কালনা হাসপাতালে বিজেপির অনশন। —নিজস্ব চিত্র।
সুপার বদল হলেও চিকিৎসকের ঘাটতি মেটেনি কালনা মহকুমা হাসপাতালে। ফলে মঙ্গলবারও রোগীদের সামলাতে কার্যত হিমসিম খেলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিষেবা না মেলা-সহ সাত দফা দাবিতে এ দিন হাসপাতালে অনশনে বসেন বিজেপি কর্মীরাও। তাঁদের দাবি, প্রতিটি বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসকের তালিকা না টাঙানো পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালাবেন তাঁরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যা ঘোরতর আকার নেয় চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকেই। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জরুরি নির্দেশিকা জারি করে বেশ কিছু জেলা হাসপাতাল থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে পড়ানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগ দিতে বলেন। ফলে মেডিসিন, শিশু ও শল্য বিভাগের তিন চিকিৎসক কালনা মহকুমা হাসপাতাল ছাড়েন। চিকিৎসক সঙ্কট দেখা দেয় হাসপাতালে।
সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয় শিশু বিভাগে। ওই বিভাগের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজে যোগ না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে ওয়ার্ডে চিকিৎসককে না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন রোগীরা। মেডিসিন বিভাগেও পরিষেবা দিতে হিমশিম খান কর্তৃপক্ষ। ওই বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক, সুশান্ত মণ্ডলের দাবি, ওয়ার্ডের রোগীদের দেখভালের পরে বর্হিবিভাগে পরিষেবা দেওয়া সম্ভভ হয় নি তাঁর পক্ষে। মঙ্গলবার শিশু বিভাগের ওই চিকিৎসক কাজে যোগ দেওয়ায় সমস্যা কিছুটা মিটলেও মেডিসিন বিভাগে ব্যপক সমস্যা দেখা যায়। টানা কাজের পরে সোমবার রাত থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুশান্তবাবু। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কার্যত চিকিৎসকহীন হয়ে পড়ে মেডিসিন বিভাগ। কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেন মেডিক্যাল অফিসারেরা। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, “সোমবার রাতে ফোন করে কাজে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন শিশু বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শেখ সওকত আলি। তবে মেডিসিন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সমস্যা হয়েছে। চেষ্টা চলছে সমস্যা মেটানোর।”
এ দিকে বেলা ১১টা থেকে হাসপাতালে অনশন কর্মসূচি শুরু করে বিজেপি। সব বিভাগে স্থায়ী চিকিৎসক বহাল, নতুন চিকিৎসক না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে বদলি না করা, রোগী ও তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেক ভাল ব্যবহার, হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখা-সহ সাত দফা দাবি তোলেন তাঁরা। স্থানীয় বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডে বলেন, “সব বিভাগে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছাড়া সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে আশস্ত না হওয়ায় পর্যন্ত আমাদের কর্মসুচি চলবে।” অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল সুপার ও কালনার এসিএমওএইচ। বিকেলে বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু জানান, চিকিৎসকের অভাবের কথা স্বাস্থ্য মন্ত্রী, রাজ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে। শিশু ও মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে রাত পর্যন্ত অনশন তোলেন নি বিজেপি কর্মীরা।