বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ২০ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ হাইপারটেনশন অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। আদতে ‘লাইফস্টাইল ডিজিজ’ হলেও কেবলমাত্র জীবনযাপনের কায়দা পাল্টে তাকে রুখে দেওয়া যায় না। জীবিকা ও বেঁচে থাকার ধরনে অত সহজে বদল আনাও যায় না। কিন্তু তার পরেও উচ্চ রক্তচাপের মতো অসুখ ঠেকিয়ে রাখতেই হয়।
জীবনযাপনের ধরন সবটা পাল্টাতে না পারলেও কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হয়। পর্যাপ্ত ঘুম, যতটা সম্ভব কম মানসিক চাপ নেওয়া, এগুলো বজায় রাখতে হয়। তবে উচ্চ রক্তচাপের মতো ভয়াল অসুখ ঠেকাতে চাইলেও যেহেতু, সব নিয়ম মেনে চলার ফুরসত আমাদের হয় না, তাই একটু বেশিই নজর রাখতে হয় খাবার পাতে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ গৌতম বরাটের মতে, বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যা হাইপারটেনশনের শঙ্কাকে সরিয়ে রাখতে পারে। তাই জীবনযাপনে চটজলদি বদল আনতে না পারলেও মন দিন সে সব খাবারে। এতে অসুখের আশঙ্কা কমবে অনেকটাই।
গ্রিন টি:শরীরের মেটাবলিজমকে বাড়ায় গ্রিন টি। শুধু তাই নয়, এর পলিফেনল ব্লাড প্রেশারকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় এই ধরনের পানীয় রোগের হানা ঠেকাতেও কাজে আসে।
সেলেরি জুস: সেলেরিতে ৩-এন বিউটিলফথ্যালাইড থাকে। এটি রক্তবাহী নালির পেশীর প্রাচীরে চাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে না। উল্টে রক্তের চলাচল সহজ করে।
ব্রকোলি: ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের প্রাচুর্য থাকায় এই সব্জি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই উচ্চ রক্তচাপের অসুখ থাকলে ব্রকোলি রাখুন পাতে।
বেদানার রস: রক্তাল্পতা ঠেকাতে অনেকেই বেদানায় ভরসা রাখেন। এই ফল কিন্তু কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই নিয়ম করে এই ফল ডায়েটের তালিকায় রাখুন।
কলা: পটাশিয়াম বেশি থাকায় এটি রক্তচাপ কমাতে খুবই কার্যকর। কলা তাই উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম সেরা সমাধান। যে সব ফল রোজের পাতে রাখলে বিশেষ উপকার মেলে, কলা তার অন্যতম।
পিঁয়াজ: রক্তবাহর প্রাচীরের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন। এই উপাদান পিঁয়াজের মধ্যে অনেকটা থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের কাঁচা পিঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দেন অনেক চিকিৎসকই। এ ছাড়া উদ্ভিদের বিশেষ রঞ্জক কুয়েরসেটিন পিঁয়াজের গায়ে উপস্থিত থাকে। এটিও রক্তচাপ কমাতে পারদর্শী।
ওটমিল: উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার অথচ ফ্যাট খুবই নগণ্য, এটাই ওটমিলের বিশেষত্ব। কোলেস্টেরলকেও ঠেকিয়ে রাখে এই খাবার। তাই ওটমিলকে রাখুন পাতে।
বিটের রস: শীতকালে নিয়ম করে খান বিটের রস। পটাশিয়ামের প্রাচুর্য ও আয়রনের উপস্থিতির কারণে এই রস রক্ত তৈরিতে যেমন কাজে আসে, তেমনই রক্ত চলাচলেও বিশেষ সাহায্য করে। রক্তবাহী নালির প্রাচীরে চাপ ফেলতে দেয় না।