বুথে বুথে বন্ধ হোক ধূমপান, আর্জি ক্যানসার চিকিৎসকদের

জম্মু-কাশ্মীর করেছে। প্রতিবেশী রাজ্য অসম, বিহারেও হয়েছে। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে হবে না কেন? সমস্ত নির্বাচনী বুথে ধূমপান নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের ক্যানসার চিকিৎসকদের একটা অংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের বাজারে বহু বিষয় রাতারাতি গুরুত্ব পেয়ে গেলেও ধূমপানের মতো একটি গুরুতর সমস্যা এখনও সে ভাবে সামনে আসেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:৫৩
Share:

জম্মু-কাশ্মীর করেছে। প্রতিবেশী রাজ্য অসম, বিহারেও হয়েছে। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে হবে না কেন?

Advertisement

সমস্ত নির্বাচনী বুথে ধূমপান নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের ক্যানসার চিকিৎসকদের একটা অংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের বাজারে বহু বিষয় রাতারাতি গুরুত্ব পেয়ে গেলেও ধূমপানের মতো একটি গুরুতর সমস্যা এখনও সে ভাবে সামনে আসেনি। অথচ ‘সিগারেটস অ্যান্ড আদার টোব্যাকো প্রোডাক্টস (প্রহিবিশন অ্যান্ড অ্যাডভার্টাইসমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন ট্রেড অ্যান্ড কমার্স, প্রোডাকশন, সাপ্লাই অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) অ্যাক্ট, ২০১৩’-র চার নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ। নির্বাচনী বুথে এই আইন যাতে মেনে চলা হয়, সে জন্য সক্রিয় হতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে চিকিৎসকদের অনুরোধ, সমস্ত রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারদের এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হোক। কী কী করণীয় আর কী নয়, তার তালিকাতেও ঠাঁই পাক ধূমপান নিষিদ্ধের বিষয়টি। সমস্ত বুথের ভিতরে ও বাইরে এই নির্দেশ সম্বলিত বোর্ড টাঙানোর অনুরোধও জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্ত জানিয়েছেন, বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু জানানো সম্ভব নয়।

ক্যানসার চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান বন্ধ করার আইনটি যথাযথ ভাবে প্রয়োগের ব্যাপারে আমরা বহু দিন ধরেই রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি। সরকারি তরফে এ ব্যাপারে সাহায্যের আশ্বাসও মিলেছে। বুথে ধূমপান নিষিদ্ধ হলে এই আন্দোলন আরও জোরদার হতে পারে।”

এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন মুম্বইয়ের টাটা ক্যানসার হাসপাতালের চিকিৎসক পঙ্কজ চতুর্বেদী। দেশ জুড়ে তামাক-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলছেন পঙ্কজ।

তারই অঙ্গ হিসেবে কিছু দিন আগে এ রাজ্যে এসে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁর মতে, প্রকাশ্যে ধূমপান ঠেকাতে প্রচারটাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হলে তা জনমানসে প্রভাব ফেলবে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ দেশে যত মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হন তার মধ্যে ৪০ শতাংশের ক্ষেত্রে দায়ী তামাক। পূর্বাঞ্চলে ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ৩৫-৪০ শতাংশই মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত। এ রাজ্যে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় দু’কোটি। প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশেরও বেশি।

শুধু ক্যানসার নয়, তামাক সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে প্রায় ২৭ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন ক্যানসার চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধের রুল জারি হয় ২০০৮ সালে। কিন্তু তার পরেও রাস্তাঘাট, অফিস, যানবাহনে চলছে যথেচ্ছ ধূমপান। এই আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে ধূমপান করলে ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হয়। যিনি ধূমপান করছেন, তাঁকে যেমন জরিমানা দিতে হবে, যাঁর সেটা দেখা কর্তব্য তাঁকেও একই পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ করবে কারা, তা নিয়ে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে চাপান উতোর চলছেই।

ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হলে শুধু সাধারণ মানুষ নন, জনপ্রতিনিধিরাও এ নিয়ে সচেতন হবেন বলে চিকিৎসকদের আশা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement