চিকিৎসক যোগ দেওয়ার আশ্বাস পেয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতাল থেকে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিল বিজেপি। বুধবার বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক বৈঠকে এসিএমওএইচ সুভাষচন্দ্র মণ্ডল জানান, মহকুমা হাসপাতালে দ্রুত একজন করে শিশু, মেডিসিন ও শল্য চিকিৎসক যোগ দেবেন। বিজেপি কর্মীরা এরপরই অনশন তুলে নেন। বিজেপির জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিক বলেন, “বৈঠকে কর্তৃপক্ষ দ্রুত চিকিৎসক দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।” এছাড়া ১৫ দিনের মধ্যে হাসপাতালের অন্য পরিষেবা মেলার আশ্বাস মিলেছে বলেও রাজীববাবুর দাবি।
সম্প্রতি কালনা মহকুমা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসক সঙ্কট প্রবল আকার ধারণ করে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সমস্যা ঘোরতর আকার নেয় চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকেই। রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন জরুরি নির্দেশিকা জারি করে বেশ কিছু জেলা হাসপাতাল থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে পড়ানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগ দিতে বলেন। ফলে মেডিসিন, শিশু ও শল্য বিভাগের তিন চিকিৎসক কালনা মহকুমা হাসপাতাল ছাড়েন। চিকিৎসক সঙ্কট যখন প্রবল আকার নেয়, সেই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যভবন সুপারকেও সাসপেন্ড করে। সুপার বদল হলেও চিকিৎসকের ঘাটতি মেটেনি মহকুমা হাসপাতালে। ফলে রোগীদের সামলাতে কার্যত হিমসিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। গত মঙ্গলবার থেকে হাসপাতালে পরিষেবা উন্নতির দাবিতে সরব হয় বিজেপি। পরিষেবা না মেলা-সহ ১৩ দফা দাবিতে সে দিনই হাসপাতালে অনশনে বসেন বিজেপি কর্মীরা। অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই ও কালনার এসিএমওএইচ। কিন্তু মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র না বার হওয়ায় অনশন তোলেননি বিজেপি কর্মীরা।
বুধবার সকাল থেকেই বিজেপি তাঁদের দাবি নিয়ে ফের সরব হয়। এ দিন সকাল থেকেই হাসপাতালের কাছাকাছি একটি রাস্তায় সভা করেও পরিষেবার দাবি জানাতে থাকে। এগারোটা নাগাদ দলের জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিক হাসপাতাল চত্বরে এলে আন্দোলনে গতি বাড়ে। তিনি বলেন, “ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্য রয়েছে কালনা মহকুমা হাসপাতাল। বুধবারও এই হাসপাতালে মেডিক্যাল বিভাগের কোনও চিকিৎসক ছিল না।” বেলা একটা নাগাদ কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ আসেন। এরপর বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এসিএমওএইচ সুভাষচন্দ্র মণ্ডল ও মহকুমা শাসক বৈঠকে বসেন। টানা দেড় ঘণ্টার বৈঠকের পর সুভাষবাবু দ্রুত হাসপাতালে তিন জন চিকিৎসকের যোগ দেওয়ার কথা জানান। ১৫ দিনের মধ্যেই অন্য সমস্যাগুলিও সমাধানের আশ্বাস দেন। শহরের বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডে বলেন, “আমরা খুশি প্রশাসনের টনক নড়ায়”।