ট্রলি থেকে পড়ে মৃত প্রসূতি ও সন্তান

হাসপাতালের ট্রলি থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক প্রসূতি ও তাঁর গর্ভস্থ ন’মাসের শিশুর। রবিবার বিকাল চারটে নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। মৃতার নাম সাহেরা বিবি (৩০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৩
Share:

হাসপাতালের ট্রলি থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক প্রসূতি ও তাঁর গর্ভস্থ ন’মাসের শিশুর। রবিবার বিকাল চারটে নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। মৃতার নাম সাহেরা বিবি (৩০)।

Advertisement

মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি করার পরে চিকিৎসক না আসায় দীর্ঘক্ষণ সাহেরা বিবিকে লেবার রুমের সামনে ট্রলিতে রেখে দেওয়া হয়। যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে ট্রলি থেকে সাহেরা বিবি মাটিতে পড়ে যান। সেই সময় কোনও নার্স বা হাসপাতাল কর্মীও ধারেকাছে ছিলেন না। ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, “অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষ দাস জানান, মন্ত্রীর নির্দেশে অভিযুক্ত চিকিৎসককে শোকজ করা হচ্ছে। গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকি নার্স-সহ কারা ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলিয়াচকের শেরশাহী এলাকার বাসিন্দা এজাজুল মোমিনের স্ত্রী সাহেরা বিবি ন’মাসের গর্ভবতী ছিলেন। এ দিন সকালে সাহেরা বিবির প্রসব যন্ত্রনা শুরু হলে তাঁর পরিবারের লোকেরা প্রথমে কালিয়াচকের সিলামপুর হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকেরা সাহেরা বিবিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগে ইউনিট-বি ২ এর চিকিৎসকদের অধীনে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বারবার কল করা হলেও দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সুদীপ রঞ্জন পাল প্রসূতিকে দেখতে আসেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

মৃত সাহেরা বিবির মামা লুটু মোমিন বলেন , “ভাগ্নিকে ভর্তি করার পর চিকিৎসক দেখেননি। লেবার রুমে ট্রলি করে নিয়ে ফেলে রাখা হয়। যন্ত্রণায় ও ট্রলি থেকে পড়ে গিয়ে মারা যায়। আমরা হাসপাতালে মৌখিক অভিযোগ করেছি। পরে লিখিত অভিযোগ করব।” মৃত প্রসূতির ননদ সাহানারা বিবি বলেন, “ট্রলি থেকে পড়ে যাওয়ার পর লেবার রুমের আয়ারা ওঁকে ধরাধরি করে ফের ট্রলিতে উঠিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পরই বৌদি মারা যায়।”

দু’ঘণ্টা ধরে যন্ত্রণায় কাতরানোর সময়ে চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। এমনকি ট্রলি থেকে পড়ে যাওয়ার পরেও চিকিৎসক তাঁকে দেখতে আসেননি। প্রসূতি ও তাঁর গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যুর পরই তাঁর পরিবারের লোকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা প্রসূতি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাফিলতি প্রমাণিত হলে দোষীরা শাস্তি পাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement