আশা করছেন।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৯
Share:

পাঁচটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তার পরে ছ’মাস কেটে গিয়েছে। এখনও একটি হাসপাতালের পরিষেবার মান এতটুকুও বাড়েনি। বরং পরিষেবা যেন ক্রমশ বেহাল হচ্ছে। ফলে, চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। সমস্যায় পড়ছেন ওই সব হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল হয়েছে বলে ঘোষণা হওয়ায় বাসিন্দারা আগের চেয়ে ভাল পরিষেবা মিলবে বলে আশা করছেন। কিন্তু, হাসপাতালে গিয়ে তা না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন রোগী-রোগিণীরা।

Advertisement

ইতিমধ্যেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পক্ষে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত এক্স রে, আলট্রাসোনোগ্রাফি-সহ নানা সুবিধা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক, টেকনিসিয়ান দেওয়ার জন্যও আর্জি জানানো হয়েছে। না হলে বিক্ষোভ-গোলমাল বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ কুমার মন্ডল বলেন, “ওই পাঁচটি হাসপাতালে শীঘ্রই চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। পরিকাঠামোর মান বাড়াতে অনেক সরঞ্জাম দেওয়া হবে। সে জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।”

জ়েলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জ়ানা গিয়েছে, মাস ছ’য়েক আগে জ়েলার পুরাতন মালদহের মৌলপুর, কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বেদরাবাদ, কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের সিলামপুর, রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের সামসি, চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের মালতিপুর, এই পাচটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতাল গুলিতে কোথাও মাত্র দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। কোথাও তিন জন। অথচ প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালে ন্যূনতম ৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা। যাঁদের মধ্যে তিনজন বিশেষজ্ঞ হওয়া বাধ্যতামূলক। বলাই বাহুল্য, এখনও ওই ৫টি হাসপাতালে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়নি। রয়েছে নার্সের অভাবও। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক রয়েছে। ৩০টি করে শয্যা থাকার কথা। বাস্তবে ১৫টি করে শয্যা রয়েছে। ফলে শয্যার অভাবে অনেক সময় রোগীদের মেঝেয় রেখে চিকিৎসা হচ্ছে।

Advertisement

মালদহ মেডিক্যাল থেকে ওই পাঁচটি এলাকার দূরত্ব কম নয়। কোনও এলাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার। কোনও জায়গা থেকে ৪০ কিলোমিটার। তাই ওই হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করা হলে রোগীরা সমস্যায় পড়েন।

মালদহ জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা চাঁচলের মালতিপুরের স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ মানজারুল ইসলাম বলেন, “চাঁচল মহাকুমার স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল হয়ে রয়েছে। মহকুমায় দু’টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতাল করা হয়েছে। পরিকাঠামোর কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে, এলাকায় এখনও সামান্য কিছু হলেই দীর্ঘ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মালদহ সদরে ছুটতে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানানো হয়েছে।” কালিয়াচকের সিলামপুরের বাসিন্দা সামিম মিয়াঁ, আসিফ হোসেনরা জানান, তাঁদের এলাকার অনেকেই অসুস্থদের নিয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে হয়রান হয়েছেন। তাঁদের কথায়, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থা। রাস্তা দিয়ে সুস্থ মানুষই অসুস্থ হয়ে যায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement