প্রতি মরসুমেই ভেল্কি দেখাচ্ছে আবহাওয়া! কোথাও সাগরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। কোথাও আবার আচমকাই হাজির তুষারঝড়, পারদ এক ধাক্কায় নেমে যাচ্ছে শূন্যের অনেকটা নীচে!
আন্তর্জাতিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা, ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) বলছে, এ ভেল্কি কিছুই নয়। আরও অনেক ভেল্কি দেখাবে আবহাওয়া। এবং এর পিছনে দায়ী মানুষেরই তৈরি দূষণ। সেপ্টেম্বরে আইপিসিসি-র পঞ্চম রিপোর্টের প্রথম দফায় এই ইঙ্গিত মিলেছিল। দ্বিতীয় দফার রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত আরও জোরালো হল। সোমবার আইপিসিসি জানিয়েছে, অক্টোবরে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, দূষণের ফলে কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে। তার জেরেই বাড়ছে বিশ্বের গড় উষ্ণতা। খামখেয়ালি হয়ে পড়ছে আবহাওয়া। এক আবহবিদ বলছেন, “বাংলায় এখন শুকনো গরম মালুম হচ্ছে। আর শুকনো গরমের দেশ দিল্লি, চণ্ডীগঢ়, লুধিয়ানায় আর্দ্রতা বেড়ে গিয়েছে।”
গত অক্টোবর-নভেম্বরে চারটি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল বঙ্গোপসাগরে। মৌসম ভবন সূত্রের খবর, ওই সময় বঙ্গোপসাগরের গড় উষ্ণতা বেশি ছিল। তাতেই ঘন ঘন ঝড় তৈরি হয়েছে। শীতে লাগাতার ঝড়ের দাপট সয়েছে ব্রিটেন। আমেরিকার একাংশে তুষারপাত সাইবেরিয়াকেও হার মানিয়েছে! এর জন্যও উষ্ণায়ণকে দায়ী করেছেন পরিবেশবিদেরা।
পরিবেশবিদেরা বলছেন, ভেল্কির চরিত্র আরও মারাত্মক হবে ভবিষ্যতে। উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফসল উৎপাদন মার খাবে। অতিবৃষ্টিতে দেখা দেবে বন্যা। প্রাণহানির ঘটনাও বাড়বে। প্রভাব পড়বে বাস্তুতন্ত্রে।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে বিপদ ঘনাতে পারে এ রাজ্যেও।“আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ঘূর্ণিঝড় বাড়লে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”বলছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী। এই বক্তব্যের সমর্থন মিলেছে আইপিসিসি-র রিপোর্টেও। আইপিসিসি-র দু’নম্বর ওয়ার্কিং গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান ক্রিস ফিল্ড বলছেন, “দূষণ কমালেই আবহাওয়ার সঙ্গে মানুষের খাপ খাওয়ানো সম্ভব হবে।”