হাসপাতালের রোগী পরিষেবা তলানিতে এসে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ তুললেন সেখানে চিকিৎসাধীনদের আত্মীয়-স্বজন। ঘটনাচক্রে, যাঁরা সকলেই তৃণমূল কর্মী। এবং বৃহস্পতিবার খড়িবাড়িতে ভোট দিয়ে ফেরার পথে গাড়ি উল্টে ৩৪ জন জখম হন। মৃত্যু হয় ১ জনের। ১৭ জনকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ভর্তির পরে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি বলে আহতদের আত্মীয়দের অভিযোগ। শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে ঘিরে ধরে তৃণমূলের কর্মীরা সেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তখনই তাঁদের সামনেই ফোনে মেডিকেল কলেজ সুপার অমরেন্দ্রনাথ সরকারকে ভর্ৎসনা করেন তিনি। পরিষেবা খারাপ কেন তা জানতে চান মন্ত্রী। দ্রুত খোঁজ নিয়ে পরিষেবা সামলাতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি। যদিও পরিষেবা ঘাটতি রয়েছে বলে স্বীকার করেননি সুপার। তবে মন্ত্রী তথা সমিতির চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিন মন্ত্রীর সামনে এক রোগীর আত্মীয় মহম্মদ অনোস অভিযোগ করেন, “আমার স্ত্রীর মাথায় আঘাত রয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ হননি তিনি। তা সত্ত্বেও তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” রাতে ঠিক মত চিকিৎসকেরা দেখেননি বলেও তাঁর অভিযোগ। যদিও রোগী পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ মানতে চাননি সুপার। তিনি বলেন, “পরিষেবায় ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। তবে মন্ত্রী যখন বলছেন, আমরা ওঁর নির্দেশ পালন করব। কারও চিকিৎসা প্রয়োজন না থাকলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়াই নিয়ম।” তবে ওই রোগীকে ফের ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চিকিৎসায় কোনও রকম ত্রুটি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “খড়িবাড়ির দুর্ঘটনা দুঃখজনক। তবে চিকিৎসায় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তাঁর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” মৃতের পরিবারকেও সাহায্য করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। তাঁর নির্দেশে মেডিকেলে আলাদা কেবিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে আহতদের জন্য। মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা করে রাখার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে সুপার জানান। আহতদের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার রোগী কল্যাণ সমিতি দেবে বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ঘোষণা করেন। ঘটনায় মৃত রাম কিরণ রামের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। এদিন পরে আহতদের দেখতে যান ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক সুনীল তিরকেও। তিনিও রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সব রকম সহায়তা করার আশ্বাস দেন।