‘মেটাভার্স’ প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা বিনিয়োগ করা হলেও, এখনও পর্যন্ত লাভের ঘরে কিছুই আসেনি। ছবি: সংগৃহীত
মার্ক জ়াকারবার্গ কি ‘মেটা’র সর্বোচ্চ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন? মঙ্গলবার একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর এই প্রশ্নটিই ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘মেটাভার্স’ প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা বিনিয়োগ করা হলেও, এখনও পর্যন্ত লাভের ঘরে কিছুই আসেনি। মেটাভার্স প্রকল্প কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়ায় ২০০৪ সালের পর এই প্রথম বড়সড় আর্থিক লোকসানের মুখ দেখেছে সংস্থা। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও এই নিয়ে একটা অবসাদ তৈরি হয়েছে। জ়াকারবার্গের মেটা থেকে পদত্যাগ করতে চাওয়ার এটা নাকি অন্যতম কারণ।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ ফেসবুকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেটা তাদের এগারো হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এর আগে সংস্থার কর্মীদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে আর্থিক লোকসানের মোকাবিলা করতে চেয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার এই সংস্থাটি। কিন্তু তাতেও হয়নি শেষরক্ষা। শেষ পর্যন্ত টুইটারের মতোই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটে এই সংস্থা। সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, মোট কর্মী সংখ্যার তেরো শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থার প্রধান হিসাবে জ়াকারবার্গ জানিয়েছিলেন, তিনি কাজ হারাতে চলা সংস্থার কর্মীদের জন্য ‘দুঃখিত’। এ সব কিছুর জন্য যাবতীয় দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। জ়াকারবার্গ বলেন, “কর্মী সঙ্কোচন সংক্রান্ত যা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার সব কিছুর দায় আমি নিজে নিচ্ছি।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জানি সকলের জন্যই এটা কঠিন একটা বিষয়। তাই সংস্থার সিদ্ধান্ত যাঁদেরকে সরাসরি প্রভাবিত করছে তাঁদের জন্য আমি দুঃখিত।” সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করার পাশাপাশি নতুন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এই কারণগুলির জন্য নিজেকে দায়ী করেই মেটার দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চাইছেন জ়াকারবার্গ। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে এমনটাই লেখা ছিল।
মেটাভার্স প্রকল্প কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়ায় ২০০৪ সালের পর এই ॥প্রথম বড়সড় আর্থিক লোকসানের মুখ দেখেছে সংস্থা। ছবি: সংগৃহীত
তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়েছেন মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন জানিয়েছেন, পরের বছর মেটা থেকে জ়াকারবার্গের পদত্যাগ করার খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আরও জানিয়েছেন, ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি থাকবেই। সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। মেটাকর্তা জ়াকারবার্গ সেটাই করছেন। লোকসানের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করা যায়, পরের বছর মেটা দ্বিগুণ লাভের মুখ দেখবে। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জ়াকারবার্গের মেটা ছেড়ে দেওয়ার খবরে সংস্থার শেয়ার বেড়েছে ১ শতাংশ।