রঙিন-রোগীদের নির্বিঘ্ন পরিষেবা হাসপাতালে

শুধু রং মাখা মুখের সারি। কেউ ভোর থেকে দোল খেলতে খেলতে আচমকা কোনও গোলমালে জড়িয়ে গুরুতর আহত, কেউ বা নেশার ঘোরে পুরো বেহুঁশ। কেউ আবার দূর থেকে অন্যের ছোঁড়া রং ভরা বেলুন বা আস্ত আলুর আঘাতে খানিকটা বেকায়দায়। বৃহস্পতিবার দিনভর এমনই নানা রঙিন চেহারার ভিড় সামলাতে ব্যস্ত ছিল বিভিন্ন হাসপাতাল।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৫ ০২:০৮
Share:

শুধু রং মাখা মুখের সারি। কেউ ভোর থেকে দোল খেলতে খেলতে আচমকা কোনও গোলমালে জড়িয়ে গুরুতর আহত, কেউ বা নেশার ঘোরে পুরো বেহুঁশ। কেউ আবার দূর থেকে অন্যের ছোঁড়া রং ভরা বেলুন বা আস্ত আলুর আঘাতে খানিকটা বেকায়দায়। বৃহস্পতিবার দিনভর এমনই নানা রঙিন চেহারার ভিড় সামলাতে ব্যস্ত ছিল বিভিন্ন হাসপাতাল।

Advertisement

দোল উপলক্ষে এ দিন সমস্ত হাসপাতালেই আউটডোর ছিল বন্ধ। ইনডোর সামলিয়েছেন মূলত জুনিয়র ডাক্তারেরাই। আর ইমার্জেন্সিতে জুনিয়র এবং সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসারেরা পালা করে ডিউটি করেছেন।

দুপুর ২টো। এসএসকেএমের ইমার্জেন্সির সামনে ট্যাক্সি থেকে পাঁজাকোলা করে নামানো হল টুকুন হালদারকে। কালীঘাটের বাসিন্দা টুকুনের বাঁ হাতে চোট লেগেছে। বাড়ির লোকেরা জানালেন, দোল খেলার সময়ে পাশের পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে গোলমালের জেরে হাতে আঘাত লেগেছে। ইমার্জেন্সির ডাক্তারেরা তড়িঘড়ি এক্স-রে করতে পাঠালেন। জানা গেল হাত ভেঙেছে। তড়িঘড়ি প্লাস্টারও হয়ে গেল।

Advertisement

দুপুর আড়াইটে নাগাদ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ইামর্জেন্সিতে এসেছিলেন শুক্লা পোদ্দার। তিনতলার বারান্দা থেকে ছোঁড়া রং মাখা আলু আর জল ভরা বেলুনে তাঁর চোখে আঘাত লেগেছে। চোখ ফুলে ঢোল। চোখের কোণ থেকে রক্ত ঝরছে। ইমার্জেন্সির ডাক্তারেরা পরীক্ষা করে জানালেন, চোখের আঘাত গুরুতর। অবিলম্বে কোনও বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। কিন্তু ন্যাশনালে ওই মুহূর্তে কোনও চোখের বিশেষজ্ঞ নেই। তাই তাঁরা রেফার করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি (আরআইও)-তে।

আরআইও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দোল এবং কালীপুজোয় তাঁদের প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারের সংখ্যা বেশি থাকে। কারণ ওই দুই উৎসবেই চোখে আঘাতের ঝুঁকি থাকে বেশি। চোখের কনজাংটিভা বা রেটিনায় গুরুতর চোট নিয়ে অনেকেই আসেন। দ্রুত চিকিৎসা না হলে দৃষ্টিশক্তির স্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

সরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার থাকলেও প্রশাসনিক বিভাগে অধিকাংশ জায়গাতেই কেউ ছিলেন না। বৃহস্পতিবার থেকে টানা চার দিন বন্ধ স্বাস্থ্য ভবনও। ফলে কোনও প্রয়োজনে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে কার্যত কাউকেই পাওয়া যাবে না।

তবে সব কিছুর মধ্যে এ দিন অন্য মাত্রা যোগ করেছিল এম আর বাঙুর হাসপাতাল। রোগীদের নিয়ে দোল খেলা এবং খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উৎসবে যোগ দেন সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, সহকারি সুপার সেবন্তী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement