আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ফের আল্ট্রাসনোগ্রাফি (ইউএসজি) পরিষেবা বন্ধ হল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পরিবর্ত চিকিত্সক না দিয়েই কর্মরত চিকিত্সককে তুলে নেওয়ায় বিপর্যস্ত হল পরিষেবা। গত ২০ মার্চ বিভাগটির দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিত্সক সুরজিত্ দাস এসএসকেএম হাসপাতালে বদলি হয়ে চলে যান। কিন্তু তাঁর জায়গায় নতুন কেউ আসেননি। এই পরিস্থিতিতে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা।
এর আগে যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় টানা দেড় বছর বন্ধ ছিল এই পরিষেবা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে নতুন যন্ত্র পাওয়া যায়। হাসপাতাল সুপার নির্মাল্য রায়ের বক্তব্য, “মহকুমা হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাটি যাতে বন্ধ না থাকে, সে বিষয়ে প্রতিদিন জেলা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করা হচ্ছে। কিন্তু মৌখিক আশ্বাস ছাড়া কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।” এই পরিস্থিতিতে মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভে জেরবার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ সুপারের। এ বিষয়ে হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তনিমা মণ্ডল বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি দেখছে। খুব শীঘ্রই চিকিত্সক দেওয়া হবে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, পুরনো ইউএসজি যন্ত্রটি গত ২০১২ সালের মে মাসে বিকল হয়ে যায়। সে সময়ে রোগীদের অনেক বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে ইউএসজি করিয়ে আনতে হচ্ছিল। আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরিষেবা না পাওয়াকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ লেগেই ছিল। হাসপাতালের পক্ষে পুরনো যন্ত্রটি কয়েক বার সারানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কিছু হয়নি। অবশেষে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পাওয়া যায় অত্যাধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটি। বিপিএল তালিকাভুক্ত পুরুষ ও মহিলা রোগীরা বিনা পয়সায় পরিষেবা তো পাচ্ছিলেনই, যে কোনও প্রসূতি ও এক বছর পর্যন্ত শিশুরও বিনা পয়সায় পরিষেবা মিলছিল এখান থেকে। সাধারণ রোগীদের জন্য খরচ পড়ছিল ১২০ টাকার মধ্যে। এখন চিকিত্সকের অভাবে পরিষেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের বাইরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে গেলে নূন্যতম খরচ হচ্ছে ৮০০ টাকা। এ দিকে, পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া রোগীরা এখনও আসছেন দূরদূরান্ত থেকে। ইউএসজি হবে না জানতে পেরে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তাঁরা। অনেকের বক্তব্য, বাইরে থেকে পরীক্ষা করানোর মতো আর্থিক অবস্থা নয় তাঁদের। এ সব ক্ষেত্রে বিব্রত হতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।