টানা পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও হদিস নেই পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগ থেকে নিখোঁজ সদ্যোজাতের। ঘটনার পর থেকেই একদিকে পুলিশ, অন্য দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামলেও ওই শিশুর খোঁজ পাওয়া তো দূরের কথা, তদন্ত কোন দিকে এগোতে পারে তা নিয়ে কোনও সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ দিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিনভর উত্তেজনা ছিল হাসপাতাল চত্বরে। দুপুরের দিকে প্রথমে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে স্মারকলিপি দেয় সিপিএম। পরে দলের পুরুলিয়া শহর জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে পোস্টঅফিস মোড়ে পথ অবরোধও করা হয়। সিপিএমের পরে ধামসা-মাদল ও মাইক নিয়ে হাসপাতালে স্মারকলিপি দেন ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চার শতাধিক কর্মীসমর্থক।
তারপর আসে কংগ্রেস। সে সময় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন না। ছিলেন উপ-মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনুস। কংগ্রেস কর্মীসমর্থকেরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। পরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। এ দিকে, ঘটনার তদন্তে সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে আসে পুলিশের একটি দল। ওই দলে ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। তাঁরা ওয়ার্ড থেকে বাইরে যাওয়ার বিভিন্ন রাস্তা খুঁটিয়ে দেখেন। কীভাবে বাইরে যেতে পারে ওই নবজাতক। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে এই হাসপাতাল থেকেই এরকম ভাবেই একটি শিশু চুরি গিয়েছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে সেই শিশুটিকে উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে তদন্তে সাহায্য নেওয়া হয়। তবে কোনও সূত্র মেলেনি বলে পুলিশের দাবি।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “শিশুটির খোঁজ চলছে। কিন্তু হদিশ মেলেনি। এ দিন বিভিন্ন দল আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমরা সকলের সঙ্গেই কথা বলেছি। শিশুটিকে খুঁজে বের করতে আমরা পুলিশ-সহ বিভিন্ন পক্ষের সাহায্য নিচ্ছি। তা ছাড়া হাসপাতাল চালানোর জন্য তাঁরা বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে ঢোকা নিয়ে আমরা এ বার কড়াকড়ি শুরু করেছি। তবে দুই রঙের কার্ড ছাপা হয়ে না এলে এই ব্যবস্থা চালু করা যাবে না’ এই ঘটনার পরে হাসপাতালে ঢোকা ও বেরনো নিয়ে এ দিন সকালের দিকে গেটে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে লোকজনের ঝামেলা বাধে। এত দিন বেলা এগারোটা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীকে দেখতে এক একজন রোগীর জন্য ১৫-২০ জন আসতেন। মানবেন্দ্রবাবু বলেন, “মানুষজনকেও বুঝতে হবে যে রোগীদের ভালোর জন্যই এটা করা হচ্ছে।” শিশুর হদিশ পেতে কোন পথে এগোনো হবে, এই নিয়ে সন্ধ্যায় বৈঠক করেন কর্তৃপক্ষ।