মেডিক্যাল কলেজের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ তুললেন শাসক দলের চিকিত্সক সংগঠনই। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অকারণেও মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতায় রোগীদের ‘রেফার’ করার প্রবণতা বাড়ছে বলে সংগঠনের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। হাসপাতালের একাংশ শিক্ষক চিকিত্সক নিয়মিত ‘ফাঁকি’ দিচ্ছেন বলেও সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। কলেজ ও হাসপাতালে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে পদক্ষেপ করার দাবি জানায় সংগঠন।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে কিছু না বলতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কোনও কিছু বলাই সম্ভব নয়।” শাসক দলের চিকিত্সক সংগঠন অবশ্য এ দিন প্রকাশ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। সংগঠনের নেতারা জানান, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিটের জন্য কেনা ১০টি ভেন্টিলেশন যন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সিসিইউতে কেন্দ্রীয় ভাবে অক্সিজেন লাইন করে দ্রুত ভেন্টিলেশন মেশিন বাসানোর দাবি জানানো হয় সংগঠনের তরফে। বহির্বিভাগে অর্থোপেডিক, মেডিসিন, মানসিক বিভাগের একাংশ বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন রোগী দেখছেন না বলে অভিযোগ। সপ্তাহে ৬ দিন সব বর্হিবিভাগ খোলার দাবিও জানিয়েছে সংগঠন। সংগঠনের জেলা সভাপতি তাপস চক্রবর্তী বলেন, “হাসপাতালের শিক্ষক চিকিত্সকদের একাংশ দিনের পর দিন কাজ না করে বেতন তুলছেন। মালদহে থাকছেন না। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছি। তাঁদের চিহ্নিত করে নিয়মিত ডিউটি দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।”
মেডিক্যাল কলেজে কোন রোগী কোথায় ভর্তি, কোন চিকিত্সক তাঁকে দেখছেন এই তথ্যগুলি অনেক রোগীর আত্মীয়রাই জানতে পারেন না বলে সংগঠনের সদস্যদের দাবি। সে কারণে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সে কারণে সব বিভাগের চিকিত্সকদের নামের তালিকা প্রকাশ্য টাঙানো এবং চিকিত্সকদের অধীনে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে বলে সংগঠন জানিয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডিউটিরত চিকিত্সকদের থাকার ঘরটি মেরামত করার দাবিও জানায় সংগঠন। সংগঠনের সভাপতির কথায়, “মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার পরেও যে কোন রোগেই কলকাতায় রেফারের প্রবণতা বেড়েছে। রোগীকে ওয়ার্ড থেকে কলকাতায় রেফার করা হচ্ছে অথচ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছুই জানতে পারছে না। আমাদের দাবি, যদি রোগীকে কলকাতায় রেফার করা হয় তবে তা হাসপাতাল সুপারকে জানাতে হবে।” রেফার রোগীদের জন্য পৃথক নথি রাখার দাবিও জানানো হয়েছে। কোন রোগে, কোন চিকিত্সক রেফার করেছেন তা নথিতে লিখে রাখার দাবি শাসক দলের সংগঠনের। মাসের শেষ রেফার রোগীদের তালিকা নিয়ে আলোচনার দাবিও জানিয়েছে। আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে তারা।