অপরিষ্কার নর্দমা, যত্রতত্র জমা জঞ্জাল নিয়ে ক্ষুব্ধ শহরবাসী। নিজস্ব চিত্র।
শীত দোরগোড়ায়। কিন্তু মশার উপদ্রব থেকে এখনও রেহাই নেই দুর্গাপুর শহরের মানুষের। জঞ্জাল নিয়মিত সাফাই না হওয়ার ফলে মশার দৌরাত্ম্য রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুরসভার তরফে নিয়মিত ওষুধ স্প্রে করা হয় না বলেও অভিযোগ। পুরসভার তরফে অবশ্য দাবি, মশার উৎপাত কমাতে প্রায়ই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শীঘ্র আরও উদ্যোগ হবে।
সিটি সেন্টার, বিধাননগর থেকে রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর, রঘুনাথপুর বা আমরাই গ্রাম সর্বত্রই মশার দাপটে তাঁরা অতিষ্ঠ বলে বাসিন্দারা জানান। তাঁদের দাবি, বছরের এই সময়ে মশার এত উৎপাত আগে ছিল না। বছর দুয়েক ধরে তা যেন মাত্রা ছাড়িয়েছে। সিটি সেন্টারের বাসিন্দা দেবাশিস রায় জানান, সন্ধ্যা নামলেই বাড়ির জানালা, দরজা বন্ধ করতে হচ্ছে। তাতে বাড়িতে দমবন্ধ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই। উপদ্রব এত বেড়েছে যে মশা মারার রাসায়নিকেও কাজ হচ্ছে না।
বাসিন্দারা জানান, বর্ষার সময়েও শহরে মশার উপদ্রব বেড়েছিল। কিন্তু তার পরে এই উৎপাত কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম ঘটছে। এর কারণ হিসেবে অনেকেই দাবি করেন, শহরের নানা প্রান্ত আগাছায় ভরে গিয়েছে। নালা-নর্দমাও ঠিক মতো সাফাই করা হচ্ছে না। আবর্জনা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও গাফিলতি রয়েছে। কোনও কাজই পুরসভার তরফে ঠিক সময়ে করা হয় না। পাড়ায়-পাড়ায় রাসায়নিক স্প্রে করা বা সাফাই, মশা মারতে পুরসভা সে ভাবে তৎপর না হওয়ার ফলেই ভুগতে হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। আরও অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বড়-বড় ঝোপজঙ্গল তৈরি হয়েছে। সেগুলি পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এর ফলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অবিলম্বে পুর কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ করা উচিত বলে দাবি করেছেন শহরের অনেকেই।
গত বছর দুর্গাপুরে বেশ কয়েক জন ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণও দেখা গিয়েছিল এ বার। এই সময়েও মশার প্রকোপ থাকায় আবার মশাবাহিত কোনও রোগ না ছড়ায়, সেই আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। মশার উপদ্রব যে বেড়েছে, সে কথা মেনে নিয়েছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে তাঁর আশ্বাস, “শীঘ্র রাসায়নিক স্প্রে করা হবে। নালা-নর্দমাও সাফাই করা হবে নিয়মিত। মশা যাতে বংশবিস্তার করতে না পারে সে জন্য খোলা নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়ার পরিকল্পনা হয়েছে।”